লটকন ফল ও তার ১০ অসাধারণ পুষ্টিগুণ,Lotkoner Upokarita,লটকনের উপকারিতা,হলুদাভ ছোট ও গোলাকার এক ধরনের ফল লটকন। ইংরেজিতে লটকনকে বলা হয় বার্মিজ গ্রেপ। এক সময় লটকনকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ফল মনে করা হতো না বাংলাদেশে। কিন্তু এর স্বাদ, পুষ্টিগুণ, ঔষধিগুণ ইত্যাদি প্রকাশ পাওয়ায় তা এখন শুধু অতি পরিচিত ফলই নয় বরং অতি প্রয়োজনীয় ফলে পরিচিতি লাভ করেছে। লটকনকে এখনো বাংলাদেশের অপ্রচলিত ফল মনে করা হয়। এর উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি বেশ উপযোগী। আমাদের দেশে বিভিন্ন নামে পরিচিত টক-মিষ্টি স্বাদের এ লটকন। বৃহত্তর সিলেটের মানুষ লটকনকে বলে ডুবি। চট্টগ্রামে বলা হয় হাড়ফাটা। ময়মনসিংহের লোকেরা বলে কানাইজু। এ ছাড়া অনেক স্থানে লটকনকে বলা হয় লটকা, লটকাউ ইদ্যাদি।
লটকন চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন অনেক চাষি। আর্থিক লাভের কারণে চাষিদের মধ্যে লটকন চাষে উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছরই এখানে বাড়ছে লটকন বাগানের সংখ্যা। বর্তমানে নরসিংদীর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমের লালমাটি এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রচুর লটকন যাচ্ছে রাজধানী ও দেশের বিভিন্ন স্থানে।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার বেলাব, শিবপুর, মনোহরদী ও রায়পুরা উপজেলায় প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ হয়েছে। গত বছর হয়েছিল ৫৩৯ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শিবপুর উপজেলায় ৪০০ হেক্টর ও বেলাব উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ হয়েছে। এ ছাড়া রায়পুরা ও মনোহরদী উপজেলায় লটকনের চাষ হয়েছে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে।
মৌসুমে এখানে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন লটকন উৎপাদন হয়, যার আনুমানিক দাম ২৫ কোটি থেকে ৩০ কোটি টাকা।
চাষিরা জানান, লটকন গাছ উঁচু ও সমতল সব ধরনের জমিতেই জন্মে। আগে গ্রামে কোন কোন বাড়িতে লটকন গাছ দেখা যেত। ব্যাপক চাহিদা বা ফল হিসেবে সমাদর তেমন ছিল না বলে কেউ এটিকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের কথা চিন্তা করত না। প্রচুর ক্যালরি, খাদ্য ও পুষ্টিগুণ সমৃব্ধ এ ফলটির চাহিদা বর্তমানে অনেক বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে দামও।
মাটি ও জাতগুণে লটকন টক ও মিষ্টি দুই প্রকারের। তবে অধিক মিষ্টি ও সামান্য টক স্বাদের লটকনের চাহিদা বেশি।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, নরসিংদীর উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের উঁচু এলাকার লাল রঙের মাটিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ উপাদান বিদ্যমান থাকায় এ মাটিতে লটকনের উৎপাদন ভাল হচ্ছে। এগুলো আকৃতিতেও বড় ও মিষ্টি। নরসিংদীর রায়পুরা, শিবপুর, বেলাব ও মনোহরদী উপজেলার শত শত চাষি লটকন বিক্রি করে অর্থনৈতিক সাফল্য পেয়েছেন।
কৃষি বিভাগ জানায়, শিবপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকনের বাগান রয়েছে। ১৫-২০ বছর আগেও লটকনের স্বতন্ত্র বাগান ছিল না। তখন অন্যান্য ফলগাছের সঙ্গেই দু’একটি গাছ লাগানো হতো ।
লটকন চাষিরা জানান, আগে লটকনের তেমন চাহিদা ছিল না, দামও ছিল কম। বর্তমানে চাহিদা ও মূল্য বেড়েছে। অন্যান্য ফলের তুলনায় লটকনের ফলন অনেক বেশি হয় বলে কৃষকরাও অধিক লাভবান হচ্ছেন।
লটকন ফলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গাছের কাণ্ডে ফলে। পুষ্টির সুসমতা ও প্রিয় ভিউয়ার, কমেন্ট করার আগে একটু লক্ষ্য করুন।
আমার নতুন চ্যানেলে আরো আপডেট ভিডিও পোস্ট করা হবে তাই এই চ্যানেলে Subscribe করে রাখুন।
No comments: