লেবাননে ইসরায়েলের বিমান হামলা
লেবাননে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছে, লেবাননের ভূখণ্ড থেকে দুটি রকেট ইসরায়েলে নিক্ষেপ করার পর বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) এ হামলা হয়েছে।
ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই আন্তঃসীমান্ত নতুন এই বৈরিতার খবর এসেছে। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবাননের দুটি রকেট নিক্ষেপস্থলে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও আগের একটি জায়গা থেকে রকেট হামলা হয়েছিল, সেখানেও আঘাত হেনেছে ইসরায়েলের বিমান।
এই হামলাকে ইসরায়েলের ‘আগ্রাসী অভিপ্রায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে লেবাননের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আউন। তিনি বলেন, দক্ষিণ লেবাননের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য এই হামলা সরাসরি হুমকি। এর মধ্য দিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন হয়েছে।
হিজবুল্লাহর আল-মাহের টেলিভিশন জানিয়েছে, লেবাননের শহর মাহমুদিয়ার উপকণ্ঠে দুটি অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বিমান। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন্নি গানটজ বলেন, এ হামলার মাধ্যমে তাদের পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হয়েছে যে আমাদের আরও কিছু করার ক্ষমতা আছে। আশা করছি, সে পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না।
এর আগে বুধবার (০৪ আগস্ট) লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা দুটি রকেট আঘাত হেনেছে ইসরায়েলে। ইসরাইলের মেগান ডেভিড অ্যাডম অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, সীমান্তের এই হামলায় ইসরাইলের কেউ হতাহত হয়নি। হামলার পর একটি মাঠ থেকে ধোঁয়া ওঠার একটি ছবিও টুইটারে শেয়ার দিয়েছে তারা।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রকেট হামলার সঙ্গে সঙ্গে লেবাননের সীমান্তের কিরায়াত শমোনা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে সাইরেন বেজে ওঠে।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে তিনটি রকেট হামলা হয়েছে। যার একটি ইসরাইলি সীমান্তের কাছে এসে পড়েছে। বাকি দুটো ইসরাইলের ভেতরে আঘাত হেনেছে।
জবাবে ইসরায়েলি গোলন্দাজ বাহিনীও লেবাননের ভেতরে হামলা চালিয়েছে। ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ গেরিলাদের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াইয়ের পর এই সীমান্ত অনেকটা শান্ত ছিল।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হিজবুল্লাহর হাতে। তারা নিজেদের রকেট ভাণ্ডার আরও সমৃদ্ধ করে যাচ্ছেন নিয়মিত। অতীতে লেবাননে অবস্থান করা ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলে বিক্ষিপ্তভাবে গোলা নিক্ষেপ করতেন।
গত ২০ জুলাই দুটি রকেট ছোড়া হয়েছে। যদিও তাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইসরায়েলও কামানের গোলা নিক্ষেপ করে তার জবাব দিয়েছে।
গেল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি মালিকানাধীন একটি ট্যাংকারে ড্রোন হামলার পর নতুন এই সীমান্ত উত্তেজনার খবর এসেছে। ওই হামলার জন্য ইরানকে দোষারোপ করেছে ইসরায়েল। হামলায় ব্রিটিশ ও রোমানীয় দুই ক্রু সদস্য নিহত হয়েছেন।
তবে ইরান এই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। বুধবার (০৪ আগস্ট) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন্নি গান্টজ বলেন, এখন সময় হয়েছে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া। না হলে তারা এমন হামলা অব্যাহত রাখবে।
এর আগে ব্রিটেন, রোমানিয়া ও লাইবেরিয়া জানিয়েছে, ওই ড্রোন হামলার নেপথ্যে ইরানের ভূমিকা থাকার সম্ভাব্য আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বলছে, হামলার জবাব দিতে মিত্রদের সঙ্গে কাজ করছে তারা।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেন, প্রয়োজনে ইরানের বিরুদ্ধে এককভাবেই পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত রেখেছি।
Tag: English News Featured world
No comments: