: প্রচণ্ড ঝড়ঝঞ্জায় লন্ডন হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করার আগে একশো কোটি ভোল্টের বিদ্যুত্ আছড়ে পড়ল একটি বিমানে। শাখা-প্রশাখা নিয়ে বিদ্যুতের চোখের নিমিষে ঝলকানি, যেন মনে হবে এই বুঝি ভস্ম হয়ে গেল বিমানটা। যিনি ক্যামেরাবন্দি করেছেন, তাঁর মুখে একটাই শব্দ বেরিয়ে আসে, “ও মাই গড”। যাত্রীবাহী বিমানটিকে ‘গড’ রক্ষা করেছে কিনা জানা নেই, কিন্তু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দৌলতে সে দিন নিরাপদে লন্ডন হিথরো বিমানবন্দরে অবতরণ করে বিমানটি। বিমানে শিহরণ জাগানো বজ্রপাতের আঘাতের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
নিশ্চয়ই প্রশ্ন জাগছে, কয়েক লক্ষ কোটি বিদ্যুতের আঘাতেও কেন বিমানের কিছু হলো না?
বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি বজ্রপাতের কথা মাথায় রেখে বিমান তৈরি করেন। সেই মতোই বিমানের বাইরের ফিউসালেজের অংশ বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। সহজভাবে বলতে গেলে বিমানের বাইরের অংশ যে মিশ্র উপাদানে তৈরি থাকে, সেটিকে বজ্রনিরোধক হিসাবে বানানো হয়। সেই কভার বা চাদরের মধ্যে একটি তামার ঘন জালের স্তর থাকে। এই জালের খাঁচার মতো স্তরটিই পারতপক্ষে বিমানের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাদি ও যাত্রীদের বিদ্যুত্স্পৃষ্ঠ হওয়া থেকে বাঁচায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েক লক্ষ কোটি বিদ্যুত্ বিমানের নাকের ভিতর প্রবেশ করে লেজ দিয়ে নির্গমন হয়।
ফ্যারেডে খাঁচা:
ফ্যারাডের সূত্র অনুযায়ী কোনও বিদ্যুতবাহী জালের মধ্য দিয়ে বিদ্যুত্ সরবরাহ করা হলে সমস্ত বিদ্যুত্ সেই জালের বাইরের অংশ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ভিতরের অংশে সেই বিদ্যুত্ প্রবাহের প্রভাব পড়ে না। সেই তত্ত্বেরই প্রয়োগ করা হয় বিমান আচ্ছাদনের একটি স্তরে। তামার আস্তরণটি ফ্যারাডের সূত্রের তারজালির মতো কাজ করে। আর সেই কারণেই বিমানে অভ্যন্তরে কোনও ক্ষতি হয় না। তাছাড়া বিমানের বাইরের আস্তরণ উচ্চ তাপ সহনে সক্ষম। তাই বজ্রবিদ্যুতের সময়ে প্রচন্ড উত্তাপেও কোনও ক্ষতি হয় না।
No comments: