নেপালের ধৌলাগিরি শৃঙ্গ জয় করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ল পর্বতারোহীদের একটি দল৷ তুষার ধসে চাপা পড়ে ৯ জন মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ ৫ পর্বতারোহী ও ৪ জন শেরপা৷ কোনওমতে প্রাণ বেঁচেছেন বাকি অভিযাত্রীরা৷
পশ্চিম নেপালের ধৌলাগিরি পর্বত৷ উচ্চতা ৮,১৬৭ মিটার৷ পাহাড়ি পথে পদে পদে বিপদ৷ পর্বতারোহী বলেন, অন্য অনেক পাহাড়ের থেকে ধৌলগিরির উচ্চতা কম৷ কিন্তু, পাহাড়ের ঢালটি অত্যন্ত খাড়াই৷ তাই ধৌলাগিরি শৃঙ্গ আরোহণ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং৷ বস্তুত, ধৌলাগিরি অভিযানে গিয়ে বহুবার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন পর্বতারোহীরা৷ তবে তা বলে অভিযান থেমে থাকেনি! ফের দুর্ঘটনার ঘটল৷ জানা গিয়েছে, ধৌলাগিরি পর্বতমালার মাউন্ট গুরজারে অভিযান গিয়েছিল কোরিয়ার অভিযাত্রীদের একটি দল৷ শুক্রবার তাঁরা যখন বেসক্যাম্পে অপেক্ষা করছিলেন, তখন আচমকাই তুষারধস নামে৷ ৪ চারজন শেরপা-সহ ধসে চাপা পড়েন অভিযাত্রী দলের ৫ সদস্যরা৷ বাকিরা কোনওমতে প্রাণ বেঁচেছেন৷
বিশ্বের সপ্তম উচ্চতম শৃঙ্গ নেপালের ধৌলাগিরি৷ বছর দুয়েক আগে ধৌলাগিরি অভিযানে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন এভারেস্টজয়ী বাঙালি পর্বতারোহী রাজীব ভট্টাচার্য৷ বছর পাঁচেক এই পর্বতে অভিযানে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন আর এক এভারেস্টজয়ী বাঙালি পর্বতারোহী বসন্ত সিংহরায়৷ প্রায় দু’দিন নিখোঁজ ছিলেন তিনি৷ শেষপর্যন্ত ধৌলাগিরির চার নম্বর বেসক্যাম্পের কাছ থেকে বসন্ত সিংহরায়কে উদ্ধার করেন শেরপারা৷
তুষারঝড়ে নেপালের গুর্জা শৃঙ্গে নিশ্চিহ্ন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযাত্রী দল
: নেপালের গুর্জা শৃঙ্গ অভিযানের পথে তুষারঝড়ে মারা গেলেন আট পর্বতারোহী। মৃতরা হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযাত্রীরা এবং তাঁদের নেপালি গাইডরা। এখনও নিখোঁজ দলের নবম সদস্য। শনিবার একথা জানান নেপাল পুলিসের মুখপাত্র শৈলেশ থাপা। দক্ষিণ কোরিয়ার পর্বতারোহী কিম চ্যাং–হো মৃতদের মধ্যে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। অক্সিজেন ছাড়াই বিশ্বের সব থেকে উঁচু ১৪টি শৃঙ্গ সব থেকে দ্রুত জয়ের রেকর্ড ২০১৩ সালে গড়েছিলেন চ্যাং–হো। থাপা বলেছেন, শনিবার ভোরেই উদ্ধারকারী দলের হেলিকপ্টার ৭,১৯৩ মিটার উঁচু গুর্জা শৃঙ্গের পাদদেশের শিবিরে দেহগুলি পড়ে থাকতে দেখে। শিবিরটি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে গিয়েছে এবং তারই আশপাশে মৃতদেহগুলি যত্রতত্র ছড়িয়ে রয়েছে। তুষারঝড়ে পাথর, গাছ পড়ে অভিযাত্রীদের তাঁবু উড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা বলে অনুমান পুলিসের। শনিবার শিবিরের উপরে হেলিকপ্টার অবতরণ করলেও কনকনে হাওয়া এবং অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দেহ উদ্ধারের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। রবিবারের আগে দেহগুলি উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন থাপা।
উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারের পাইলট সিদ্ধার্থ গুরুং বলেছেন, ‘সব কিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অভিযাত্রীদের তাঁবুগুলি ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া আবহাওয়া এতোটাই খারাপ যে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না।’ নেপালের যে ট্রেকিং ক্যাম্প ওই অভিযানের উদ্যোক্তা, সেখানের কর্মী ওয়াংচু শেরপা জানলেন, গত প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে দক্ষিণ কোরিয় অভিযাত্রীদের ওই দলটির সঙ্গে সবরকম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। তারপরই নিখোঁজ অভিযাত্রী দলের সন্ধানে শুক্রবার স্থানীয় গ্রামবাসী এবং উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারের সাহায্য নিয়েছিলেন তাঁরা। তুষারধসপ্রবণ ধৌলাগিরি সংলগ্ন নেপালের অন্নপূর্ণা অঞ্চলের শৃঙ্গ গুর্জা বিশ্বে সপ্তম উঁচু শৃঙ্গ।
তুষারঝড়ে নেপালের গুর্জা শৃঙ্গে নিশ্চিহ্ন দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযাত্রী দল
Tag: world
No comments: