নতুন মূসক আইন নিয়ে ভিন্ন মত বিশ্লেষকদের
২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সোয়া ৩ লাখ টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে। ভ্যাটের হার ও স্তর পুনর্বিন্যাস করে অবশেষে নতুন মূসক আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়েছে বাজেটে।
মূসক থেকে সর্বোচ্চ রাজস্ব আহরণের টার্গেট দেয়া হলে অব্যাহতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এ খাতে রাজস্ব কমবে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। কর ফাঁকি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ, কর ও ভ্যাট ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন ছাড়া রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে চায় বাংলাদেশ। এই সমৃদ্ধি অর্জনের পথে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের ব্যয় যোগান দিতে এনবিআরের ওপর পড়েছে সোয়া ৩ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা।
ব্যবসায়ীদের বিরোধিতা ও সমালোচনার মুখে ২ বছর স্থগিত রাখার পর অবশেষে জুলাই থেকে নতুন মূসক আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়েছে এবারের বাজেটে। নিত্যপণ্যের মূসক হার না বাড়লেও আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম মূসক নেয়ার পরিধি বাড়ানো হয়েছে। ভ্যাটের স্তর ৫টি থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৪টি। সর্বনিম্ন ভ্যাট হার করা হয়েছে ৫ শতাংশ। ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় থাকছে ভ্যাটের আওতামুক্ত।
চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২৮ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি আছে এনবিআর-এর। তবে করের আওতা বৃদ্ধি ও কর ফাঁকি রোধ করে আগামী অর্থ বছরের প্রস্তাবিত রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করতে হবে। করের হার বাড়িয়ে নয়, করের আওতা বিস্তৃত করে।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাকে উচ্চাভিলাসী উল্লেখ করে এনবিআর'এর পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন ও সক্ষমতা বাড়ানো ছাড়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয় বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। ভ্যাট আইনে অব্যাহতি সীমা বাড়ানোয় ভ্যাট থেকে রাজস্ব কমে যাবে বলে মনে করেন তারা।
এনবিআর-এর সাবেক কর্মকর্তা ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, তিনভাবে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যায়। জিডিপি গ্রোথ রেট কত, প্লাস ইনফ্লেসন রেট কত, প্লাস এডমিনস্ট্রিটিভ ক্যাপসিটি। নতুন আইনের মধ্য দিয়ে যে একটি সরল স্ট্রিম লাইন মূল্য সংযোজন কর ব্যবস্থা তার কোনো আশা আমি দেখতে পাচ্ছি না। এটাকে বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত দূরহ হবে।
বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোয় হতাশা ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ।
২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোট টাকা। এনবিআর বর্হিভূত খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। কর ব্যতীত আয় ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।
No comments: