নজিরবিহীন ঘটনা: ভারতের প্রধান বিচারপতিসহ ৭ জনকে কোলকাতা হাইকোর্টে তলব
কোলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান নজিরবিহীন পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ ৭ বিচারপতিকে তলব করেছেন। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর, বিচারপতি দীপক মিশ্র, জে চেলমেস্বর, রঞ্জন গগৈ, মদন বি লোকুর, পিনাকীচন্দ্র ঘোষ ও কুরিয়ান জোসেফকে ২৮ এপ্রিল তার বাড়ির এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি কারনান ওই বিচারপতিদের বিরুদ্ধে তপশিলি জাতি/উপজাতি নির্যাতন প্রতিরোধ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ সম্পর্কে সাফাই দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু বিচারপতি কারনানের ওই আদেশের বৈধতা স্পষ্ট নয় কারণ সুপ্রিম কোর্ট আগেই বিচারপতি কারনানের প্রশাসনিক এবং বিচারবিভাগীয় ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে।
গত ১০ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ কারনানের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। ৩১ মার্চ তাকে আদালতে হাজির করানোর জন্য কোলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। ভারতীয় বিচার বিভাগের ইতিহাসে এর আগে কর্মরত কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার নজির নেই।
আদালত অবমাননার অভিযোগকে কেন্দ্র করে বারবার তলব করা সত্ত্বেও বিচারপতি কারনান সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা না দেয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ওই আদেশ দেয়।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
বিচারপতি কারনান বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের ওই রায় অসাংবিধানিক। কারণ, হাইকোর্টের কোনও বিচারপতিকে ইমপিচ করা যায়, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা যায় না।’
গত ২৩ জানুয়ারি বিচারপতি কারনান প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বর্তমান ২০ বিচারপতির তালিকা পাঠান এবং বিচারবিভাগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তদন্তের দাবি জানান। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি আমলে নেয়ায় তখন বিচারপতি কারনানের সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের সংঘাত চলছে।
কারনানের অভিযোগ, তিনি ‘দলিত’ হওয়ায় তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। গত ৩১ মার্চ বিচারপতি কারনান সুপ্রিম কোর্টে হাজির হলে প্রধান বিচারপতি তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং অন্য বিচারপতিরা তাতে সায় দিয়েছেন বলে বিচারপতি কারনান অভিযোগ করেছেন। তার দাবি, প্রকাশ্য আদালতে এটা তাকে অপমান করাই শামিল।#