Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » অস্ট্রেলিয়ার মনের ভূতের নাম যেন মোস্তাফিজ!




সিরিজ শুরুর আগে শটটা অনেকবারই অনুশীলন করতে দেখা গেছে অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডকে। পেসারদের বিপক্ষে অফ স্টাম্পের বাইরে গিয়ে অনেকটা প্যাডেল সুইপের মতো করে স্কয়ার লেগের ফিল্ডারদের মাথার ওপর দিয়ে মারা। কিন্তু ওয়েডের দুর্ভাগ্য! ম্যাচে মোস্তাফিজুর রহমানের বিপক্ষে ঠিক এই শট খেলতে গিয়েই বোল্ড হলেন তিনি।

ওয়েডের আউটটির সঙ্গে মিশে আছে আরও কিছু গল্প। বল ছাড়ার সময় লাফিয়ে অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরে এসে সুইপের চেষ্টা করেছিলেন ওয়েড। কিন্তু মোস্তাফিজ গতি কমিয়ে বলটাকে এতটাই ঘুরিয়ে দিলেন যে ওয়েডের চোখ ছানাবড়া! অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে বলটা যে ঘুরতে ঘুরতে আঘাত করেছে লেগ স্টাম্পে। আর তাতে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি ওয়েড। এর ঠিক পরের বলের গল্পটাও অবিশ্বাস্য। মাত্র ক্রিজে আসা অ্যাশটন অ্যাগারের জন্য মোস্তাফিজ উপহার হিসেবে দিলেন শর্ট বল। যেকোনো সাধারণ পেসারের এই লেংথের বল পুল অথবা কাট করে চার-ছক্কা মারা সম্ভব। কিন্তু মোস্তাফিজের বল বলে কথা। তিনি শর্ট বলেও কাটার মিশিয়েছেন। অ্যাগারের দুর্ভাগ্য, মোস্তাফিজের হাত থেকে ছুটে গিয়ে বলের সিম আঘাত করে উইকেটে। কাটারের সঙ্গে সিমের আঘাতে বল লাফিয়ে ওঠে। এতটাই লাফিয়ে উঠল যে অ্যাগার নিজের মুখ বাঁচাতে ব্যাট পেতে দেন বলের রাস্তায়। বলও কিপার নুরুল হাসানের কাছে চলে গেল সহজেই। বিজ্ঞাপন আউট হয়ে অ্যাগারের প্রতিক্রিয়াও ছিল অনেকটা ওয়েডের মতো। তাঁরও চোখে–মুখে ছিল অবিশ্বাস। ক্রিজ ছেড়ে যাওয়ার আগে নন স্ট্রাইক প্রান্তে দাঁড়ানো সতীর্থের দিকে তাকিয়ে অ্যাগার হেসেই ফেললেন। যেন সতীর্থ অ্যান্ড্রু টাইকে অ্যাগার বলছিলেন, ‘এটা কীভাবে সম্ভব!’ একই প্রশ্ন হয়তো করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার জস ফিলিপে। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান পাওয়ার–প্লেতে খেলছিলেন মোস্তাফিজের প্রথম ওভার। কী ভেবে যেন ওয়েডের মতো অফ স্টাম্পের বাইরে গিয়ে মোস্তাফিজকে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে মারার চেষ্টা করেন ফিলিপে। কিন্তু চতুর মোস্তাফিজ ফিলিপেকে সরতে দেখে গতি কমিয়ে বল ছাড়লেন। ততক্ষণে ব্যাট চালিয়ে ফেলেন এ অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান। বল এল দেরিতে। ফিলিপে চেয়ে চেয়ে দেখলেন, বল ধীরে ধীরে তাঁর লেগ স্টাম্পে আঘাত করছে। ফিলিপের চোখে–মুখে তখন বোকা বোকা ভাব। নিজেকে নিজেই যেন প্রশ্ন করছিলেন, ‘এ কী হলো আমার?’ ওয়েড, অ্যাগারের মতো হতবিহ্বল চেহারা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকেও। গতকাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে এভাবেই তিন উইকেট নেন মোস্তাফিজ। ম্যাচের স্কোরকার্ড দেখলে মনে হবে মোস্তাফিজ ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন। এর বেশি কিছু মাথায় আসার কথা না। কিন্তু এই তিন উইকেট যেভাবে এসেছে তা পুরো অস্ট্রেলিয়া দলের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছে। মনোজগতে ফেলেছে গভীর ছাপ। ম্যাচ শেষে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ওয়েড পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে যেমন বলছিলেন, ‘ওরা গতি কমিয়ে বল করেছে। বলকে প্রচুর ঘুরিয়েছে। যার বিপক্ষে আমাদের কোনো জবাব ছিল না।’ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও অবিশ্বাসটা ঘুরপাক খাচ্ছিল। অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ান এক সাংবাদিকের প্রথম প্রশ্নই ছিল মোস্তাফিজকে নিয়ে। উত্তর দিতে এসে অলরাউন্ডার মোয়েজেস হেনরিকেসের মুখের ভাবভঙ্গি বদলে গেল। অবিশ্বাসমিশ্রিত চেহারায় মাথা এপাশ–ওপাশ ঘোরাতে লাগলেন। অথচ মোস্তাফিজের সঙ্গে আইপিএলে একই দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন তিনি। রাত পেরিয়ে সকাল। তখনো যেন ঘোর কাটেনি অস্ট্রেলিয়ার। আজ সকালে অস্ট্রেলীয় দলের অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন বাঁহাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার অ্যাগার। গতকালের মতো আজও অ্যাগারের জন্য ‘মোস্তাফিজ’ প্রশ্ন নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন এক অস্ট্রেলীয় সাংবাদিক। সকাল সকাল নামটা শুনতেই অ্যাগার যে হাসিটা দিলেন, সেটার সঙ্গে গতকালের আউট হওয়ার পরের হাসির অনেক মিল। যেন অ্যাগারের চোখের সামনে গতকালের অবিশ্বাস্য আউটের দৃশ্য ফুটে উঠল। মোস্তাফিজের স্লোয়ার ও কাটার বুঝে উঠতে পারছে না অস্ট্রেলিয়া দৃশ্যটা কল্পনা করতেই যেন অ্যাগারের মুখ থেকে বেরিয়ে এল, ‘সে একজন অবিশ্বাস্য বোলার। এককথায় দুর্দান্ত। ওই স্লো বলটা করার যে সামর্থ্য তাঁর, তা চোখধাঁধানো। আপনি যদি স্লো মোশনে দেখেন তাঁর বোলিং, বলতেই হয়, এটা দারুণ দক্ষতা। ওর ওই বলটা স্লোয়ার বল কিন্তু ওতটা স্লো না। আমি কাল যেভাবে আউট হলাম, সেটা লাফিয়ে উঠেছে। কখনো এই বলটাই নিচু হয়ে আসবে। বাঁক খাবে। একেক সময় একেক রকম আচরণ করবে।’ দুই ম্যাচ শেষ। সিরিজের বাকি আরও তিন ম্যাচ। কীভাবে মোস্তাফিজকে খেলা সম্ভব, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে নিশ্চয়ই এখন এলোমেলো অস্ট্রেলিয়ার ভাবনার জগত। কল্পনা করাই যায়, টিম মিটিংয়ে বড় পর্দায় মোস্তাফিজের বোলিংয়ের প্রতিটি ফ্রেম থামিয়ে থামিয়ে বিশ্লেষণ করছেন অস্ট্রেলিয়া দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট। ব্যাটসম্যানরা কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের কাছে যাচ্ছেন মোস্তাফিজকে কীভাবে খেলা যায়, সেটা জানতে। অথচ এ সিরিজে অস্ট্রেলীয় বোলারদেরই ভয় পাওয়ার কথা বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের। সিরিজ শুরুর আগে এ নিয়ে কথাও উঠেছিল। বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা কীভাবে মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউডদের সামলাবেন—শঙ্কা ছিল এ নিয়েই। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো অবশ্য বোলারের নাম নিয়ে বেশি চিন্তিত না হয়ে তাঁদের বলগুলোকেই খেলতে বলেছিলেন ঠিকমতো। সিরিজের দুই ম্যাচ পর প্রশ্নটা এখন অস্ট্রেলিয়ার ক্যাম্পে। মোস্তাফিজ থাকায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মানসিক সুবিধাটা এখন বাংলাদেশের পক্ষে। অস্ট্রেলিয়ার মনের ভূতের নাম যেন মোস্তাফিজ!






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply