একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কার স্বার্থে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারে তাড়াহুড়া করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শনিবার (১০ নভেম্বর) সকালে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত জাতীয় নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শামসুল হুদা বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইভিএম স্থাপন করায় সন্দেহ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সকল দল যদি রাজি না হয় তাহলে জোর করে ইভিএম প্রয়োগ করার দরকার কি। কার স্বার্থে তাড়াহুড়া করে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুয়েটের নকশায় ও বাংলাদেশ মেশিন টুলসের মাধ্যমে ইভিএম তৈরি করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন বেসরকারিভাবে এটি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। ইভিএম না করার প্রক্রিয়া থেকে হঠাৎ করে ইভিএম স্থাপন কার ইন্ধনে করা হচ্ছে।’
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে আদতে কোনও লাভ নেই। কেননা এর তদারকি করার দায়িত্ব থাকবে নির্বাচন কমিশনের। তাদের মধ্যে যদি স্বচ্ছতা না থাকে তাহলে সিসি ক্যামেরায় কোনও সুফল আসবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন বিধি করে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের দমন করা হয়েছে। এখন গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন যাতে না হতে পারে, সে ব্যাপারে জোর দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচনের কারচুপির বিষয়ে অ্যাকশন কে নেবে?’
সুজনের সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘উন্নত দেশে নানা কারণে ইভিএম বিলুপ্ত করছে কিন্তু এখানে দ্রুততার সাথে ইভিএম করার প্রয়োজন কি? এছাড়া এত দ্রুততার সাথে তফসিলের প্রয়োজন কি ছিল? যদি ২৩ ডিসেম্বর ভোট হয় তাহলে প্রায় ১ মাস পর শপথ গ্রহণ করা লাগবে। এই একমাসে দুই সরকার একসাথে চলতে পারে না।’
বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘দুটো রাজনৈতিক দল পালাক্রমে ক্ষমতায় আসছে। কিন্তু তারা কখনও ভোটকে সম্মান দেয়নি। তারা ভোট ব্যতীত কীভাবে ক্ষমতায় থাকতে হবে সে চিন্তা করেছে। এ ছাড়া জনগণের আন্দোলনের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়েছিল। কিন্তু সেই জনগণের আশা আদালত কীভাবে বাতিল করে দেয়।’
No comments: