
সস্তায় সাধারণ মানুষকে গাড়ি উপহার দেওয়ার জন্য ২০০৬ সালে ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী টাটা ন্যানো প্রাইভেট কার বাজারে ছাড়ার ঘোষণা করে।লাখ টাকায় প্রাইভেট কার পাবে সাধারণ মানুষ, প্রথম দিকে এ ঘোষণা দিলেও পরবর্তীতে কথা রাখতে পারেনি টাটা। আর এজন্য গাড়ির নাম দেওয়া হয়েছি এক লাখি ন্যানো।
তবে নানা কারণেই টাটার ন্যানো গাড়ির বাজার এখন পড়তির দিকে। ভারতের বাজারে এর চাহিদা এখন নামমাত্রে। বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ন্যানো নিয়ে ভিন্ন চিন্তা করছে প্রতিষ্ঠানটি। যেকোনো সময়ে এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে টাটা।
pran গত বুধবার টাটা গোষ্ঠী জানিয়েছে, জুন মাসে তাদের গুজরাটের সানন্দের ন্যানো গাড়ি কারখানা থেকে মাত্র একটি ন্যানো গাড়ি উৎপাদিত হয়েছে, যেখানে গত বছরের জুনে উৎপাদিত হয়েছিল ২৭৫টি। জুন মাসে ভারতের গাড়ির বাজারে মাত্র তিনটি ন্যানো গাড়ি বিক্রি হয়েছে। বিদেশেও কমে গেছে এই গাড়ির চাহিদা। জুন মাসে বিদেশে কোনো ন্যানো গাড়ি রপ্তানি করেনি টাটা। অথচ গত বছরের জুনে ২৫টি গাড়ি রপ্তানি হয়েছিল বিদেশে।
২০০৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা গড়ার উদ্যোগ নেয় টাটা। সেসময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই গাড়ির কারখানার জন্য ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে তা টাটাকে দেন।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে সিঙ্গুরের চাষিরা আপত্তি জানিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। ফলে এই জমি নিয়ে মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টসহ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত।
এক পর্যায়ে টাটার কর্ণধার রতন টাটা ঘোষণা দেন, তারা ন্যানো গাড়ির কারখানা সিঙ্গুর থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবেন গুজরাটের সানন্দে। সে অনুযায়ী সানন্দে গড়ে ওঠে ন্যানো কারখানা।
সম্প্রতি ভারতে অন্যান্য কোম্পানির নতুন নতুন মডেলের গাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠায় ভাটা পড়েছে ন্যানো গাড়ি বিক্রিতে।
টাটার এক কর্মকর্তা বলেছেন, যা পরিস্থিতি তাতে বোঝাই যাচ্ছে, এভাবে আর ন্যানো গাড়ি বাজারে বেশি দিন চলবে না। এখন এই কারখানাকে বাঁচিয়ে রাখতে নতুন করে লগ্নি বাড়িয়ে নতুন মডেলের নতুন গাড়ি উৎপাদনে উদ্যোগী হতে হবে।
ন্যানোর বাজার টাটা ধরে রাখতে না পারলেও টাটার বাস, মাইক্রোবাস, ট্রাকসহ অন্যান্য গাড়ির বাজার ভারতে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করছে।

উৎপাদন বন্ধ হচ্ছে ‘টাটা ন্যানো’র
Tag: others
No comments: