Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » ব্রেইন স্ট্রোক মস্তিষ্কের রক্তনালির দুর্ঘটনাকেই স্ট্রোক ৮টি ফিচার এ টিপস এর কিছু কথা





ব্রেইন স্ট্রোক  মস্তিষ্কের রক্তনালির দুর্ঘটনাকেই স্ট্রোক  ৮টি ফিচার এ টিপস এর  কিছু কথা

স্ট্রোক কিঃ

স্ট্রোক বলতে অনেকেই ভাবেন হার্ট অ্যাটাককে। আসলে তা নয়। স্ট্রোক মানে ব্রেইন স্ট্রোক। এটা মস্তিস্কের একটা মারাত্নক সমস্যা। মস্তিষ্কের রক্তনালির দুর্ঘটনাকেই স্ট্রোক বলা যায়। এ দুর্ঘটনায় রক্তনালি বন্ধও হতে পারে, আবার ফেটেও যেতে পারে।



স্ট্রোক কাদের হয়ঃ



একসময় সাধারনত বৃদ্ধ থেকে মধ্যবস্ক ব্যক্তিদের মাঝে এটি বেশি দেখা যেত কিন্তু বর্তমানে অল্প বয়সেও স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঘটনা ঘটছে।

নারী থেকে পুরুষদের মাঝেই কিছুটা বেশি দেখা যায়।



স্ট্রোক কয় প্রকারঃ



স্ট্রোক

ছবির বাম পাশে ইস্কেমিক স্ট্রোক(অধিক কালো অংশ) দেখা যাচ্ছে
স্ট্রোক



স্ট্রোক মূলত দুই প্রকার- ইস্কেমিক স্ট্রোক এবং হেমোরেজিক স্ট্রোক।



ইস্কেমিক স্ট্রোকে আঞ্চলিকভাবে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মস্তিস্কের ওই অঞ্চলটি রক্ত পায়না এবং মারা যায়।

হেমরেজিক স্ট্রোকে রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়ে এবং মস্তিস্কের উপরে চাপ সৃষ্টি করে। এতে মস্তিস্ক তার স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।



স্ট্রোকের কারণঃ



উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোকের সবচেয়ে বড় কারণ।অন্যান্য কারণের মধ্যে

    বেশি কোলেস্টেরল
    ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ
    ধুমপান
    স্থূলতা
    মদ্যপান
    পরিবারে অন্য কারো স্ট্রোকের ইতিহাস
    হৃদরোগ  ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য



স্ট্রোকের লক্ষণসমুহঃ



    মাথা ঘুরানো, হাটতে অসুবিধা হওয়া, ভারসাম্য রক্ষায় অসুবিধা হওয়া
    কথা বলতে সমস্যা হওয়া
    অবশ, দুর্বলতা লাগা, শরীরের এক পাশ অকেজো হওয়া, অনেকসময় চার হাত-পাই অবশ হয়ে যাওয়া
    চোখে ঘোলা লাগা, অন্ধকার লাগা বা ডাবল দেখা
    হঠাৎ খুব মাথা ব্যথা করা
    বমি করা



স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায়ঃ



স্বাস্থ্যসম্মত জীবনব্যবস্থা বজায় রাখলে অনেক খানি ঝুকি কমানো যায় :

    ব্লাড প্রেসার জানা এবং কন্ট্রোল করা
    ধুমপান না করা
    কোলেসটেরল এবং চর্বি জাতীয় খাবার না খাওয়া
    নিয়ম মাফিক খাবার খাওয়া
    সতর্ক ভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
    নিয়ম করে হাটা বা হালকা দৌড়ানো
    দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা
    মাদক না নেয়া , মদ্য পান না করা



স্ট্রোক হলে সাথে সাথে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। একজন বিশেষজ্ঞ স্নায়ুবিদের তত্ত্বাবধানে থেকে রগির চিকিৎসা করাতে হবে। স্ট্রোক সাধারনত পুরোপুরি ভালো হয় না। রোগীকে সবসময় যত্নের মাঝে রাখতে হয়। ফিজিওথেরাপি করানোর প্রয়োজন হতে পারে।



পরিশেষে এটা বলা যায় স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই সবচেয়ে বড় চিকিৎসা। নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই পারে স্ট্রোক থেকে অনেকাংশে মুক্ত রাখতে।
 
 
মাথাব্যথা মানেই কি মাইগ্রেন?

মাথা থাকলে মাথাব্যথা হবেই, স্বতঃসিদ্ধ এই কথা আমরা যুগ যুগ ধরে শুনে আসছি। আমাদের সবারই কম বেশি মাথাব্যথা হয়।

অনেকের বেশি দুশ্চিন্তা করলে মাথাব্যথা শুরু হয় আবার কিছুক্ষণ পর এমনিই ভাল হয়ে যায়। এই ধরনের মাথাব্যথাই সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের দীর্ঘদিন ধরে সময়ে অসময়ে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। আমার দেখা মতে বেশিরভাগ মানুষই তাদের এই ব্যথা কে মাইগ্রেন হিসেবে অবহিত করে থাকেন। মাইগ্রেন অবশ্যই দীর্ঘদিন মাথাব্যথার একটি বড় কারণ।তবে অন্য অনেক কারণও রয়েছে যা বেশিরভাগ সময়ই ঠিক ভাবে খেয়াল করা হয় না।

এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে কারণটি দৃষ্টি এড়িয়ে যায় তা হল সারভাইকোজেনিক হেডেক। এই ধরনের মাথাব্যথার উৎস হল ঘাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া নার্ভ। সাধারণত ঘাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া ৮ টি নার্ভের মধ্যে প্রথম ৩ টি তে যদি কোন রকম চাপের সৃষ্টি হয়, তাহলে সৃষ্ট ব্যথা মাথার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ধরনের ব্যথার ক্ষেত্রে ঘাড়ে ও ব্যথা থাকতে পারে। সেই সাথে ঘাড় বিভিন্ন দিকে নাড়ালে মাথা ব্যথার তারতম্য ও ঘটতে পারে।

এখন আমরা আলোচনা করব কেন ঘাড়ের নার্ভে অনেক সময় চাপের সৃষ্টি হয়। আমাদের মেরুদণ্ডের মাঝখান দিয়ে মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত স্নায়ু রজ্জু বা স্পাইনাল কর্ড নেমে আসে। এই স্পাইনাল কর্ড মস্তিস্ক থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা বিভিন্ন শাখা নার্ভের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে পরিবহন করে, আবার শরীরের বিভিন্ন তথ্য ও অসুবিধার কথা মস্তিস্কে পৌঁছে দেয়। স্পাইনাল কর্ড থেকে তৈরি হওয়া এই শাখা নার্ভ গুলোকেই বলা হয় স্পাইনাল নার্ভ। ঘাড় থেকে এই স্পাইনাল নার্ভ যখন বের হয়, তা মেরুদণ্ডের বিভিন্ন জটিল কাঠামো ভেদ করে বাইরে বের হয়ে আসে।

এই বের হয়ে আসার সময় মেরুদণ্ডের বিভিন্ন অংশের (যেমন ডিস্ক, লিগামেন্ট, মাসেল) সাথে চাপের জন্য ব্যথার উৎপত্তি হয়। এখন ঘাড় থেকে উৎপত্তি হওয়া ৮ টি নার্ভের মধ্যে প্রথম ৩ টি তে যদি এই ধরনের চাপের সৃষ্টি হয় আর এই ৩ টি নার্ভ যেহেতু মাথার দিকে যায়, তাই এগুলোতে সৃষ্ট সমস্যার জন্য আমরা মাথায় ব্যথা অনুভব করি।

কেন এই নার্ভগুলোতে চাপের সৃষ্টি হতে পারে? অনেক সময়ই নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে অনেক ক্ষেত্রেই বাস, রিকশায় ঝাঁকুনির ফলে ঘাড়ের ডিস্ক সামান্য সরে গিয়ে নার্ভে চাপ দিয়ে থাকে। আবার বয়সের জন্যও অনেকের মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয়ে গিয়ে, অথবা অবাঞ্ছিত ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে নার্ভে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

অনেকের কাজের ধরণই এমন যে তাদের দীর্ঘ সময় নিচের দিকে তাকিয়ে কাজ করতে হয়, যেমন দীর্ঘ সময় কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ব্যাবহার, ডেস্ক জব ইত্যাদি। এই ধরনের পেশাজীবীদের সারভাইকোজেনিক হেডেক বেশি হয়ে থাকে সচেতনতার অভাবে।

তাই, আপনার যদি দীর্ঘদিন মাথাব্যথা সেই সাথে ঘাড়ে ব্যথা থাকে এবং অনেক সময় ঘাড়ের নড়াচড়ার সাথে ব্যথার তারতম্য ঘটে, তাহলে প্রাথমিক ভাবে ধরে নেয়া যায় যে আপনার সারভাইকোজেনিক হেডেক রয়েছে। তবে এটা নির্ণয় করার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

চিকিৎসা

অনেক সময় সাধারণ মাসেল রিলাকজেন্ট, এনালজেসিক (ব্যথা নাশক) খেলেই ধীরে ধীরে সেরে যেতে পারে। তবে নার্ভের ওপর চাপ যদি ডিস্ক বা লিগামেন্টের জন্য হয়ে থাকে, তাহলে সেই চাপ সরানোর জন্য আপনাকে কিছু বিশেষ ধরনের ফিজিওথেরাপি (ডিস্ক ম্যানিপুলেশন, মবিলাইজেসন, লেজার থেরাপি), থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ইত্যাদির প্রয়োজন হতে পারে। যদি আপনার সমস্যার কারণ এই ধরনের কনজারভেটিভ ট্রিটমেন্ট এ না যায়, তাহলে সার্জারি করে সেই চাপ সরানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

আশা করি ঘাড়ে ব্যথা সহ দীর্ঘদিনের মাথাব্যথাকে মাইগ্রেন ধরে নিয়ে হতাশায় ভুগবেন না। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে সারভাইকোজেনিক হেডেক পুরোপুরি ভাল হয়।




পারকিনসনিজম (Parkinsonism)

মস্তিস্কের এই রোগটি সম্পর্কে সর্ব প্রথম ধারনা দেন জেমস পারকিনসন, আর তার নাম অনুসারেই এই নাম। সারাক্ষন হাত পা কাপা, শরীরের মাংসপেশী অস্বাভাবিক শক্ত হয়ে থাকা, স্পর্শকাতরতা কমে যাওয়া এই উপসর্গ গুলো সম্পর্কে জেমস পারকিন্সনই সর্বপ্রথম ধারনা দেন।

বিভিন্ন অষুধ বা বিষাক্ত পদার্থের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মস্তিস্কের প্রদাহ, ক্রমাগত মাথায় আঘাত পাওয়া (যেটা Boxer দের হয়ে থাকে), নিউরোসিফিলিস, উইলসন ডিজিজ, হানটিংটন ডিজিজ ইত্যাদি রোগের কারনে পারকিনসন ডিজিজ হতে পারে।

এ রোগ সাধারনত ৫০ বছরের বেশী বয়সের লোকদের হয়ে থাকে। ভাবলেশহীন মুখ-অবয়ব, মুখদিয়ে লালা পরা, হাটা বা চলাচল শুরু করতে দেরী হওয়া, ছোটো পদক্ষেপে দ্রুত লয়ে হাটা, হাটার সময় হাত না নড়া, হাটতে হাটতে ঘুরতে গেলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা, সবসময় হাত-পা কাপা, মাংসপেশী শক্ত হয়ে যাওয়, সুক্ষ কাজ করার ক্ষমতা হারানো ইত্যাদি নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত থাকে পারকিনসন রোগীর জীবন।

সিটিস্ক্যান সহ রক্তের আরো কিছু পরীক্ষা করা হয় ঠিক কি কারনে রোগটি হয়েছ তা নির্ণয় করার জন্য। নিউরোলজিস্টের তত্ত্বাবধানে এই রোগের চিকিৎসা করাতে হয়। যদিও অল্প কিছু অসুধ এই রোগে ব্যবহার করা হয়; ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি ইত্যাদির মাধ্যমে পূনর্বাসন করাই হলো চিকিতৎসার মূল লক্ষ্য।



মৃগী বা এপিলেপ্সি (Epilepsy)

অনেকে একে খীচুনি রোগ হিসেবেও চিনে থাকে। মৃগী বা এপিলেপ্সি রোগ হলে হঠাৎ করে ঘন ঘন খীচুনি হয়। আমরা এবং আমাদের সমস্ত অংগ প্রতংগ মস্তিস্কের নির্দেশ অনুযায়ী চলি, আমাদের অজান্তেই মস্তিস্ক ক্রমাগতভাবে এই নির্দেশ পাঠাতে থাকে। কোনো কারণে মস্তিস্ক ঠিক মতো নির্দেশ না পাঠিয়ে যদি পরিবর্তিত, মাত্রাতিরিক্ত বা শৃংখলা বিহীন ভাবে নির্দেশ পাঠাতে থাকে তখন এই রোগটি দেখা দেয়।

শিশু ভূমিষ্ঠ হবার সময় যদি মাথায় আঘাত পায়, তীব্র শ্বাস কষ্ট বা ইনফেকশন হয় তাহলে সেসব ক্ষেত্রে এপিলেপ্সি রোগের সূত্রপাত হতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে মাথায় আঘাত পাওয়া, অসুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এলকোহল অথবা মস্তিস্কের রক্তনালীর কিছু রোগের (Aneurysm) কারনে এপিলেপ্সি রোগ হতে পারে। তবে অনেক সময়ই এ রোগের সঠিক কারন জানা যায়না। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী এ রোগের চিকিৎসা করানো উচিত।
   
স্ট্রোক (Stroke)


স্ট্রোক (Stroke) রোগটির নাম শুনলে যদিও হার্ট এটাক এর কথা মনে আসে, স্ট্রোক আসলে মস্তিস্কের রোগ। মস্তিস্কের কোনো স্থানের রক্ত নালী বন্ধ হয়ে গেলে বা ব্লক হলে ঐ স্থানের রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মস্তিস্কের ঐ বিশেষ এলাকা কাজ করতে পারেনা। এটিই স্ট্রোক রোগ। মস্তিস্কের ঐ বিশেষ এলাকাটি শরীরের যে যে অংশকে নিয়ন্ত্রন করতো স্ট্রোক হলে সে সকল অংশের বিভিন্ন অংগ বিকল হয়ে পরে। মস্তিস্কের এক দিক নস্ট হলে শরীরের উল্টো দিক বিকল হয়ে পরে। অর্থাৎ মস্তিস্কের বাম দিকে ক্ষতি হলে শরীরের ডান দিক অচল/অবশ হয়ে যায়।

স্ট্রোক হবার পর এরকম শরীরের এক দিক অচল হবার নাম হেমিপ্লেজিয়া (hemiplegia) আর অবশ হলে বলে হেমিপেরেসিস (hemiparesis)। স্ট্রোক হলেই যে শরীরের কোনো পাশ চিরতরে অচল হয়ে যাবে তা কিন্ত নয়। কিছু ধরনের স্ট্রোক হলে সাময়িক কিছু অসুবিধার পরে মানুষ আবার পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে যায়।

হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্ত চাপ, ধুমপান করা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, অতিরিক্ত এলকোহল সেবন ইত্যাদি স্ট্রোকের ঝুকি বহুগুনে বাড়িয়ে থাকে। আগেই বলা হয়েছে যে স্ট্রোক হয় মস্তিস্কের রক্ত নালী বন্ধ হবার কারণে তাই বোঝাই যায় যে যে কারণে রক্তনালী বন্ধ হয় সেই সেই কারণে স্ট্রোক হয়, যেমন ধমণীতে চর্বি বা ক্যালসিয়াম জমা, টিউমার হওয়া, ধমণীর প্রদাহ জনিত রোগ ইত্যাদি। এছাড়াও হার্ট বা অন্য ধমণী থেকে জমাট রক্ত ছুটে গিয়ে বা মাথায় আঘাত পাবার কারনেও স্ট্রোক হতে পারে।

স্ট্রোক হলে মাথা ব্যাথা, বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া তো হয়ই সেই সাথে কোনো একপাশের হাত-পা অবশ পা অচল হয়ে যাওয়া, বোধহীন হয়ে যাওয়া, বাকরুদ্ধ হওয়া, কথা জড়িয়ে আসা, জ্ঞান হারানো ইত্যাদি উপসর্গ গুলোও দেখা দেয়। বড় ধরনের স্ট্রোক হলে চার হাত-পা ই অবশ বা অচল হয়ে যেতে পারে।

স্ট্রোক এর রোগীকে মস্তিস্কের সিটি স্ক্যান (CT scan) পরীক্ষাটি করতেই হয়, এটি দ্বারা ঠিক কোথায় ক্ষতি হয়েছে বোঝা যায়, মস্তিস্কের এঞ্জিওগ্রাম (Angiogram) করেও এটা বোঝা লাগতে পারে। অনেক সময় কারন বের করতে ইকোকার্ডিওগ্রাম (Echocardiogram) ও করা লাগে, সেই সাথে যেসকল রোগ স্ট্রোক এর ঝুকি বাড়ায় রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করে সে সকল রোগের উপস্থিতি ও অবস্থাও জেনে নিতে হয়।

স্ট্রোক রোগীর চিকিৎসা অবশ্যই একজন নিউরোলজিস্ট (Neurologist) বা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে করানো উচিত। এই রোগের সুনির্দিস্ট এমন কোনো চিকিৎসা নেই যাতে রোগী সাথে সাথে চিরতরে ভালো হয়ে যাবে। ধৈর্য্য ধরে রোগীর সেবা করতে হবে, সঠিক পুষ্টি ও তরল সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, ঝুকি আছে এমন রোগ গুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এর পর সবচেয়ে বেশী যেটা প্রয়োজন তা হলো ফিজিওথেরাপি (Physiotherapy) । তবে স্ট্রোক এর অবস্থা বুঝে এর সাথে আরো অন্য চিকিৎসাও যোগ করতে হতে পারে যা অবশ্যই একজন নিউরোলজিস্ট বিবেচনা করবেন।
 


শিশুর অটিজম: কী করবেন


সাইফুল আর শাহানার একমাত্র ছেলে দীপ্ত (কল্পিত নাম)। বয়স প্রায় তিন। মা -বাবা হঠাৎ খেয়াল করলেন, তাঁদের ছেলেটির নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় না। এমনকি মা-বাবা বা অন্য কারও চোখে চোখ রেখে তাকায় না। সমবয়সীদের সঙ্গে মেশে না। কোলে চড়া বা আদর করাও পছন্দ করে না। দীপ্তর বয়সী অন্য শিশুরা যেসব শব্দ উচ্চারণ করতে পারে, দীপ্ত তাও পারে না। খেলনার প্রতি তার কোনো আগ্রহ নেই। হঠাৎ হঠাৎ সে খেপে ওঠে, রাগ করে—তবে সে রুটিন মেনে চলতে খুবই পছন্দ করে। প্রতি রাতে সে চায় একই নিয়মে, একই জামা পরে ঘুমাতে। প্রথম দিকে সাইফুল আর শাহানা বিষয়টিকে আমলে নিলেন না। কিন্তু একপর্যায়ে অফিসের একজন সহকর্মীর পরামর্শে শিশুটিকে নিয়ে গেলেন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক জানালেন, দীপ্ত এমন একজন শিশু, যার অটিজম আছে। পত্রপত্রিকা আর ইন্টারনেটের কল্যাণে সাইফুল আর শাহানা মোটামুটি জানেন অটিজম কী আর এর জন্য কোথায়, কীভাবে সাহায্য পেতে হবে।
কিন্তু সাইফুল আর শাহানার মতো অটিজমে আক্রান্ত সব শিশুর মা-বাবা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। তাঁরা জানেন না যে শিশুর অটিজম আছে, তার জন্য দরকার বিশেষায়িত স্কুল। এসব শিশুর মা-বাবা বেশির ভাগই পর্যায়ক্রমে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এমনকি ঝাড়ফুঁকের আশ্রয়ও নিয়ে থাকেন শিশুর মঙ্গলের জন্য। তার ওপর অটিজম নিয়ে নানা বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা তো রয়েছেই। কী করতে পারেন এমন একজন শিশুর অভিভাবক। কেবল চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া বা বিশেষায়িত স্কুলে ভর্তি করেই শেষ নয়, করার আছে অনেক কিছু—

কোনো বিভ্রান্তি নয়: ‘অটিজম নিয়ে কোনো বিভ্রান্তিতে থাকা উচিত নয়। যদি কেউ মনে করে থাকেন যে কোনো শিশুর মধ্যে অটিজমের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে দেখতে হবে যে সত্যিই তার অটিজম আছে কি না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজ, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের সব রোগের পূর্ণাঙ্গ তালিকাগ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত, সেখানে সুস্পষ্টভাবে শিশুর অটিজমকে একটি রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর কোড নম্বর ‘এফ ৮৪.০’। তাই ‘অটিজম কোনো রোগ নয়’ বা ‘অটিজম আছে এমন শিশুর জন্য কিছুই করার নেই’—এমন কোনো প্রচারণায় বিভ্রান্ত হওয়া চলবে না।
দায়িত্বটা দিতে হবে চিকিৎসককে: কোনো বই পড়ে, পত্রিকার স্বাস্থ্য পাতা পড়ে নিজে নিজে কোনো শিশুর অটিজম নির্ণয় করা যাবে না। কোনো শিশুর মধ্যে অটিজম আছে কি না, সেটা নির্ণয়ের দায়িত্ব দিতে হবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে।

মেনে নিতে হবে: যদি সত্যিই দেখা যায় শিশুটির মধ্যে অটিজম আছে, তবে অযথা ভেঙে না পড়ে তার রোগটিকে মেনে নিতে হবে এবং উপযুক্ত পরিচর্যার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত: অটিজম নিয়ে শিক্ষিত-অশিক্ষিত অনেকের মধ্যে নানা অবৈজ্ঞানিক ও অপবৈজ্ঞানিক ধারণা রয়েছে। কোনো মিথ্যা ধারণা দ্বারা পরিচালিত হওয়া চলবে না। মনে রাখতে হবে, কেবল বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতেই এ ধরনের শিশুর পরিচর্যায় সুফল পাওয়া সম্ভব।

পরিবারের সব সদস্যকে সাধারণ সিদ্ধান্তে আসতে হবে: দেখা যায়, অটিজম রয়েছে এমন শিশুর মা চান শিশুটিকে বিশেষায়িত স্কুলে দিতে। কিন্তু বাবা মানতেই নারাজ যে তাঁর সন্তানের কোনো সমস্যা আছে। আবার মা-বাবা হয়তো শিশুর সমস্যা মেনে নিয়ে উপযুক্ত সহায়তা নিতে রাজি হলেন, কিন্তু বেঁকে বসলেন শিশুটির দাদা বা সংসারের মুরব্বি কেউ। তিনি মিথ্যে লোকলজ্জার ভয়ে শিশুটিকে কোনো চিকিৎসকের কাছে বা বিশেষায়িত স্কুলে দিতে রাজি হলেন না। তাই শিশুটির মঙ্গলের জন্য পরিবারের প্রায় সব সদস্যকে একটি ইতিবাচক সাধারণ সিদ্ধান্তে আসতে হবে।

নিজেদের দায়ী করা যাবে না: অটিজমের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কেন শিশুটির এ সমস্যা হলো, তা নিয়ে নিজেদের বা একে অপরকে দায়ী করা যাবে না।

চিকিৎসকদের দোষারোপ করা চলবে না: অটিজম যে ধরনের সমস্যা, সে ধরনের সমস্যা সমাধানের কোনো রাতারাতি চিকিৎসাপদ্ধতি নেই, রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যার পরিকল্পনা। এই দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যার মাধ্যমে এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশু ফিরে আসতে পারে সমাজের মূল স্রোতে। তাই অযথা ধৈর্যহারা হওয়া ঠিক নয়, চিকিৎসকের পর চিকিৎসক পরিবর্তন করলেও কোনো সুফল বয়ে আনবে না। সমস্যাটির স্বরূপ বোঝার চেষ্টা করতে হবে। চিকিৎসকদের অযথা দোষারোপ করা উচিত নয়। এতে আক্রান্ত শিশুর মা-বাবার মধ্যেও তৈরি হতে পারে হতাশা।

শেখাতে হবে সামাজিকতা: পরিবার থেকেই সামাজিকতা শেখাতে হবে সব শিশুকে। আর অটিজম আছে এমন শিশুর ক্ষেত্রে তো বটেই। বড়দের সম্মান করা, হাসির প্রত্যুত্তরে হাসা, সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি ফেলতে হবে শিশুকে।

সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ: বিভিন্ন দাওয়াত, সামাজিক অনুষ্ঠান, বড় আয়োজনে শিশুটিকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। লোকলজ্জার ভয়ে এসব অনুষ্ঠানে শিশুটিকে ঘরে বন্দী করে রেখে গেলে চলবে না।

খেলতে হবে শিশুর সঙ্গে: মা-বাবাকে সময় করে শিশুটির সঙ্গে প্রতিদিন কিছুটা সময় খেলতে হবে। কাটাতে হবে খানিকটা মানসম্পন্ন সময়।

খেলতে দিতে হবে: অটিজম রয়েছে এমন শিশুকে সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। একা একা খেলা যায় এমন খেলা যেমন কম্পিউটার গেম, মনোপলি ইত্যাদির প্রতি নিরুৎসাহিত করে অনেকে মিলে খেলতে পারে এমন খেলা যেমন—বল খেলা, ছোঁয়াছুঁয়ি, গঠনমূলক কিছু খেলা ইত্যাদি খেলতে উৎসাহিত করতে হবে।

শেখাতে হবে ভাষা: অটিজম আছে এমন শিশুর অন্যতম প্রধান সমস্যা তার ভাষা শিখতে না পারা। ভাষা শেখানোর জন্য তাকে একটা করে জিনিস নিয়ে সেগুলোর নাম স্পষ্ট করে শেখাতে হবে বার বার। ছোট ছোট শব্দ আগে শেখাতে হবে। তার সঙ্গে বেশি করে কথা বলতে হবে।

ননভার্বাল কমিউনিকেশন বোঝাতে হবে: কেবল মৌখিক ভাষা নয়। ইশারা-ইঙ্গিতের তাৎপর্য ও এর ব্যাখ্যা বোঝানোর জন্য প্রতীকের সাহায্যে শিশুকে ‘ননভার্বাল কমিউনিকেশন’ কীভাবে করা যায় তা বোঝাতে হবে। মনের ভাব প্রকাশের নানাবিধ ধরন শিশুর সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে।

শব্দভান্ডার ব্যবহার করতে হবে: শিশুর শব্দভান্ডার যাই হোক না কেন, সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। যেসব শব্দ সে ভালো পারে, সেগুলো দিয়ে পূর্ণাঙ্গ বাক্য তৈরি করা শেখাতে হবে, পাশাপাশি নতুন শব্দ শেখানোর জন্য ছবি, প্রতীক ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।

ব্যক্তিগত কাজ শেখানো: শিশুর নিজের ব্যক্তিগত কাজ যেমন—দাঁত ব্রাশ করা, জামাকাপড় পরা, নিজের যত্ন নিজে নেওয়া—এগুলো আস্তে আস্তে অভ্যাস করাতে হবে। অতিমাত্রায় স্নেহের বশবর্তী হয়ে শিশুটিকে পরনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা যাবে না।
শখকে প্রাধান্য দেওয়া: শিশুকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। গান গাইতে চাইলে সেটা শেখানো, ছবি আঁকতে চাইলে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন।

প্রশিক্ষণ নিতে হবে মা-বাবাকেও: যে শিশুর অটিজম রয়েছে, তার সঠিক পরিচর্যা এবং তার সর্বাঙ্গীণ কল্যাণের জন্য মা-বাবা এবং প্রয়োজনে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও প্রশিক্ষণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

গ্রুপ তৈরি ও গ্রুপে প্রশিক্ষণ: বিশেষায়িত স্কুলের পাশাপাশি যেসব শিশুর অটিজম আছে, তাদের অভিভাবকেরা নিজেরাও গঠন করতে পারেন ‘সেলফ হেলপ গ্রুপ’। এতে করে নিজেদের সাধারণ সমস্যাগুলো শেয়ার করার পাশাপাশি সমাধানের পথও খুঁজে পেতে পারেন।

কাঙ্ক্ষিত আচরণের জন্য পুরস্কার: শিশু যদি কাঙ্ক্ষিত আচরণ করে, তবে এর জন্য তাকে ছোটখাটো পুরস্কার দিতে হবে। দিতে হবে উৎসাহ।
আর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের জন্য তিরস্কার করা চলবে না। অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের জন্য পুরস্কার প্রত্যাহার করা এবং সেসব আচরণের দিকে মনোযোগ না দেওয়াই উচিত।
দিনলিপি সংরক্ষণ: একটি ডায়েরিতে শিশুর আচরণ ও অভ্যাসের তালিকাগুলো নিয়মিত সংরক্ষণ করতে হবে। এতে করে বোঝা যাবে তার আচরণের পরিবর্তন কতটুকু হচ্ছে এবং কী হারে হচ্ছে। এটা দেখে পরবর্তী চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
অটিজম রয়েছে এমন শিশুর জন্য প্রয়োজন সর্বস্তরের সচেতনতা আর অটিজম নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।
আর এই সচেতনতা ও পরিবর্তনের প্রথম ধাপটি শুরু করতে হবে পরিবার থেকেই। অটিজমের চিকিৎসায় পরিবারের, বিশেষত মা-বাবার ভূমিকা সবেচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই শিশুর অটিজমকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে, সেই সঙ্গে নিতে হবে মানসিক প্রস্তুতি। অভিভাবকদের ইতিবাচক ও গঠনমূলক আচরণই পারে অটিজম আছে এমন শিশুর বিকাশের পথকে অনেকখানি স্বাভাবিক ও সাবলীল করতে।

অটিজমের সাধারণ লক্ষণ: অটিজম রয়েছে এমন শিশুর চিকিৎসার প্রথম ধাপ হচ্ছে দ্রুত তার অটিজম শনাক্তকরণ। এ জন্য তিন বছর বয়সের শিশুর মধ্যে যে লক্ষণগুলো দেখলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন তা হচ্ছে:
 শিশুর ভাষা শিখতে সমস্যা, যেমন—এক বছর বয়সের মধ্যে মুখে কোনো আওয়াজ করতে না পারা বা দুই বছর বয়সের মধ্যে এক-দুই শব্দ দিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারা।
 শিশু যদি চোখে চোখ না রাখে
 নাম ধরে ডাকলে যদি সাড়া না দেয়
 অমিশুকে হয় এবং আদর করা পছন্দ করে না
 হঠাৎ করে খেপে ওঠে
 সামাজিক সম্পর্ক তৈরি ব্যাহত হচ্ছে
 কোনো ধরনের আনন্দদায়ক বস্তু বা বিষয় সে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেয় না
 যদি একই শব্দ বা বাক্য বার বার উচ্চারণ করে বা তাকে বলা কোনো কথার পুনরাবৃত্তি করে
 একই আচরণ বার বার করতে থাকে
 আওয়াজ পছন্দ করে না
 খুব বেশি রুটিন মেনে চলতে পছন্দ করে, আশপাশের কোনো পরিবর্তন সহ্য করতে পারে না
 এসব লক্ষণ সাধারণত তিন বছর বয়সের মধ্যে দেখা যায়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে আরেকটু পরেও দেখা দিতে পারে।

বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে ওপরের কোনো লক্ষণ অল্প সময়ের জন্য কোনো শিশুর মধ্যে থাকলেই ধরে নেওয়া যাবে না যে তার অটিজম আছে। অটিজম নির্ণয় করার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply