Sponsor



Slider

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » জার্মানি ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন যে সিরিয়ানরা




দু'বছর আগে যে লক্ষ লক্ষ অভিবাসী যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে পালিয়ে জার্মানি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছিল - তাদের মধ্যে অনেকেই এখন আবার সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছে।
তারা বলছে, জার্মানিতে অনেক দিন থাকলেও সেখানকার সমাজের সাথে তারা মিশতে পারছে না।
তাই একাধিক দেশের ভেতর দিয়ে শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে যে পথে তারা ইউরোপে এসেছিল - ঠিক সেইসব বিপজ্জনক এবং অবৈধ চোরাই পথগুলো দিয়েই তারা আবার তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছে।
এদেরই একজনের নাম জাকারিয়া। তিনি এবং তার দলের কয়েকজনকে অনুসরণ করে বিবিসির সংবাদদাতারা দেখেছেন কিভাবে তারা গ্রিস সীমান্ত দিয়ে তুরস্কে ঢুকছেন।
গ্রিসের পুলিশ অনেক সময়ই অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেবার চেষ্টাকারীদের আটক করে। গ্রিস-তুরস্ক সীমান্তে এরকম ১০-১২ জন সিরিয়ান নাগরিকের সাথে ধস্তাধস্তি এবং গ্রেফতারের দৃশ্যও দেখেছেন তারা।

 

সিরিয়া ইউরোপ অভিবাসী জার্মানি
Image captionগ্রিস তুরস্ক সীমান্তে পুলিশ আটক করছে সিরিয়ানদের
এই দৃশ্য দেখলে অনেকে বিস্মিত হবেন। কারণ তারা গ্রিসে ঢোকার চেষ্টা করছে না, যেমনটা দু বছর আগে হাজার হাজার লোক করেছিলো। বরং উল্টোটা হচ্ছে এখানে, এরা আসলে ইউরোপ ছেড়ে আবার সিরিয়ায় ফিরে যাবার চেষ্টা করছে।
তারা ইউরোপ ত্যাগের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং সে জন্য যে অবৈধ পথে তারা এসেছিল -সেই অবৈধ পথেই আবার তুরস্ক হয়ে সিরিয়া ফিরে যেতে চাইছে।
বিবিসির সংবাদদাতার কাছে জাকারিয়া বলছিলেন, এর কারণ কি।
জার্মানির ব্যাডেন উর্টেমবার্গে ছিলেন জাকারিয়া। সেখান থেকেই তার যাত্রা শুরু। তিনি বলছিলেন, "আমি এই দেশে এসেছিলাম দু বছর আগে। "
"আমি ভেবেছিলাম, এখানেই থাকবো জীবনে উন্নতি করবো, এবং জার্মানদের দেখিয়ে দেবো যে আমরা শুধু শরণার্থী নই।"
সিরিয়া ইউরোপ অভিবাসী জার্মানি
Image captionজাকারিয়া
"কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমি এখানে একজন বহিরাগত। জার্মান সমাজের সাথে আমাদের কোন যোগাযোগ তৈরি হয় নি। আমরা এ সমাজে মিশতে চেষ্টা করেছি - কিন্তু সত্যি বলতে কি জার্মানরা খুবই শীতল, তারা আমাদেরকে গ্রহণ করার চেষ্টাও করতে চায় না।"
তিনি বলছিলেন, "আমি যা অর্জন করবো ভেবেছিলাম তার কিছুই করতে পারি নি, এক শতাংশও নয়। শুধু আমার ক্ষেত্রেই যে এমন হয়েছে তা নয়। এরকম আরো অনেক আছে।"
"তাই আমি ঠিক সেই চোরাই পথ দিয়েই সিরিয়ায় ফিরে যাচ্ছি - যে পথ দিয়ে আমি এখানে এসেছিলাম।"
পর দিন জাকারিয়া পৌঁছালেন গ্রিসের থেসালোনিকি শহরে। এই শহরের বাস স্টেশনটি জাকারিয়ার মতো সিরিয়ানদের জন্য যানবাহনের একটা বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। মনে করা হয়, এ পথ দিয়ে প্রতি সপ্তাহে শত শত লোক যাচ্ছে।
জাকারিয়া বলছিলেন দেশে ফেরার জন্য পথে নেমেই তিনি কতটা উত্তেজিত। "আমি এত অধীর হয়ে উঠেছি যে - দেশে পৌঁছানোর জন্য আমার তর সইছে না। যদিও এই পথটা কঠিন, এর ওপর আছে ঠান্ডা আর বৃষ্টি।"
এখানে ৫০ জনেরও বেশি সিরিয়ান জড়ো হয়েছে যারা সিরিয়ার পথে তুরস্ক সীমান্তের উদ্দেশ্যে পাঁচ ঘন্টার এই বাস-যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। এদের মধ্যে শিশুরা আছে, একাধিক পরিবার আছে, অনেক মহিলা আছে যাদের কোলে শিশু।
সিরিয়া ইউরোপ অভিবাসী জার্মানি
Image captionসিরিয়ার পথে তুরস্কে ঢুকতে থেসালোনিকিতে জড়ো হয়েছেন এই সিরিয়ানরা
কেন তারা এই বিপদ সংকুল পথ দিয়ে সিরিয়া ফিরে যাচ্ছেন?
এ কথা জিজ্ঞেস করলে দেখা যায়, সবারই আছে নিজ নিজ কারণ।
পর দিন জাকারিয়া এসে পৌঁছালেন গ্রিস-তুরস্ক সীমান্তে।
বেশ রাত হয়েছে। অবৈধ পথ দিয়ে সীমান্ত পার হয়ে তুরস্কে ঢোকার এটাই সময়। এ জন্য সিরিয়ানদের দলটি তৈরি হচ্ছে। সবারই ভেতরে একটা চাপা উত্তেজনা - কারণ এই পথ দিয়ে সীমান্ত পার হতে গিয়ে অনেকেই এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।
সীমান্ত পেরোনোর আগে জার্মানীর উদ্দেশ্যে জাকারিয়ার শেষ বার্তা ছিল এই রকম।
"আমার জন্য জার্মানি বা অন্য কোনো ইউরোপীয় দেশে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আমরা মুসলিম, কিন্তু ওরা বলে আমরা সন্ত্রাসী। আমাদের দেখলে তারা ভয় পায় - যেন আমরা কোন দানব, মানুষ নই। "
বিবিসির সংবাদদাতারা পরে জানতে পেরেছেন যে জাকারিয়া সহ পুরো দলটির সবাই নিরাপদে সীমান্ত পার হতে পেরেছে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply