Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » শেষে আমেরিকার ঘরের দুয়োরে কিনা মেক্সিকোর বামপন্থী সরকারের আবির্ভাব!





   শেষে আমেরিকার ঘরের দুয়োরে কিনা মেক্সিকোর  বামপন্থী সরকারের আবির্ভাব!

  দুনিয়া তাকিয়ে মেক্সিকোর দিকে
 শেষে আমেরিকার ঘরের দুয়োরে কিনা বামপন্থী সরকারের আবির্ভাব!‌ মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বামপন্থী প্রার্থী হিসেবে আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাডর, যিনি ‘‌আমলো’‌ অর্থাৎ নামের আদ্যক্ষরেই বেশি পরিচিত, জুলাইয়ে ৫৩%‌ ভোট পেয়ে রেকর্ড গড়েছেন। এ বছরের ১ ডিসেম্বর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেবেন।
২০০৬ এবং ২০১২, পর পর দু’‌বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হয়েও আমলো হাল ছাড়েননি। বিশ্বাসযোগ্যতা থাকলে একজন বামপন্থী নেতাও যে দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে আসীন হতে পারেন, আমলোই তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। প্রায় একশো বছর ধরে মেক্সিকো শাসন করে আসার পর দেশের মানুষজন সংশ্লিষ্ট দুটি রাজনৈতিক দল ‘‌ইনস্টিটিউশনাল রিভোলিউশনারি পার্টি’‌ ও ‘‌ন্যাশনাল অ্যাকশন পার্টি’‌–‌র প্রতি এতটাই বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওঠে যে, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তারা বুঝিয়ে দিল, দুর্নীতি ও হিংসার রাজনীতিকে অবলম্বন করে কোনও রাষ্ট্রনায়কই তঁার সাংবিধানিক পদে টিকে থাকতে পারেন না।
৬৪ বছরের আমলো সরকারি‌ আমলাদের ওপর নির্ভর করেই যে শাসন চালাবেন, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। আবার ক্ষমতায় এসেই বিরোধীদের নির্মূল করার কোনও অভিসন্ধি এখনও অবধি তাঁর কোনও ভাষণে শোনা যায়নি। কারণ ‌আমলো‌ জানেন, বিরুদ্ধাচারীদের শেষ করে দিতে পারলেও বিরুদ্ধমতকে শেষ করা যায় না। বিদেশ নীতির ক্ষেত্রেও আমলো মার্কিন প্রেস

িডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতায় আগ্রহী। তিনি বলেছেন, আমেরিকার সঙ্গে বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে বন্ধু হবেন। অন্যদিকে ‌আমলো–বিরোধীদের সন্দেহ, নতুন প্রেসিডেন্টের বামপন্থী ঝোঁক এবং লোকপ্রিয় পরিকল্পনা দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটকে আরও তীব্র করবে এবং শেষে মেক্সিকোর অবস্থা ভেনেজুয়েলার মতো হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু আমলো–‌র দৃঢ় ধারণা, দুর্নীতির উৎপত্তিস্থল হল সামাজিক ও অর্থনৈতিক অসততা। তা থেকেই আসে হিংসা ও প্রাণহানি। কাজেই দুর্নীতির প্রশ্নে আমলো ক্ষমাহীন। তবে মেক্সিকোর সবথেকে বড় সমস্যা বোধহয় হিংসা, সন্ত্রাস। মাদক পাচার নিয়ে সেখানে দাঙ্গা–হাঙ্গামা, প্রাণহানি লেগেই আছে। গত বছরে যার জেরে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে সেখানে সেনা তলব করতে হয়।
১৯২৯ সাল থেকে ২০০০ সালের আগে পর্যন্ত মেক্সিকো শাসন করেছে ইনস্টিটিউশনাল রিভোলিউশনারি পার্টি, সংক্ষেপে পিআরআই‌। ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ভিচেন্তে ফক্স এবং তাঁর দল ন্যাশনাল অ্যাকশন পার্টি‌। ভাবলে অবাক লাগে, যে দলের নামে বিপ্লবী শব্দটি আছে, তাদের আমলেই মেক্সিকোয় অপশাসনের ভিত মজবুত হয়েছে। অবশ্যই এর কারণ ‌একদলীয় শাসন ব্যবস্থা‌। সাত দশকের একদলীয় শাসনব্যবস্থার অবসান ঘটার পর মেক্সিকোয় যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এল, তাদের প্রতি দেশের মানুষের অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা ছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল, দেশে যে দারিদ্র‌্য ও দুর্নীতি আগে থেকেই শিকড় গেড়ে বসেছিল, তার কোনও নড়ন–‌চড়ন হয়নি।
পরবর্তীকালে দেখা গেল, রাষ্ট্রপতি ফিলিপে ক্যালডেরন‌ দেশকে যুদ্ধে নামিয়ে দিলেন। এবং তা দেশের মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। এক দশক পরে দেখা গেল, এক লক্ষের মতো মানুষ ওই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। কিন্তু দুর্নীতি ও মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত ব্যাপারে মেক্সিকোকে এমন কুরে কুরে খেতে শুরু করল যে, ২০১২ সালে নতুন ও উন্নত ‘‌PRI’‌‌‌ দলের প্রতিনিধি হিসেবে প্রেসিডেন্ট পেনা নিয়েতো‌ দেশের শাসনভার গ্রহণ করলেও অব্যাহত দুর্নীতি, সীমাহীন হিংসা ও সুরক্ষিত অসমতা দারিদ্র‌্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষজনের সমস্যার সুরাহা করতে পারল না।
২০০০ সালের ১৮ বছর পরেও ক্রমান্বয়ে জমে ওঠা দুর্নীতি ও হতাশার পরিমণ্ডলে বেড়ে–‌ওঠা মেক্সিকানরা আর সহ্য করতে না পেরেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দু’‌দুবার পরাজিত হওয়া প্রার্থী আমলো–‌কে সুযোগ দিতে দ্বিধা করলেন না। মেক্সিকোর রাজনীতিতে এই প্রথম একজন বামপন্থী নেতা একটি মধ্যপন্থী ও অন্যটি মধ্য–‌দক্ষিণপন্থী, দুটি কুখ্যাত রাজনৈতিক দল‌কে পরাজিত করল।
আমলো দেশের উন্নয়নের যে ভবিষ্যৎ রূপরেখা দিয়েছেন, তাতে সামাজিক উন্নয়ন খাতে খরচ বাড়ানো, প্রবীণ নাগরিকদের পেনশনের অর্থ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা, ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার সুযোগ–‌সুবিধার বিস্তৃতি ঘটানো ও কৃষকদের জন্য অনুদান বৃদ্ধি— ইত্যাদি সবই আছে। এই সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে বলতে গিয়ে আমলো বলেছেন, দেশের রাজস্ব ব্যাপারে বিচক্ষণতা দেখাবেন এবং মেক্সিকোর কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মর্যাদা অক্ষত রাখবেন। তিনি চান চাষের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির ন্যায্য সরবরাহ মূল্য ঠিক করা, যা থেকে জাতি স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে। জাতীয় ন্যূনতম মজুরিও ‌দ্বিগুণ করার পক্ষে তিনি সায় দিয়েছেন। তিনি চান করের হার না বাড়িয়ে সামাজিক ব্যয়ের পিছনে বেশি অর্থ বরাদ্দ করতে। প্রকৃত প্রস্তাবে, তা অসম্ভব মনে হলেও একজন দক্ষ প্রশাসক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি সেই সমস্যা সমাধানের পথও বাতলে দিয়েছেন। তা হল, রাজনীতিকদের বেতন, রাষ্ট্রপতির বেতন ও তঁার অবসরকালীন পেনশন প্রদানের ব্যাপারে কৃচ্ছ্রসাধন।
১ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে যখন আমলো আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যভার গ্রহণ করবেন তখন, কোনও সন্দেহ নেই যে সারা বিশ্ব গভীর আগ্রহে তঁার দিকে তাকিয়ে থাকবে। ‌







«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply