ইরান ইস্যুতে আবারো একঘরে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ইস্যুতে আবারো একঘরে হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৩টি দেশ। বলা হয়, দুই বছর আগেই যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি থেকে সরে গেছে। যেখানে তারা চুক্তির কেউ না সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের এ সব দাবি-দাওয়া অযৌক্তিক, অর্থহীন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, ৩০ দিনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। তারপরই ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আমদানিতে নিষেধাজ্ঞাসহ জাতিসংঘের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হবে। তার এমন ঘোষণা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মার্কিন দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং বেলজিয়াম আপত্তি জানিয়েছে। এ তালিকায় বাকিরা চীন, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, নাইজার, সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, এস্তোনিয়া এবং তিউনেশিয়া লিখিতভাবে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। ইরানের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধের লক্ষ্যে ২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের শক্তিধর ৬ দেশ। চুক্তির শর্তে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ওয়াশিংটনের অভিযোগ ইরান চুক্তি লঙ্ঘন করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তিকে সবচেয়ে খারাপ চুক্তি আখ্যা দিয়ে ২০১৮ সালে বেরিয়ে যান। কূটনীতিক সূত্র জানিয়েছে, চীন, রাশিয়াসহ অনেক দেশ ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে চাচ্ছে না। পম্পেও শুক্রবারও চীন, রাশিয়াকে হুমকি দিয়েছেন। বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে মার্কিন প্রস্তাবে বাধা দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ওয়াশিংটন। শুক্রবার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সর্বসম্মত বিরোধিতাকে প্রত্যাখ্যান করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। জানিয়েছে, ৩০ দিন পর ইরানের বিরুদ্ধে সবধরনের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হবে। আমাদের কারো সম্মতির প্রয়োজন নেই। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইরান বিষয়ক বিশেষদূত ব্রেইন হুক। শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ইরান পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘন করে চলছে। তাদের বিরুদ্ধে এখন ব্যবস্থা নিতে হবে। সে লক্ষ্যে তেহরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ওয়াশিংটন। ব্রেইন হুক বলেন ,আমরা যা করছি, তাতে কেউ সমর্থন দিক, বা বিরোধিতা করুক তাতে কিছু যায় আসে না। নির্ধারিত ৩০ দিনের একদিন আজ অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব দেয়। এর আগের সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে আরোপ করা অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর লক্ষ্যে পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করে দেশটি। অক্টোবরে এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু ডোমিনিক রিপালিক ছাড়া আর কেউই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ভোট দেয়নি। চীন, রাশিয়া বিরোধিতা করেছে। বাকি ১১ রাষ্ট্র বিরত ছিল ভোটদান থেকে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত মাজিদ তাখত রাভাঞ্চি তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়ায় মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। মার্কিন উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ডোমিনিক রিপাবলিক এখনো তাদের অবস্থান জানায়নি। ট্রাম্প প্রশাসন ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক সময় রাত ৮টা থেকে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল চায়। এর কয়েকদিন আগে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার কথা ট্রাম্পের। করোনা মহামারির কারণে এবারের সম্মেলন ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এখন কী হবে? ২০১৫ সালে নিরাপত্তা পরিষদের পরমাণু চুক্তি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে বলা হয়, কোনো সদস্য রাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করলে, অন্য সদস্যরা ১০ দিনের মধ্যে তা কার্যকর না করলে, পরিষদের প্রেসিডেন্ট পরবর্তী ২০ দিনের মধ্যে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রের যেহেতু ভেটো ক্ষমতা আছে, সে কারণে ওয়াশিংটন তেহরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের স্পষ্টভাবে যুক্তি তুলে ধরতে পারে। ২০১৫ সালের প্রস্তাবনায় এও বলা হয়েছে, কোনো সদস্য রাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব দিলে তার সঙ্গে প্রতিপক্ষ দেশের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। এবং তার প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা যাবে। আগস্টে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সেপ্টেম্বরে এ দায়িত্ব পালন করবে নাইজার। কূটনীতিকরা বলছেন, খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করতে প্রেসিডেন্ট বাধ্য নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিরাপত্তা পরিষদের এক কূটনীতিক রয়টার্সকে বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য রাষ্ট্র মার্কিন প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে। মনে হয় না ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল উদ্যোগ সফল হবে। এছাড়া, খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্টের কোনো বাধ্যবাধতা নেই। পম্পেও এবং হুক ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র আশা করে ইন্দোনেশিয়া বা নাইজার ভোটের জন্য মার্কিন প্রস্তাবটি উত্থাপন করবে। এছাড়া ডোমিনিক রিপাবলিক বা যুক্তরাষ্ট্রকেই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব পরিষদে উঠানো লাগবে। যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি ২০১৫ সালে সই হওয়া চুক্তির নাম এখনো যৌথ পরমাণু চুক্তি। তাই তারা নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের দাবি তোলার অধিকার রাখে। যদিও নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রস্তাবের কয়েক ঘণ্টা পরই মার্কিন মিত্র ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্স জানিয়েছে, যেকোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ প্রস্তাবনা মেনে হতে হবে। না হয় স্বীকৃতি বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিরাপত্তা পরিষদের এ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফান দুজারিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাই নিজেদের প্রস্তাবনার ব্যাখ্যা নিজেদের দেবে। এখানে মহাসচিবের কোনো ভূমিকা নেই।
Slider
বিশ্ব
জাতীয়
সাম্প্রতিক খবর
খেলাধুলা
বিনোদন
ফিচার
mujib
w
যাবতীয় খবর
জিওগ্রাফিক্যাল
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: