Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ।।। সিস্টিক ফাইব্রোসিস একটি বংশগত রোগ যা প্রধানত শ্বসন ও পরিপাকতন্ত্রকে আক্রমণ করে





 নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক সংক্রমনের কারণে নিউমোনিয়া হয়।

নিউমোনিয়া হলো ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক সংক্রমনের কারণে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়া মৃদু বা হাল্কা থেকে জীবন হানিকরও হতে পারে। নিউমোনিয়ার ফলে ফ্লু এর সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে।





নিউমোনিয়া হয়েছে কি করে বুঝবেন

নিউমোনিয়ার উপসর্গগুলো ভিন্ন হয়ে থাকে। এটা নির্ভর করে শারীরিক অবস্থা কি ধরনের জীবাণু  নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ঘটিয়েছে তার উপর।



নিউমোনিয়া হলে সাধারণত: যেসব  লক্ষণ ও উপসর্গগুলো দেখা দেয়:

    জ্বর
    কাশি
    শ্বাস কষ্ট
    ঘাম হওয়া
    কাঁপুনি
    বুকে ব্যাথা যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে উঠা নামা করে
    মাথা ব্যথা
    মাংসপেশীতে ব্যাথা
    ক্লান্তি অনুভব করা



কখন ডাক্তার দেখাবেন

    অস্বাভাবিক জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ঘাম, বুকে ব্যথা হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
    এছাড়া

    যারা বৃদ্ধ এবং শিশু
    যারা ধূমপান করেন
    যারা ফুসফুসে কোন আঘাত পেয়েছেন
    যাদের কেমোথেরাপি (ক্যান্সারের চিকিৎসা) অথবা অন্য কোন ঔষধ খাওয়ার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে



তাদের যদি উপরোক্ত লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে তাদেরকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তা না হলে নিউমোনিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে



চিকিৎসার জন্য কোথায় যোগাযোগ করতে হবে

    ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
    উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
    জেলা হাসপাতাল
    মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
    বেসরকারী হাসপাতাল

কি ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে

    শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা
    বুকের এক্স-রে
    রক্ত এবং কফ/শ্লেষ্মা (Mucus)  পরীক্ষা

কখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে

মারাত্মক নিউমোনিয়া হয়ে থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে শিরাপথে এ্যান্টিবায়োটিক এবং অক্সিজেন দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অক্সিজেনের প্রয়োজন না হলে বাড়িতে থেকেও মুখে এ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যেতে পারে তবে এক্ষেত্রে বাড়িতে ভালোভাবে রোগীর প্রতি যত্ন নিতে হবে।

কি ধরনের চিকিৎসা আছে

    এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন
    ভাইরাস প্রতিরোধী ঔষধ সেবন
    পর্যাপ্ত পরিমান বিশ্রাম
    তরল খাদ্য গ্রহণ
    জ্বর এবং ব্যথা কমানোর জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পাশাপাশি নিয়মিত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিশ্রাম,পথ্য ও বাড়তি সতর্কতা

    প্রচুর বিশ্রাম গ্রহণ করতে হবে
    প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার গ্রহণ এবং পানি পান করতে হবে
    ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিকমত ঔষধ সেবন করতে হবে
    ডাক্তারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে হবে



নিউমোনিয়া কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়

    ভালোভাবে পরিস্কার করে হাত ধুতে হবে
    নিজের প্রতি যত্ন নিতে হবে
    পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে
    সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে
    ধূমপান করা যাবে না
    অন্যের সামনে হাঁচি/কাশি দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। হাঁচি/কাশি দেয়ার সময় মুখ হাত দিয়ে ঢাকতে হবে বা রুমাল ব্যবহার করতে হবে



কিছু কমন জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন .১. নিউমোনিয়া কেন হয় ?

উত্তর. ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দ্বারা ফুসফুসে সংক্রমণের মাধ্যমে নিউমোনিয়া হয়ে থাকে।

প্রশ্ন.২. নিউমোনিয়া কয় ধরনের হয়ে থাকে?

উত্তর. নিউমোনিয়ার কারণের উপর ভিত্তি করে নিউমোনিয়াকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়।

    পারস্পরিক সংস্পর্শ থেকে (Community-acquired Pneumonia) হওয়া নিউমোনিয়া
    হাসপাতাল থেকে হওয়া নিউমোনিয়া (Hospital-acquired Pneumonia)
    এ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া(Aspiration Pneumonia)
    সুযোগ সন্ধানী জীবানু দিয়ে হওয়া নিউমোনিয়া (Pneumonia Caused by Opportunistic Organisms)
    অন্যান্য জীবাণু দ্বারা ঘটিত হওয়া নিউমোনিয়া (Other Pathogens)

প্রশ্ন. ৩. কাদের নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে ?

উত্তর. যাদের নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তারা হলেন

    ছোট্ট শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা
    বহুদিন ধরে ভুগছে এমন কোন রোগ থাকলে যেমন : বহুমূত্র (Diabetes), হৃদরোগ,  ফুসফুসের অন্য কোন রোগ ,এইডস ইত্যাদি থাকলে
    যাদের অন্য কোন কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে  যেমন-ক্যান্সারের চিকিৎসা নিলে,স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবন করলে
    যারা ধূমপান করেন

প্রশ্ন .৩. নিউমোনিয়া হলে কি ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে?

উত্তর. নিউমোনিয়ার ফলে নিচের জটিলতাগুলো দেখা দিতে পারে:

    রক্তপ্রবাহে (Blood Stream) জীবাণুর সংক্রমণ
    ফুসফুসের চারপাশে তরল জমা এবং সংক্রমণ (Fluid accumulation and indection around lungs)
    ল্যাং এ্যাবসেস  (Long Abscess)
    তীব্র শ্বাসকষ্ট বা একিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনেড্রাম (Acute respiratory distress syndrome)






সিস্টিক ফাইব্রোসিস





সিস্টিক ফাইব্রোসিস একটি বংশগত রোগ যা প্রধানত শ্বসন ও পরিপাকতন্ত্রকে আক্রমণ করে। এটি একটি মারাত্মক জীবনঘাতী রোগ। যখন কোন দম্পতি উভয়েই সিস্টিক ফাইব্রোসিসের একটি করে জিন বহন করেন তখন তাদের সন্তানের মাঝে এই রোগ প্রকাশ পায়। সাধারনত বাবা-মার মাঝে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ইউরোপ, আমেরিকার শেতাঙ্গদের মাঝে  এর প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি। প্রধানত ফুসফুস, অগ্নাশয়, যকৃত, অন্ননালী, জননতন্ত্র এ রোগে আক্রান্ত হয়।


কীভাবে হয়?




 মিউকাস বা শ্লেষ্মা একধরনের পিচ্ছিল তরল যা আমাদের দেহে উৎপন্ন হয়। শ্লেষ্মা আমাদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গের নালীসমূহকে রাখে আর্দ্র এবং নানা জীবাণু থেকে মুক্ত।



সিস্টিক ফাইব্রোসিসে আক্রান্ত রোগীদের দেহে এই শ্লেষ্মা আরও অধিক ঘন হয়। এই বেশি ঘন শ্লেষ্মা তাদের শ্বাসনালীতে আটকে গিয়ে নালীকে জ্যাম করে রাখে, ফলে রোগ-জীবাণু বাসা বাধে এবং শুরু হয় শ্বাসতন্ত্রের মারাত্নক সংক্রমণ।




সিস্টিক ফাইব্রোসিসে মৃত্যুর মূল কারন বারবার শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশন হওয়া। একসময় ফুফফুস তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে রোগীকে নিয়ে যায় মৃত্যুর দিকে।

আমাদের অগ্নাশয়ের পাচকরসের রাস্তা বন্ধ করে সিস্টিক ফাইব্রোসিস দেহের বিপাকে বেশ ভালো বিঘ্ন ঘটায়। পাচক রসের অভাবে খাদ্য ঠিকমতো হজম হয় না আর তৈরি করে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস ও প্রচুর মল।

আক্রান্ত পুরুষদের সন্তান দানে অক্ষমতা এই অসুখের আরেকটি ক্ষতিকর প্রভাব। মহিলাদের ক্ষেত্রেও গর্ভধারণে সমস্যা দেখা যায়।






রোগের লক্ষণসমূহ



জন্মের ২-৩ বছরের মধ্যেই সিস্টিক ফাইব্রোসিসের লক্ষনসমূহ প্রকাশ পেতে শুরু করে। অনেকের বেলায় আরও দেরিতে প্রকাশ পায়।


নবজাতকের ক্ষেত্রেঃ



    দেহের আকার ও ওজন কম হওয়া
    জন্মের ২-৩ দিনের মাঝে মল ত্যাগ না করা
    পেট ফুলে যাওয়া ও অতিরিক্ত কান্নাকাটি করা
    ঘামে লবণের পরিমাণ বেশি থাকা




শিশু-কিশোরদের মধ্যে আরও দেখা যায়ঃ


শ্বসনতন্ত্রঃ



    কাশি ও শ্বাসকষ্ট যা ক্রমাগত বাড়তে থাকে
    ঘন কফ বা শ্লেষ্মা
    কাশির সাথে রক্ত যাওয়া
    নাক বন্ধ থাকা
    জ্বর
    বুকে ব্যথা
    বারবার নিউমোনিয়া হওয়া




পরিপাকতন্ত্রঃ



    বয়স অনুযায়ী বৃদ্ধি না হওয়া
    দুর্গন্ধময় ও পরিমানে বেশি মলত্যাগ করা
    কোষ্ঠকাঠিন্য
    অতিরিক্ত গ্যাস উৎপাদন(flatulence)
    স্ফীত উদর




পরবর্তীতে আরও হতে পারেঃ



    অগ্নাশয়ে প্রদাহ(Pancreatitis)
    প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলা(infertility)
    শ্বসনতন্ত্রের তীব্র প্রদাহ বা ইনফেকশন
    লিভার সিরোসিস
    গলব্লাডারে পাথর
    আর্থ্রাইটিস ও অস্থি ক্ষয়
    ডায়াবেটিস

[Xray of chest in cystic fibrosis]

Xray of chest in cystic fibrosis


চিকিৎসাঃ



    সিস্টিক ফাইব্রোসিসের ক্ষেত্রে যত দ্রুত রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করা হবে ততই রোগীর আয়ু বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
    শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের জন্য মূল চিকিৎসা এন্টিবায়োটিক থেরাপি।
    পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ
    প্রচুর পানি পান
    ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ
    সপ্তাহে ২-৩ দিন হাল্কা ব্যায়াম
    কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য ইসবগুলের ভুসি ব্যবহার
    প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে খাবারে লবণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা ও অগ্নাশয়ের এনজাইম গ্রহণ করা।







উন্নত বিশ্বে আধুনিক চিকিৎসার সহায়তায় এখন এই রোগে আক্রান্তরা গড়ে ৩৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সকল সুবিধা না থাকায় গড় আয়ু আরও কম হয়।



যেহেতু সিস্টিক ফাইব্রোসিস এমন একটি অসুখ যা আমরা এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিরাময় করতে পারিনি তাই এর সাথে যুদ্ধ করে কিভাবে ভালো থাকা যায় সেটাই এই রোগের চিকিৎসার মূলমন্ত্র। আক্রান্ত ব্যক্তি ও তার পরিবার পরিজনের এ বিষয়ে সচেতনতা ও রোগীর নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন দিতে পারে তাকে এই সুন্দর পৃথিবীতে অধিক সময় বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা।







ডা. রায়হান কবীর খান






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply