আবু লায়েছ লাবলু. // গ্রামের একমাত্র সড়ক ভৈরব নদের গর্ভে ॥ জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন, জনদুর্ভোগ চরমে
মেহেরপুর সদর উপজেলার শুভরাজপুর গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি গত ২০১০ সালে বর্ষ মৌসুমে পানির তোড়ে ও পাশের ভৈবর নদের ঢেউয়ে রাস্তার অসংখ্য স্থানে ফাটল ধরে ভেঙ্গে গেছে। ফলে এ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ ও দুর্দশা নেমে এসেছে। এ গ্রামটি জেলার উল্লেখ্যযোগ্য সব্জি চাষে বিখ্যাত। এ গ্রামের সব্জি মেহেরপুরসহ দেশের রাজধানী ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেট, বরিশাল ও খুলনা বিভাগীয় শহরে রপ্তানি করা হয়। কিন্ত এ রাস্তা ভৈরব নদের গর্ভে ভেঙ্গে যাওয়ায় গত ১ বছর যাবতএখান থেকে কোন সব্জি বাহিরের জেলাতে রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি বলে কৃষকরা জানান। সব্জি রপ্তানি দুরের কথা বর্ষার সময় বাজার করার জন্যেও গ্রামের মানুষ শহরে আসতে পারেনা। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। আগে এ গ্রামে ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহন যেত। এখন গরুর গাড়িও আসা যাওয়া করতে পারে না।স্থানীয় কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের এ গ্রামের রাস্তাটি মেরামতের কোন উদ্দোগ নেই বলে গ্রামের জনগন অভিযোগ করেন। ২০১০ সালে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ ৩০টন গম বরাদ্দ করে দায়সারা ভাবে মেরামত করেছিল। সে সময় পানি নিস্কাশনের জন্য কালভাট বসানোর কথা থাকলেও বসানো হয়নি। মাটির বদলে বালি দিয়ে মেরামত করায় বর্ষার পানি চাপে ও নদের ঢেউে প্রায় ১ কিলোমিটর রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। তার পর থেকে জাতীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্যরা এ গ্রামের রাস্তাটির দিকে আর কেউ নজর দেইনি। ফলে গ্রামের ৫ হাজার মানুষের যাতাযাতের চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
ব্যবসায়ী মওলা বক্স বলেন, রাস্তার উপর দিয়ে গ্রামের পানি নামার কারনে ও বর্ষার সময় নদের ঢেউে ভেঙ্গে গেছে। ব্যবসায়ী ইছারদ্দিন বলেন, ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্যারা রাস্তাটি বালি দিয়ে বাধার কারনে ভেঙ্গে যায়। কৃষক সাহার আলি বলেন, মাঠে থেকে ফসল উঠানো খুবই কষ্ট। রাস্তাভাঙ্গার জন্য আমরা ট্রাক বাস কিছুই গ্রামে আনতে পারি না ।এ গ্রামের মোড়ল খলিলুর রহমান বলেন, গ্রামে ৫ হাজার মানুষের বাস। গ্রামের একমাত্র রাস্তা মেরামতের জন্য সরকারির কাছে আবেদন জানাচ্ছি। গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুন্সুর আলি বলেন, গ্রামের মেইন রাস্তা ভৈরব নদের ভাঙ্গনে একেবারে অকেজো হয়ে গেছে। অন্যান্য গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বর্ষাকালে ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। আর্দশ কৃষক আলি আকবর বলেন, বর্তমানে গ্রামের মাঠে উৎপাদিত কৃষি পণ্য কৃষকরা বাজারজাত করতে পারেনা। গৃহিনী সুখজান বলেন, এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় এক দারগা মোটরসাইকেল নিয়ে গর্তে পড়ে যায়, সে মারাত্বক আহত হয়। তার পর থেকে আইনশৃংখলা বাহিনীর কেউ এ রাস্তায় আসতে চাইনা। ইট দিয়ে রাস্তা বাঁধে দেওয়ার দাবি জানান।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউপি সদস্য আসরাফুল ইসলাম জানান, এ গ্রামের ৮০ভাগ মানুষ আওয়ামী লীগ করে। বর্তমান সরকারের উপর আস্তাশীল। রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন।
কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের কথা গুরুত্ব দিয়ে রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
No comments: