Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে চীনের সমর্থন বিরোধী পক্ষে?




নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ২০২১ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যখন দেশটির ক্ষমতা দখল করে, তখন একে ‘মন্ত্রিসভার ব্যাপক রদবদল’ বলে আখ্যা দিয়েছিল চীন। এ সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারজুড়ে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এতে হাজারো মানুষ প্রাণ হারান, গৃহহীন হয়ে পড়ে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। জান্তা সরকারের বর্বরতায় সৃষ্টি হয় অমানবিক পরিস্থিতির। এই সংঘাতে আপাতদৃষ্টিতে চীনের অবস্থান জান্তা সরকারের পক্ষে হলেও, সময়ের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইস্যুতে তা বদলে যায়। মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ চলছে। ছবি: সংগৃহীত ম মিয়ানমারের অস্থিতিশীল সেই সময়েও জান্তা সরকারের পাশে ছিল চীন। এ সময় জান্তা সরকারের ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার কড়া সমালোচনাও করে বেইজিং। শুধু তাই নয়, মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অস্ত্র বিক্রি করে বেইজিং। জান্তা সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের জাতিগত মিলিশিয়া গ্রুপের একটি জোট, যার নাম থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। এই জোটটি সাধারণত চীন সীমান্তবর্তী এলাকার জঙ্গল যা অনানুষ্ঠানিকভাবে চীনের প্রভাব বলয়ের মধ্যে পড়ে সেসব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করত। এবং দ্রুতই তারা জান্তা সরকারের নিরাপত্তার জন্য বিরাট হুমকি হিসেবে উপস্থিত হয়। আরও পড়ুন: মিয়ানমারে জান্তার হামলায় এক মাসে তিন শতাধিক নাগরিক নিহত তারপরও চীন এই বিরোধী জোটকে দমানোর বা নিরুৎসাহিত করার কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এমনকি এই বিদ্রোহী জোট দাবি করে যে তারা জান্তা সরকারের প্রায় ২০০ ঘাঁটি ও চারটি সীমান্ত ক্রসিং দখল করে নিয়েছে যা চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের মতে, একের পর এক সফল অভিযানের পর জান্তা সরকারের বিরোধী বিভিন্ন জাতিগত ও রাজনৈতিক দলের নেতারাও জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন শুরু করে। তাদের পর আরও দ্বিগুণ গতিতে হামলা চালানো শুরু করে বিরোধীরা। এতে করে মিয়ানমারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। থ্রি ব্রাদারহুডের অক্টোবর ২৭ অভিযান যা অপারেশন ১০২৭ নামে পরিচিত। এই অপারেশন শুরু হওয়ার পর দ্য থ্রি ব্যাদারহুড জোট ঘোষণা দেয় যে, তারা মিয়ানমার-চীন সীমান্তে গত তিন বছর ধরে যে অনলাইন প্রতারক চক্র সক্রিয় রয়েছে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য কাজ করবে। যা চীনের নিরাপত্তার জন্য অনেক বড় হুমকি। এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে ১ লাখ ২০ হাজার অবৈধ শ্রমিক ঢুকেছে যাদের অনেকেই চীনের নাগরিক। মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে চীনের ভূমিকা নিয়ে আপাতদৃষ্টিতে এমন একটা ধারণা হয় সবার যে, জান্তা সরকার ও বিরোধী জোটগুলোর সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে চীন তার অবস্থা পাল্টে ফেলেছে। বিরোধী জোটের প্রতি তার সমর্থন বাড়াচ্ছে। মিয়ানমারের প্রতি চীনের এমন অসন্তোষ বাড়ার কারণে নভেম্বরে চীন বিরোধী প্রতিবাদ সভা সমাবেশ খুব একটা হয়নি মিয়ানমারে। চীনের অসন্তোষকে আমলে নিয়ে জান্তা সরকার এ চীন বিরোধী প্রতিবাদ নিয়ন্ত্রণ করেছে। আরও পড়ুন: মিয়ানমারে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হামলায় শতাধিক জান্তা সেনা নিহত চীনও সেই সময় জান্তা সরকারকে আশ্বস্ত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। বার্মিজ জাহাজের সঙ্গে যৌথ তারা নৌ মহড়া করেছে। ডিসেম্বরের শুরুতে চীনের কূটনীতিক ওয়াং য়ি মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী থান সোয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৪ ডিসেম্বর দেশটি ঘোষণা করে, মিয়ানমার সরকারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে জাতিগত মিলিশিয়া গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে একটা সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যস্থতা করেছে বেইজিং। যদিও ভারত ও রাশিয়া জান্তা সরকারের সঙ্গে ব্যব সা করছে। চীনেরও মিয়ানমারের সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক সংযোগ আছে। চলমান সংঘাত থাকার পরও মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত রেলওয়ে, পাইপলাইন, বন্দর করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে চীন। এই উচ্চভিলাষি প্রকল্পে ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেছে চীন। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত একটি সংযোগ সড়ক তৈরির প্রকল্পে মাত্র ৫০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার কথা ভাবছে ভারত। এটা ঠিক যে, চীনের এই দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পরিকল্পনা ও দেশটির গণতন্ত্রপন্থিদের প্রতি বিদ্বেষ থেকে জান্তা সরকারের ঘনিষ্ঠ হতে পেরেছে চীন। কিন্তু চীনের নিরাপত্তা ইস্যু আরও কৌশলগত হতে পারে। মিয়ানমার ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা অর্জন করেছে কিন্তু মিয়ানমার-চীন সীমান্তে যে জঙ্গল রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির সরকার। এ কারণে দুই দেশের সীমান্তবর্তী ২ হাজার কিলোমিটার এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে বরাবরই চীন উদ্বিগ্ন ছিল। এবং এই বিষয়টি তাদের অবকাঠামোগত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকটাই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর মধ্য দিয়ে শরণার্থী ও মাদক চোরাচালানকারীর দৌরাত্ম্য বাড়ে সীমান্তে। মিয়ানমারের এ অপরাধ চক্রের সঙ্গে চীনা নাগরিকদের জড়িত থাকার বিষয়টি, সেটা অপরাধের শিকার হোক বা তারা নিজে অপরাধী হোক বিষয়টি চীনের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়েছে। মে মাসে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং মিয়ানমারে গিয়েছিলেন জান্তা সরকারের পতনের দাবিতে। অনলাইন স্ক্যাম ইস্যুতে। সে সময় কয়েক হাজার চীনা নাগরিককে মিয়ানমারে পাচার করা হয়। একটা বড় অংশকে বন্দি করা হয়। এবং জোর করে অনলাইন প্রতারণার সঙ্গে মানুষকে যুক্ত করা হয়। যারা তা করতে অস্বীকার করে তাদের হয় নির্যাতন করা হয় নয়ত মেরে ফেলা হয়। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই অপরাধচক্র ঠেকাতে বা তাদের নির্মূল করতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আরও পড়ুন: মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের দখলে শতাধিক সামরিক ঘাঁটি, কোণঠাসা জান্তা এখন চীন আবার জান্তা সরকারের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে যারা এখনও রাজধানী নেপিডোসহ তাদের বেশিরভাগ বিমানবন্দর, ব্যাংক, বড় বড় শহরগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও চীন ও রাশিয়া থেকে ফাইটার বিমান কিনেছে মিয়ারমার। যা তাদেরকে বেসামরিক মানুষদের ওপর নির্বিচার বোমা হামলা চালাতে সক্ষম করেছে। চীনও মিয়ানমার সরকারকে কোন না কোনভাবে তা ফেরত দেবে। হয়ত এর বিনিময়ে মিয়নমার থেকেওে কিছু না কিছু কিনবে বেইজিং। আবার কখনও কখনও তারা মিয়ানমারের শক্রদের সমর্থন দেবে। ‘ভাগ কর ও শাসন কর’ এই নীতি মিয়ানমারের এই বিপর্যয়ের জন্য ততটা দায়ি নয়, তার চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর হবে মিয়ানমারের জন্য।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply