চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর দু'তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজে গতি আনার জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির খোঁজে নেমেছে জেলা প্রশাসন। বিশেষ করে প্রথম দু'দিনে মাত্র ৬টি যন্ত্র এবং ৫০ জন শ্রমিক দিয়ে প্রভাবশালীদের ৮০টি স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি উদ্ধার করা হয়েছে ৪ একরের বেশি জায়গা। এতে দখলভোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সিটি কর্পোরেশন এবং সিডিএ'র মালিকানাধীন মাত্র ৬টি স্কেভেটর, বুলডোজার এবং পে লোডার দিয়ে ৫০ জন শ্রমিক একে একে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে কর্ণফুলী নদীর দু'তীরে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো। একদিকে যেমন বিরামহীনভাবে চলছে কর্ণফুলী নদীকে বাঁচানোর সংগ্রাম, অন্যদিকে চলছে উচ্ছেদ বন্ধের ষড়যন্ত্র। এমনকি নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে উচ্ছেদ কাজে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, 'আমাদের ভূমির সহকারী কমিশনারকে সরাসরি হুমকি দেয়া হয়েছে। আমাকেও দু-একজন ফোন দিয়েছেন। কিন্তু আমরা এগুলো আমলে নেই না।'
এদিকে উচ্ছেদ বন্ধে মোবাইল ফোনে হুমকি দেয়া একজনকে চিহ্নিত করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সে সাথে উচ্ছেদ কাজে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের'ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার আবদুর রউফ বলেন, 'গোয়েন্দা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। কেউ যদি হুমকি দিয়ে বাঁধাগ্রস্ত করতেও চায়, তাদেরকেও দেখা হচ্ছে। এছাড়া উচ্ছেদ অভিযানে যারা যুক্ত আছেন তারা যদি নিরাপত্তা চান, আমরা তাও দেব, তবু উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করা যাবে না।'
প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল যন্ত্রপাতি এবং সামান্য জনবল দিয়ে অনেকটা ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে চলছে উচ্ছেদের কাজ। একটি স্থাপনা ভাঙতে'ই সময় লাগছে কয়েক ঘণ্টা। অথচ অল্প সময়েই অপসারণ করতে হবে অবৈধ হিসাবে চিহ্নিত ২ হাজার ১শ ১২ স্থাপনা। জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, 'লং রেঞ্জের যন্ত্রপাতি আমাদের থাকলে কাজটা আরও বেশি তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করতে পারতাম।'
২০১৫ সালের একটি রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এ উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চালিয়ে আসছে। আর উচ্ছেদ অভিযানের প্রথম দু'দিনে ৪০টির বেশি স্থাপনা নিজেরাই সরিয়ে নিয়েছে মালিক পক্ষ।
No comments: