Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » এখনও কেমিক্যাল গোডাউনে সয়লাব চুড়িহাট্টা




রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির বছর পেরুলেও এখনও দগদগে আগুনের ক্ষত বিধ্বস্ত ওয়াহেদ ম্যানশন জুড়ে। যে ভবনের কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন কেড়েছে ৭১ প্রাণ। অথচ বিভীষিকাময় সেই ঘটনটায় নিহতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পায়নি পুলিশ। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টা ওয়াহেদ ম্যানশনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগে। ওই ভবনে কেমিক্যাল গোডাউন থাকায় মুহূর্তে ভয়াবহ রূপ নেয় আগুন। ঘটনাস্থলেই পুড়ে মৃত্যু হয় ৬৭ জনের। দগ্ধ ১৫ জনের মধ্যে ৪ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে মারা যান। সংস্কার শুধু নিচতলায় বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনে পোড়া চারতলা ওয়াহেদ ম্যানশনটি এখনো পোড়া ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ভাঙ্গা দেয়াল কালসিটে দাগে দেখতে এটি যেন এক ভুতূড়ে বাড়ি। ট্র্যাজেডির বছর পূর্তিতে নিহতদের স্মরণে বিভিন্ন সংগঠন ও স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে টানানো হয়েছে ব্যানার। আগুনে ভবনের প্রায় পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্থ হলেও শুধুমাত্র নিচতলা সংস্কার করা হয়েছে। এখনো কেমিক্যাল গোডাউনে সয়লাব চুড়িহাট্টা ওয়াহেদ ম্যানশনের আশেপাশে চুড়িহাট্টা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো এলাকাজুড়ে প্লাস্টিক তৈরির কাঁচামাল এবং কেমিক্যাল গোডাউনে সয়লাব। সরু গলিপথের দোকানে দোকানে প্রকাশ্যে সেসব বিক্রি হচ্ছে। চুড়িহাট্টাবাসী যেন ভুলতেই বসেছে, এই কেমিক্যালে কোনভাবে আগুনের স্পর্শ পেলেই আবারো ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এলাকার বেশিরভাগ আবাসিক ভবনগুলোর নিচতলার সামনের অংশের দোকানগুলোতে প্লাস্টিক কাঁচামালের দানা, বিভিন্ন কেমিক্যালের বিক্রির দোকান। কোন কোন ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ড অর্থাৎ পার্কি প্লেসে রয়েছে সেসব প্রাণঘাতী কেমিক্যালের গোডাউন। আগের মতোই কোনো ধরনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার ছাড়াই কর্মীরা সেগুলো ভেতরে-বাহিরে আনা নেওয়া করছেন। বিভিন্ন গাড়ি থেকে মালামাল উঠাচ্ছেন বা নামাচ্ছেন। প্রশাসনের রয়েছে উদাসীনতা চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে চুড়িহাট্টার বেশকিছু স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলছেন, প্রশাসনের উদাসীনতা এবং এলাকার স্থানীয় বাড়িওয়ালাদের কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল, প্লাস্টিক কাঁচামাল এখান থেকে সরানো সম্ভব হচ্ছে না। নিমতলি ট্র্যাজেডির পর সচেতন হলে চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতো না। এই কেমিক্যালের কারণে যে আবারো বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটবেনা তারও কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবেনা। এলাকাবাসীরা জানায়, চকবাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে পুরাতন ভবন হওয়ার কারণে ভাড়াটিয়ারা থাকতে চান না। এর বিপরীতে কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের ঘর ভাড়া দেওয়া হলে জামানত এবং মাসে মাসে মোটা অঙ্কের ভাড়া পাওয়া যায়। কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে পরিমান অর্থ পাওয়া যায় তার অর্ধেক পরিমাণও আবাসিক ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। ফলে কেমিক্যালের ঝুঁকির বিষয়টি জেনেও বাড়ির মালিকরা ব্যবসায়ীদের ঘর ভাড়া দেন। দগ্ধ সন্তানের স্মৃতি খোঁজেন নাসির উদ্দিন ওয়াহেদ ম্যানশনের আগুনে নিহত ওয়াসির উদ্দীনের বাবা নাসির উদ্দীনের মোটামোটি অবসরেই কাটে প্রায় সারাদিন, নিহত ছেলের কথা মনে হলে ওয়াহেদ ম্যানশনের দিকে ঘুরাফেরা করেন। আগুনে সন্তান গেছে সেই শোক চেপে আক্ষেপ করেই বলতে থাকেন এলাকার অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি জানালেন, নিমতলিতে আগুন লাগার পর কেমিক্যাল গোডাউনগুলো সরিয়ে নিলে এখানে আগুন লাগতো না। এখানও সরকার চাইলেই কোনো একটা নির্দিষ্টস্থানে কেমিক্যাল গোডাউনগুলো সরিয়ে নিতে পারে। এগুলোর জন্য আলাদা এলাকা করে দেওয়া হোক। একবার বলাবলি হচ্ছিলো নদীর ওপারে নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে যাবে, কিন্তু সেই কথার কোন বাস্তবায়নই দেখছিনা। জেনে শুনে বিষপান করছেন বাড়ির মালিকরা প্রশাসনের উদাসীনতার পাশাপাশি বাড়ির মালিকদের খামখেয়ালীপনার বিষয়টি উল্লেখ করে স্থানীয় বাসিন্দা বোরহান আহমেদ বলেন, শুধু প্রশাসনকে দায় দিলে ভুল হবে। আমি পুরান ঢাকার বাসিন্দা, আমি জানি। এখানকার লোকজন ঝুঁকির কথা জেনেই কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের ভাড়া দেয়। আমি জানি যে কোন মুহূর্তে আগুন লাগলেই স্ত্রী-সন্তানসহ আমি মারা যেতে পারি। তারপরেও আমি টাকার জন্য ভাড়া দিচ্ছি। কারণ কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা বেশি ভাড়া দেয়, জামানতও বেশি। এটা জেনেশুনে বিষপানের মতো। বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন এখনও গোডাউনের মালিককে গ্রেপ্তারের ‘চেষ্টা’ মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা, চকবাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘যতটুকু জানতে পেরেছি, গোডাউনের মালিক ভারতের মারোয়াড়ি গোত্রের লোক ছিল। বাংলাদেশে তাদের স্থায়ী কোনো ঠিকানা, ট্রেড লাইসেন্স—এসব পাওয়া যায়নি। তাদের অবস্থানও শনাক্ত করা যায়নি। এর পরও তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাঁচ-ছয়জনের অবহেলার তথ্য পাওয়া গেছে। এখন যাচাই-বাছাই চলছে। এ ছাড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া তদন্ত শেষ করা যাবে না। আগে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল, নিয়মিত মামলা হওয়ার পর ওই মামলা শেষ হয়ে গেছে। এখন একটিই মামলা রয়েছে।’ তবে তিনি অবহেলার জন্য দায়ী কারো নাম বলতে রাজি হননি। তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দগ্ধ ও খণ্ডিত লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে দীর্ঘদিন লাগায় এখন পর্যন্ত মাত্র আটজনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তসহ কিছু তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য আছে বলেও জানা যায়। এক বছরেও মেলেনি ময়নাতদন্ত রিপোর্ট চুড়িহাট্টা ট্যাজেডির এক বছর পার হলেও নিহতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পায় নি পুলিশ। জানতে চাইলে লালবাগ ডিভিশনের ডিসি (উপ কমিশনার) মুনতাসিরুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমরা এখনও ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাইনি। সব সময় চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। তারা বলছেন রিপোর্ট দিতে একটু দেরি হবে। মরদেহের কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেই দেবো। ‘দ্রুতই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে’ লালবাগ ডিভিশনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘ময়নাতদন্ত রিপোর্ট চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ড মামলার তদন্তের অগ্রগতির একটি অংশ। এ হিসেবে দ্রুত তদন্ত শেষ করে আদালতে পুলিশি রিপোর্ট দাখিল করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত এক বছরে মামলাটির অনেককিছু বেরিয়ে এসেছে। এরমধ্যে তিন-চারজনের নামও এসেছে। তাদের নিয়ে আমরা অনেক যাচাই-বাছাই করছি।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে আশা করি বাকি তদন্ত শেষ করে পূর্ণাঙ্গ একটা রিপোর্ট আদালতে শিগগির দাখিল করতে পারব।’ তিনটি মরদেহের পরিচয় আজও অজানা পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে তিনজনের মরদেহ এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এই অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৬৭টি মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগে। এরমধ্যে ৪৫টি মরদেহ প্রাথমিকভাবেই শনাক্ত এবং তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর বাকি ২২টি মরদেহের মধ্যে ডিএনএ নমুনার মাধ্যমে ১৯টি শনাক্ত করা হয়। কিন্তু বাকি তিনটি মরদেহ আজও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।’






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply