বিশ্ব এই মহামারি করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বাঁচতে পর্যায়ক্রমে লকডাউন শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনেক দেশ। এদিকে লকডাউন পরিস্থিতি শিথিল করার পর পাকিস্তানে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা।
এমন অবস্থায় দেশটিতে আবার লকডাউনের মতো পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে সেটা ‘বিক্ষিপ্ত’ লকডাউন হলেও চলবে বলে মত সংস্থাটির।
মার্চে পাকিস্তানে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই দেশ জুড়ে লকডাউন দেওয়ার বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার মতে, অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল পাকিস্তানের মতো দেশগুলো কঠিন লকডাউন মেনে চলতে পারবে না।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশজুড়ে লকডাউন দেওয়ার পরিবর্তে পাকিস্তানের পাঁচটি রাজ্যে নড়বড়ে পর্যায়ের লকডাউন দেয় পাকিস্তান সরকার। সে লকডাউনের বিধিনিষেধও গত সপ্তাহে উঠিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেয় তারা। আর এসব ঘটনা প্রবাহে পাকিস্তানের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিনই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত পাকিস্তানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৭০২ জন। মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ২৫৫ জন। আর সুস্থ হয়েছে ৩৬ হাজার ৩০৮ জন।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, পাকিস্তানে পর্যাপ্ত পরিমাণ টেস্ট হচ্ছে না। টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হলে আক্রান্ত আরও বাড়তে পারে।
করোনায় আক্রান্ত পাকিস্তানের রাজ্যগুলোর মধ্যে পাঞ্জাব অন্যতম।
পাঞ্জাবের রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদসহ পাকিস্তানের রাজ্যগুলোকে পাঠানো এক চিঠিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, “বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী পাকিস্তান লকডাউন তুলে নেওয়ার পূর্ব শর্তগুলো পূরণ করতে পারেনি।”
ডব্লিউএইচও’র মতে, করোনা মোকাবিলায় দেশটির জনসাধারণ সামাজিক দূরত্ব ও বারবার হাত ধোয়ার মতো আচরণগত পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠতে পারেনি। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সংক্রমিত এলাকায় ‘বিক্ষিপ্ত’ লকডাউনসহ কঠিন কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
পাকিস্তান মোট নমুনা টেস্টের ২৫ শতাংশ পজিটিভ আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জনসংখ্যার অনুপাতে শনাক্তের এই হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে বলে নির্দেশ করছে।
এ ছাড়া দেশটির হাসপাতালগুলোও বলছে, তাদের রোগী ধারণ করার ক্ষমতা প্রায় ফুরিয়ে আসছে। কিছু কিছু হাসপাতালে কভিড-১৯ রোগী ফিরিয়েও দিচ্ছে।
শুধু পাকিস্তানই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত লাফিয়ে বাড়ছে ভারত, বাংলাদেশেও।
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস জানান, এখন আক্রান্তের বেশিরভাগই হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকার দেশগুলোতে।
No comments: