ফ্রান্সের সঙ্গে ৫৯ হাজার কোটি টাকা ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি করে মোদি সরকার
ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রের কড়া সমালোচনা করল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে দাবি তোলা হয়েছে, চুক্তির পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হোক। কারণ, কংগ্রেস মনে করে, কোনও রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে অনেক পন্থাই রয়েছে। সেগুলি এড়িয়েই রাফাল চুক্তি হয়েছে। যার দরুণ ভারতকে বেশি খরচের ভার বহন করতে হবে। গতকাল ফান্সের সঙ্গে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের চুক্তি করে মোদি সরকার। যেগুলি কিনতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৫৯ হাজার কোটি টাকা। শনিবার দিল্লিতে এআইসিসি’র সদরে এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা এ কে অ্যান্টনি বলেছেন, রাফাল-চুক্তি সংক্রান্ত অনেকগুলি প্রশ্ন উঠে আসছে। সরকার অবিলম্বে চুক্তির বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে আসুক। বিস্ময় প্রকাশ করে অ্যান্টনি এও প্রশ্ন তুলেছেন, মোট ১২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার মূল পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু কেনা হচ্ছে মাত্র ৩৬টি। এই অল্প সংখ্যক রাফাল নিয়ে চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বিস্তর ফারাক কীভাবে মেটাবে কেন্দ্র? দলের মুখপাত্র মণীষ তিওয়ারিকে পাশে বসিয়ে অ্যান্টনির খেদোক্তি, বর্তমান রাফাল চুক্তি করে মূল পরিকল্পনাটিকে কার্যত ‘ঠান্ডাঘরে’ পাঠিয়ে দিল কেন্দ্র। এটা আসলে ‘মেক ইন ইন্ডয়া’র চিন্তাভাবনা!
রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের মূল পরিকল্পনাটি ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে অ্যান্টনি বলেছেন, ভারতীয় বায়ুসেনার সামগ্রিক পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করতে আমরা ১২৬টি রাফাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এবং দেশের নিরাপত্তার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেগুলির জরুরিভিত্তিক প্রয়োজন ছিল। তাহলে সরকার কেন মাত্র ৩৬টি রাফাল কেনার চুক্তি করল? বায়ুসেনার কার্যক্ষেত্রে এটাই কি যথেষ্ট? শুধু তাই নয়, এই মুহূর্তে চাহিদা মতো স্কোয়াড্রনও বায়ুসেনার হাতে নেই। প্রয়োজন যেখানে ৪২টি, সেখানে রয়েছে মাত্র ৩২টি।
এর পরই ফ্রান্সের কাছ থেকে রাফাল কেনার চূড়ান্ত চুক্তি প্রকাশ্যে নিয়ে আসার দাবি করেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে এক একটি রাফালের দাম কত, তা আমি বলতে পারব না। তবে আজ কিছু সংবাদমাধ্যমে লেখা হয়েছে, সরকার টাকা সাশ্রয় করতে রীতিমতো দরদাম করেই রাফাল-চুক্তি করেছে। কিন্তু আমি তা মনে করি না। এবং এটা সত্যিও নয়। তাই কংগ্রেসের দাবি, সরকার রাফাল ক্রয়ের চূড়ান্ত চুক্তি বিশদে প্রকাশ্যে আনুক। তাহলে বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
No comments: