ম ‘মনে হয় মরেই যাই’ আলাউদ্দিন আলীকে নিয়ে কবীর সুমন বাংলা গানের জীবনমুখী ঘরানার কিংবদন্তি শিল্পী কবীর সুমন আলাউদ্দিন আলীকে স্মরণ করে আপ্লুত হয়ে বলেছেন, ‘সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, হেমন্তু মুখোপাধ্যায়, সুধীন দাশগুপ্ত, নচিকেতা ঘোষ যুগের পর পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ মিলিয়ে সবচেয়ে বিশিষ্ট সুরকার ও পরিচালক তিনি।’ রোববার (০৯ আগস্ট) সময় সংবাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে আলাউদ্দিন আলীকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন কবীর সুমন। আরও পড়ুন: সত্তরের দশক থেকেই সঙ্গীতে পরিচিত নাম আলাউদ্দীন আলী ৭২ পেরিয়ে যাওয়া দুই বাংলার জনপ্রিয় এই শিল্পী বলতেই কিছুটা কষ্ট এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন বর্তমান প্রজন্মের এক অংশের দিকে, যারা ভালো বাংলা গান শোনেন না কিংবা খোঁজ রাখেন না; তাদের দিকে। তার ভাষায়, পশ্চিমবঙ্গের লোকদের মধ্যে বাংলাদেশের গান নিয়ে উৎসাহ অনেক কম আছে। এবার কিছু ব্যঙ্গাত্মক সুরে বলেন, এখন তো সকলেই মিউজিক ডিরেক্টর। যেমন ধরুন মাংসের ব্যবসা ছিল বা ধরুন গ্লোব নার্সারিরে ডিস্ট্রিবিউটর, গাছের চারা বিক্রি করতেন তারা এখন সঙ্গীত পরিচালক কিংবা সুরকার তারা তো আর এই সব জানতে চাইবে না। আলাউদ্দিন আলী ছিলেন, আমার মতে গত ৩০/৪০ বছর বাংলা ভাষায় যে গান হয়েছে তার সেরা সঙ্গীত পরিচালক। তার সবচেয়ে বড় ক্ষমতা ছিল, বাংলার পল্লী সুরগুলোকে কিংবা পল্লীগীতির আঙ্গিকগুলো খুব সুন্দরভাবে ব্যবহার করা। এটা ওনার মতো জানতেন খুবই কম সঙ্গীত পরিচালকই। তিনি এ সময় তুলনা করে বলেন, আমি পশ্চিমবঙ্গের এক দুজনের নাম মনে করতে পারবো না, যিনি বাংলার পল্লীর সুরের ওপর কাজ করেছেন। ধরুন বাংলা পালা গান তার যে ধরণ বা তার সুরের যে ধরণ- আলাউদ্দিন আলী তা জানতেন এবং সেই ভাবেই তিনি গান তৈরি করেছিলেন। অসামান্য দক্ষতা ছিল তার। কবীর সুমন তার সাংবাদিকতার জীবনের একটি স্মৃতি মনে করে বলেন, সালটা হয়তো ১৯৮৭ কিংবা ৮৮ হবে। তখন আমি হেমন্তু মুখোপাধ্যায়ের একটা সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে তাকে প্রশ্ন করেছিলাম যে ‘বাংলা গানের ভবিষ্যৎ কী’। হেমন্তু মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন, যে সুরকার তার গানে পল্লীগীতির ভাবধারা তুলে আনতে পারবেন সেই গানই ‘গান’ হয়ে উঠবে। এবার সুমন বলেন, আলাউদ্দিন আলী সেই ঘরানার একজন সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। বাংলা গানের নিজস্বতা সম্পর্কে উনি জানতেন। তার এত সুন্দর সুর যে গান মনে পড়লেই গাইতে ইচ্ছে করে। এবার আরেক প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের কথা তুলে কবীর সুমন সময় সংবাদকে বলেন, ‘আমি উনার গান শুনেছি এবং এর একটি মাধ্যম হলো সাবিনা। আলাউদ্দিন আলীর সম্পর্কে সাবিনার কাছ থেকেও অনেক কথা শুনেছি। আরও পড়ুন: বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত হবেন আলাউদ্দিন আলী এ সময় সুমন আরো বলেন, রুনা লায়লার একটা গান ‘বুকে আমার আগুন জ্বলে’ এই গানটা কলকাতা থেকে রেকর্ড হয়েছিল। যদি খুব ভুল না হয়ে থাকে এটাও আলাউদ্দিন আলীর সুরে (সুমন এ সময় গুনগুন করে গানটি গাইলেন কয়েক লাইন)। কথার সুরে ভাবতে ভাবতে এক সময় আবেগের সাগরে তলিয়ে গেলেন কবীর সুমন। বললেন, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, হেমন্তু মুখোপাধ্যায়, সুধীন দাশগুপ্ত, নচিকেতা ঘোষ এই যুগের পর পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ মিলিয়ে সবচেয়ে বিশিষ্ট সুরকার আলাউদ্দিন আলী। কবীর সুমনের ভাষায়, দেখুন বাংলা গানের নিজস্ব একটা ধরণ আচ্ছে। পাশ্চাত্য সঙ্গীত মিলিয়ে একটা ড্যারা পেটানো ড্রাম পিটিয়ে, গিটার বাজিয়ে গাইলেই তো হবে না; নানা রকম ধ্বনির সমন্বয় ঘটিয়ে তো নয়! সুরের যে জায়গা আছে, সুরের মেজাজটা আলাউদ্দিন আলী জানতেন। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, আলাউদ্দিন আলী যেটা পারতেন পশ্চিমবঙ্গের ক’জন শিল্পী সেটা পারেন সেটা হাতে গুণে বলে দেওয়া যায়। এ সময় বাংলাদেশের আরেক প্রখ্যাত সুরকার ইমজিয়াজ আহমেদ বুলবুলের কথাও স্মরণ করেন। সুমন বলেন, তারও একটা নিজস্ব ধারা ছিল, ধরণ ছিল তার মধ্যে খুব আধুনিক একটা জায়গা ছিল। আলাউদ্দিন আলীও কিন্তু খুব আধুনিক ছিলেন। আধুনিক বাংলা গানের যে ধারা, যা চলে আসছে ১৫০ বছর ধরে তার একজন উত্তরাধিকারী বলা ভালো। স্বার্থক উত্তরাধিকারী ছিলেন আমাদের আলাউদ্দিন আলী; যোগ করেন কবীর সুমন। আরও পড়ুন: আলাউদ্দিন আলীকে নিয়ে যা লিখলেন শিল্পীরা ঢাকায় পুরনো এক আড্ডার কথা বলতে গিয়ে শিল্পী বললেন, একদিন বসে আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ গানের কথা উঠতেই আলী ভাই বলে উঠলেন চলুন সুমন দা আমরা ওপারে (মৃত্যুর পরের জগৎ) চলে যাই। যেখানে মানবেন্দ্র দা, সতীনাথ দা আছেন। কথাটা শুনে আমারও মনে হলো, সত্যিই ওই অনবদ্য এই সুরকারদের অনেক মিস করেন আলী ভাই- দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন কবীর সুমন। আবারও নিজের মধ্যে নিজেকে ধরে এনে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন কবীর সুমন। স্মৃতিকে স্মরণ করে বলেন, আহারে এই যে মিস করাটা না আমিও করি। আসলে বলুন তো, আমরা এখন কাদের মিস করবো, সেই রকম কেউ আছেন কী? এ যুগে সঙ্গীতের নামের যা চলছে; সেটা নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেন কবীর সুমন। বলেন, আমি কিন্তু সঙ্গীত পরিচালকের কথা বলছি সুরকারদের নয়। ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন কপোলের কালো তিল পড়বে চোখে’ এই গানটা কিছুটা গেয়ে বলেন, এই গানটা কী নবীন ঘোষের মতো কোনও সুরকার পারবেন? পারবেন না। এই সুরগুলো শুনলে মনে হয় মরেই যাই। এত হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া সুর। আলাউদ্দিন আলী, ইমতিয়াজ বুলবুল কিংবা আমি আমরা কিন্তু সুরের সংসার করেছি। আমরা কথা নিয়ে ভাবিনি। সুর নিয়ে ভেবেছি। টাকা পয়সার চিন্তাও কেউ করিনি। আমরা সকলেই উড়নচণ্ডি। অকপট স্বীকার করেন সুমন।
Slider
বিশ্ব
জাতীয়
সাম্প্রতিক খবর
খেলাধুলা
বিনোদন
ফিচার
mujib
w
যাবতীয় খবর
জিওগ্রাফিক্যাল
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: