মাজার-ই-শরীফ দখলে নিল তালেবান
তালেবান যোদ্ধারা আফগান সরকারের সর্ব উত্তরের শহর মাজার-ই-শরীফ দখল করেছে। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী উজবেকিস্তান সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে গেছে। খবর আল জাজিরার।
মাজার-ই-শরীফ দখলে নিল তালেবান
বলখ প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান আফজাল হাদিদ বলেন, শহরটি বিনা যুদ্ধে পতিত হয়েছে। তিনি বলেন, সৈন্যরা তাদের সরঞ্জাম নিয়ে সীমান্ত ক্রসিংয়ের দিকে গেছে।
তিনি বলেন, সমস্ত নিরাপত্তা বাহিনী মাজার শহর ছেড়ে চলে গেছে। যদিও শহরের কেন্দ্রের বাইরে একটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছিল।
বালখের সংসদ সদস্য আবাস ইব্রাহিমজাদা বলেন, প্রদেশের জাতীয় সেনা বাহিনী প্রথমে আত্মসমর্পণ করেছে; যা সরকারপন্থী মিলিশিয়া ও অন্যান্য বাহিনীকে মনোবল হারাতে এবং হামলার মুখে হাল ছেড়ে দিতে প্ররোচিত করেছিল।
প্রায় দুই দশক পর আবারো আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পথে এগোচ্ছে তালেবান। দখল করে নিচ্ছে একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানীসহ সীমান্ত এলাকা। এছাড়াও, তারা রাজধানী কাবুলের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা।
এর মধ্যেই আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহর থেকে সাবেক মুজাহিদ নেতা ও শহরটির সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ইসমাইল খান ও কয়েকজন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে আটক করেছে তালেবান। দেশটিতে চলমান সংঘাত এড়াতে কাতারে শান্তি আলোচনায় তালেবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। কাতারের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে তালেবানকে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের আশা, আফগান বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে তারা তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে। সেনা প্রত্যাহারের একমাস না যেতেই, মার্কিন কূটনীতিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশটিতে আবারো তিন হাজার সেনা পাঠিয়ে ওয়াশিংটন। একইসঙ্গে কাবুলে দিকে তালেবানরা এগিয়ে আসতে থাকায়, মার্কিন দূতাবাসের গুরুত্বপূর্ণ নথি ও স্পর্শকাতর সব তথ্যভাণ্ডার ধ্বংসে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানে তালেবানের দখলদারিত্ব বাড়তে থাকায় ইউরোপের কয়েকটি দেশ তাদের দূতাবাস বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে অন্তত ৬শ' সেনা মোতায়েন করেছেন বরিস জনসন। দেশটিতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতিতে শিগগিরই জরুরি সহায়তা দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আফগানিস্তানে তালেবানের সহিংসতা দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তালেবানকে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করে গৃহযুদ্ধ এড়াতে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, এই সময়ে যে কোনও উপায়ে আলোচনা শুরু করা উচিত। আফগানিস্তান গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে। আশপাশের সব দেশের উচিত শরণার্থীদের জন্য তাদের সীমান্ত খোলা রাখা।
তালেবান আগ্রাসনের মধ্যেই পাকিস্তানে আটকে পড়া শত শত আফগান নাগরিকের সঙ্গে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি সীমান্ত ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর সেটি বন্ধ করে দেয় পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ওই ক্রসিং বন্ধ হয়ে গেলে আটকে পড়ে শত শত আফগান নাগরিক।
No comments: