খাসোগি হত্যাকাণ্ডের কথা তোলায় বাইডেনকে পাল্টা তোপ যুবরাজের
সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের কথা তোলার পর দায় নেয়ার বদলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পাল্টা তোপ দাগলেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বললেন, ওই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে হলেও এটা করা হতো।
সৌদি বংশদ্ভূত জামাল খাসোগি দি ওয়াশিংটন পোস্টের একজন সাংবাদিক ও লেখক ছিলেন, যিনি আগে আল-এরাব নিউজ চ্যানেলের সাধারণ ব্যবস্থাপক এবং মুখ্য সম্পাদকের পদে নিযুক্ত ছিলেন। তিনি সৌদি আরব সরকারের প্রতিনিধি দ্বারা ২০১৮ সালের ২ অক্টোবরে ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে গুপ্তহত্যার শিকার হন।
চারদিনের মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন বাইডেন। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন সফর শেষে শুক্রবার (১৫ জুলাই) সৌদি আরব যান তিনি। এদিনই লোহিত সাগর তীরবর্তী শহর জেদ্দায় এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন এ দুই নেতা। বৈঠকের পর এক সম্মেলনে বাইডেন জানান, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকে মানবাধিকারের বিষয়ে কথা হয়েছে এবং রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেছেন। এছাড়া খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়েও কথা হয়েছে।
সিএএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে আগের মতোই খাসোগি হত্যার দায় নিতে অস্বীকার করেছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। সেই সঙ্গে নতুন করে এ প্রসঙ্গ তোলায় জবাবে বাইডেনকে পাল্টা কথা শোনান তিনি। তিনি কুখ্যাত আবু গারিব কারাগারে মার্কিন সেনাবাহিনীর হাতে বন্দিদের ভয়াবহ যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন : বাইডেন-যুবরাজ বৈঠকে আলোচনায় খাশোগি হত্যাকাণ্ড
শুধু তাই নয়, গত মাসে অধিকৃত পশ্চিমতীরে আল জাজিরার ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ’র হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে এ নিয়ে বাইডেন সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুবরাজের মতোই পাল্টা জবাব দিয়েছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবাইর।
যুবরাজ-বাইডেন বৈঠকের পরপরই সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজের সুরেই সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ড তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হয়েছে। এমনকি এ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেটাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
সিএনএনের কাছে পাল্টা প্রশ্ন রেখে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, যে কোনো হত্যাকাণ্ডের বেলায় প্রতিটি দেশ এটাই করে। যুক্তরাষ্ট্র হলে একই কাজ করত। এমনকি আবু গারিব কারাগারে বন্দিদের নির্যাতন করেও ওয়াশিংটন এটাই করেছে।’
কুখ্যাত আবু গারিব কারাগার ছিল ইরাকে মার্কিন সেনাবাহিনীর বন্দিশিবির। ইরাকের আবু গারিব শহরে অবস্থিত আবু গারিব কারাগারটি বাগদাদের ৩২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। ২০০৩ সালে ইরাক আগ্রাসনের পর বহু বন্দিশিবির প্রতিষ্ঠা করে মার্কিনিরা। এর মধ্যে আবু গারিব ছিল সবচেয়ে বড়। ২০০৪ সালের দিকে ওই কারাগারে ৭ হাজার ৪৯০ জনের মতো বন্দি আটক ছিলেন।
আরও পড়ুন : বাইডেনের সফরের পরেই গাজায় ইসরাইলি হামলা
২০০৪ সালে কারাগারের বেশ কিছু ছবি ফাঁস হয়ে যায়। এতে ইরাকি বন্দিদের ওপর ভয়াবহ যৌন ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা সামনে আসে। এ ঘটনায় মার্কিন সেনাবাহিনীর অন্তত ১১ সেনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আর গত মাসেই পশ্চিমতীরের জেনিনে সংবাদ সংগ্রহকালে আল জাজিরার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে গুলি করে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী। কিন্তু এ ঘটনায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপই নেয়নি বাইডেন প্রশাসন।
Tag: English News lid news others world
No comments: