যুদ্ধ পরিস্থিতি হলে পাশে থাকব, চীনের আশ্বাস পাকিস্তানকে
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকেই সমর্থন জোগাবে চীন। শনিবার সরকারিভাবে বেজিংয়ের এই আশ্বাসবার্তা পৌঁছাল ইসলামাবাদে। উরির সেনাঘাঁটিতে জঙ্গিহামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছে, তাতে চীনের এই মন্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। এনএসজি’তে পাকিস্তানের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে সওয়াল করে ইতিমধ্যে চীন পাকিস্তানের অভিভাবক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। সেই ‘স্নেহ’ থেকেই চীনের এহেন অবস্থান। শনিবার পাঞ্জাব প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের অফিস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে লাহোরে চীনের কনসাল জেনারেল ইউ বোরেন বলেছেন, ‘যে কোনও রকম বিদেশি আগ্রাসনের ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে সবরকম সহায়তা দেবে চীন।’
উরিতে জঙ্গি হামলার তিনদিন পর রাষ্ট্রসংঘের আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সেনার গুলিতে নিহত জঙ্গি বুরহান ওয়ানিকে শহিদের মর্যাদা দিয়ে নায়ক বানাতে চেয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। জানিয়েছিলেন, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরি হওয়া অসম্ভব। আর রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সম্মেলন সেরে ফেরার পথে শুক্রবার লন্ডনে দাঁড়িয়ে ফের কাশ্মীর ইস্যুকেই কাঠগড়ায় তুললেন উরির হামলার জন্য। আসলে জঙ্গিলালনে প্রত্যক্ষ মদত দেওয়া পাকিস্তান পিঠ বাঁচাতে কাশ্মীরকেই ঢাল করতে চাইছে।
লন্ডনে কী বলেছেন শরিফ? তাঁর দাবি, ‘গত দু’মাস ধরে কাশ্মীরে যে অবস্থা চলছে, তাতে ওখানকার বাসিন্দারা রীতিমতো ক্রুদ্ধ। কেউ স্বজন হারিয়েছেন, কেউ বা অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। হতে পারে উরির হামলা তাঁদেরই রাগের বহিঃপ্রকাশ। কারণ, সবাই জানে কাশ্মীরে কী প্রকার দমনপীড়ন চালাচ্ছে ভারত। ১১৮ জন মারা গিয়েছেন।’ শরিফের দাবি যদি সত্যি বলে ধরেও নেওয়া হয়, তবে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, কাশ্মীরের বাসিন্দারা পাকিস্তানি ছাপ লাগানো আগ্নেয়াস্ত্র পান কী করে? তাহলে ঘুরেফিরে সেই একটা জিনিসই প্রমাণ হচ্ছে। হয় উরির হামলায় পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ হাত রয়েছে, নতুবা কাশ্মীরকে অগ্নিগর্ভ করে তোলার পিছনে পাকিস্তান মদত দিচ্ছে। শুরু হয়েছে বিতর্ক।
যদিও এইসব ‘মত’কে পাত্তা দিতে চাননি শরিফ। তাঁর মন্তব্য, ‘ভারত ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়ে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এভাবে কোনওরকম প্রমাণ ছাড়া জঙ্গি হামলার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে দায়ী করা যায়!’ সঙ্গে সংযোজন করেছেন, ‘উরির সেনাঘাঁটিতে হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকে আঙুল তোলার আগে ভারতের ভাবা উচিত কাশ্মীরে তারা কী করছে!’ নওয়াজের দাবি সমর্থন করে চীনও জানিয়েছে, কাশ্মীরে নিরস্ত্রদের উপর যে অত্যাচার-অন্যায় হচ্ছে, তার কোনও যৌক্তিকতা নেই।
এবার কি তবে আমেরিকার প্রকাশ্যে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর পালা?
No comments: