একনেকে প্রকল্প অনুমোদনের ৯ মাস পার হলেও শুরু হয়নি পদ্মা নদীর তীররক্ষা প্রকল্পের কাজ। এতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পদ্মার ভাঙনের তীব্রতা। একের পর এক বিলীন হচ্ছে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন স্থাপনা। পদ্মার কড়াল গ্রাসে, গত তিনমাসেই নিঃস্ব হয়েছেন প্রায় সাত হাজার পরিবার। স্থানীয়দের অভিযোগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণেই এই অবস্থা।
তিলে তিলে গড়ে তোলা বসতঘর কিংবা বাণিজ্যিক স্থাপনা চোখের সামনে বিলীন হওয়ার এ চিত্র এখন নিত্যদিনের। রাত-দিন বসতভিটা, রাস্তাঘাট গ্রাস করছে পদ্মা নদী। দীর্ঘদিন ধরে, পদ্মার ভাঙা-গড়ার সাথে যুদ্ধ করছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। প্রতিবছরই পদ্মায় বিলীন হচ্ছে শত শত জনবসতি, ফসলি জমি, হাট-বাজার, লঞ্চঘাট, পাকা সড়ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন স্থাপনা। এ কারণে পাল্টে যাচ্ছে নড়িয়া উপজেলার মানচিত্র।
ভাঙন ঠেকাতে, গতবছর প্রায় এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ের আট দশমিক ৯ কিলোমিটার রক্ষাবাঁধ নির্মাণ ও নদী খননে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। চলতি বছরের দোসরা জানুয়ারি একনেকে পাস হয়, পদ্মা নদীর ডান তীররক্ষা প্রকল্প। ভাঙনের তীব্রতা কমাতে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও এখন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শুরু করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত কয়েক মাসে তীব্র আকার ধারণ করেছে নদীভাঙন। বিলীন হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি। বাণিজ্যিক ভবন, পাকা সড়ক ও সরকারি-বেসরকারি স্থাপনার পাশাপাশি পদ্মার কড়াল গ্রাসে বাদ পড়েনি নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও।
এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় কোনো কর্মকর্তা কথা বলেনি। তবে জেলা প্রশাসক জানান, তীব্র স্রোতের কারণে পদ্মার ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছেনা।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গতবছর নড়িয়া ও জাজিরায় পদ্মা নদী ভাঙনে গৃহহীন হয় ৩ হাজার ৮৯০ পরিবার। আর চলতি বছরে, গত তিনমাসেই নিঃস্ব হয়েছেন সাত হাজারের বেশি পরিবার।
পদ্মার কড়াল গ্রাসে নিঃস্ব শরীয়তপুরের ৭ হাজার পরিবার
Tag: others
No comments: