Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » মূলধন ঘাটতিসহ নানা সমস্যায় ১০ ব্যাংক




বিভিন্ন অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে ব্যাংকিং খাত। গ্রাহকের ফাঁদে পা দিয়ে যাচাই-বাছাই না করেই ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। এসব ঋণ আদায় করতে না পারায় বাড়ছে খেলাপি ঋণ। এতে বাড়তি নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন রাখতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। যার প্রভাব পড়ছে ব্যাংকের মূলধনে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মার্চ শেষে মূলধন সংকটে পড়েছে সরকারি-বেসরকারি ১০ ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন পর ঘাটতির তালিকা থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক বের হয়ে আসতে পারলেও এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংক। এছাড়া ঘাটতিতে থাকা অন্য ব্যাংকগুলো হচ্ছে- রাষ্ট্রায়ত্ব বেসিক, জনতা, অগ্রণী, বাংলাদেশ কৃষি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে এবি, বাংলাদেশ কমার্স, আইসিবি ইসলামী ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। সংশ্লিষ্টরা জানান, খেলাপি ঋণসহ নানা কারণে ব্যাংক খাত দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ জন্য ব্যাংক মালিক ও পরিচালনাকারীরা দায়ী। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এটাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। ফলে দেশি ও বৈদেশিক বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত যত দ্রুত সম্ভব এ সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন: ব্যাংক তো নিজে থেকে সংকটে পড়ে নাই। সংকটে পড়ার পেছনে মালিক পক্ষ এবং ব্যাংক পরিচালনাকারী উভয়ই দায়ী। তাদের পরিচালনার দক্ষতার অভাবেই সংকটে পড়েছে ব্যাংক। এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অপসংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে অটোমেটিক্যালি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব চলে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর। তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক সেই ভূমিকা নিতে পারছে না। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক ভালো কাজ করেছে কিন্তু সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক দুর্বল অবস্থায় রয়েছে এবং নমনীয়তা দেখাচ্ছে। “বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পরিস্থিতি কেন তা বলতে পারব না তবে দুটো কারণ হতে পারে। এক. হতে পারে সরকারের চাপে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দুই. হতে পারে তারা তাদের দক্ষতার অভাবে ব্যাংকিং খাতকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তবে ব্যাংকের আমানতকারীদের যেন ক্ষতি না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করে ব্যাংকিং খাতের এই বিশ্লেষক বলেন, ‘ব্যাংকগুলো যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ ব্যাংকগুলোর মালিকদের তো ক্ষতি হবে না। কারণ তারা ব্যাংকের মাত্র ১০ শতাংশের মালিক। তিনি বলেন, ক্ষতি হবে জনগণের; যারা ব্যাংকে আমানত রেখেছেন। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ক্ষমতা রয়েছে তা প্রয়োগ করে ব্যাংকগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন: খেলাপি ঋণ বাড়ছে। তাই নিরাপত্তা সঞ্চিতি বেশি রাখতে হচ্ছে। বর্তমানে আমানত প্রবৃদ্ধি কম তাই ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে রয়েছে। এ কারণে বাড়তি সঞ্চিতি রাখতে গিয়ে মূলধনে হাত দিতে হচ্ছে। সরকারি ব্যাংকগুলোতে এ হার বেশি। তিনি বলেন, প্রতি বছরই বাজেট থেকে এ মূলধন জোগান দেয়া হয়। এবার এ খাতে অর্থ বরাদ্দ দেয়নি সরকার। এটা ভালো সিদ্ধান্ত। এখন ব্যাংকগুলোর উচিত হবে খেলাপি আদায়ে জোর দেয়া। কারণ খেলাপি আদায় হলে মূলধনের ওপর চাপ কমবে। একই সঙ্গে খেলাপি ঋণ যারা কমাতে ব্যর্থ হবে তাদের কার্যক্রম সংকুচিত করে রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় রোধ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সাবেক এই গভর্নর। আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং রীতিনীতি অনুযায়ী, একটি ব্যাংকের মোট ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকা এর মধ্যে যেটি বেশি সেই পরিমাণ মূলধন রাখতে হয়। ঝুঁকি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যাসেল-৩ নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোকে ১০ শতাংশ ন্যূনতম মূলধনের পাশাপাশি দশমিক ৬২ শতাংশ হারে অতিরিক্ত মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। এ হিসাবে চলতি বছরের মার্চ শেষে ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে ১০টি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মার্চ শেষে মূলধন ঘাটতি সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ৮ হাজার ৮৮৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ৪ হাজার ৮৮৮ কোটি ৮ লাখ টাকা মূলধন ঘাটতি নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে জনতা ব্যাংক। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংকের ১ হাজার ৫৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ২৩৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, রূপালী ব্যাংকের ১৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ৭৩৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে। বেসরকারি খাতের ৩টি ব্যাংকের মোট মূলধন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূলধন ঘাটতি রয়েছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের। ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি ১ হাজার ৫৬৯ কোটি ৯ লাখ টাকা। ঘাটতিতে থাকা অন্য ২ ব্যাংকের মধ্যে এবি ব্যাংকের ৩৭৬ কোটি ৭৪ লাখ এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৪৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, এছাড়া বিদেশি ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের ৫৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার মূলধন ঘাটতি পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, যা ২০১৮ এর ডিসেম্বর শেষে ছিল ৯৩ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩ মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply