Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » ওজনটা বোঝা গেল অভিষেকেই




ওজনটা বোঝা গেল অভিষেকেই প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেক উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সুবিধা করে দেবে, নাকি বিপদ বাড়াবে, রাজনৈতিক সমীকরণের সম্ভাব্য ভাঙাগড়ার উপর তা নির্ভর করবে। বাসের ছাদ থেকে কর্মী-সংর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন

প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। যুদ্ধের ফলাফল পক্ষে যাবে, নাকি বিপক্ষে, যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগে সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এক জন যোদ্ধা প্রতিপক্ষের দিকে কত বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবেন বা পারছেন, যুদ্ধের প্রস্তুতিপর্বেই তার আভাস পাওয়া যায়। আভাসটা দিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী, দিয়ে দিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে ময়দানে নামিয়ে। সক্রিয় রাজনীতিতে পা রাখার পরে প্রথম রোড শোয়েই যে ভাবে সাড়া জাগালেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী, তাতে জাতীয় রাজনীতির সমীকরণে ফের নতুন ভাঙাগড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে গেল। কংগ্রেসের হয়ে প্রিয়ঙ্কার সক্রিয়তা অনেক দিনেরই। তবে মূলত নেপথ্যচারিনীই ছিলেন তিনি। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে পা রেখেছেন কয়েক দিন আগে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব সামলাবেন সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা। সোমবার লখনউ গিয়ে প্রিয়ঙ্কা আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই দায়িত্বভার কাঁধে নিলেন। আর কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর প্রথম সফরেই যে দৃশ্য তৈরি হল লখনউয়ে, তাতে কংগ্রেসের উচ্ছ্বসিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে প্রদেশ কংগ্রেস দফতর পর্যন্ত রোড শো করেছেন রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী এবং জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন প্রিয়ঙ্কাই। লখনউয়ের বিমানবন্দর থেকে বেরনোর পরে সেই শহরেই অবস্থিত প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে পৌঁছতে রাহুল-প্রিয়ঙ্কা-জ্যোতিরাদিত্যদের সময় লাগল সাড়ে চার ঘণ্টা। এতেই বোঝা যায় উচ্ছ্বাসের বহরটা কেমন ছিল। কত বছর পরে কংগ্রেসের কোনও কর্মসূচিকে ঘিরে এত উন্মাদনা দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের পক্ষে চট করে তা মনে করা সম্ভব হচ্ছে না। বিমানবন্দর থেকে যে বাসের মাথায় চড়ে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে পৌঁছলেন প্রিয়ঙ্কারা, প্রায় গোটা রাস্তাতেই সেই বাসটাকে যে ভাবে ঘিরে রইলেন কাতারে কাতারে মানুষ, তাতে উত্তরপ্রদেশে এক দিনেই অনেকখানি উজ্জীবিত কংগ্রেস। এ দেশের রাজনৈতিক কিংবদন্তি অনুসারে দিল্লি পৌঁছনোর সব রাস্তা যে রাজ্য হয়ে যায়, বহু বছর পর সেই রাজ্যে আশায় বুক বাঁধার অবকাশ তৈরি হল কংগ্রেস কর্মীদের জন্য। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানেন? রাহুল গাঁধী যে সময়োচিত একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ কমই। আবার বলছি, ফলাফল যা-ই হোক, উত্তরপ্রদেশে সাড়া জাগিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। কিছু দিন আগে পর্যন্তও যে উত্তরপ্রদেশে প্রান্তিক শক্তি হিসেবেই দেখা হচ্ছিল কংগ্রেসকে, সেই উত্তরপ্রদেশেই আচমকা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল কংগ্রেস। দেশের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যটায় আর অবজ্ঞা করা যাবে না কংগ্রসকে। রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেক কিন্তু বদলে দিল উত্তরপ্রদেশের হিসেবটা। এত দিন পর্যন্ত মূলত দ্বিমুখী হিসেবেই ধরা হচ্ছিল উত্তরপ্রদেশের লড়াইটাকে। বিজেপি বনাম সপা-বসপা জোট— উত্তরপ্রদেশে এই দুই শক্তির মধ্যেই মূল লড়াই বলে ধরে নেওয়া হচ্ছিল। কংগ্রেসকে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে দেখছিল না কোনও পক্ষই। বিজেপিকে রোখার তাগিদ এত প্রবল ভাবে অনুভূত হচ্ছিল বিরোধী শিবিরে যে, পরস্পরের তীব্র বিরোধী সপা-বসপাও নিজেদের মধ্যে সমঝোতা সেরে নিয়েছিল। বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হতে না দেওয়ার তাগিদেই বোঝাপড়ায় এসেছিল সপা-বসপা। কিন্তু সেই তাগিদও কংগ্রেসের গুরুত্ব তৈরি করতে পারেনি উত্তরপ্রদেশে। রাহুল গাঁধীর দল জোটের বাইরে থাকলেও খুব একটা যাবে-আসবে না— অখিলেশ-মায়াবতীরা এমনই ভেবে নিয়েছিলেন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী আসরে নামতেই সেই ভাবনা বা সেই হিসেব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন সমঝোতার কথা নতুন করে ভাবতে হতে পারে সপা ও বসপা-কে। উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের পালে বেশ কিছুটা বাতাস প্রিয়ঙ্কা যে টানবেনই, তা প্রথম দিনের উচ্ছ্বাসেই অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই হাওয়ায় ভর করে কংগ্রেস যদি আলাদা লড়ে, তা হলে উত্তরপ্রদেশে লড়াইটা হয়ে উঠবে ত্রিমুখী। তেমন হলে সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে যোগী আদিত্যনাথরা। বিশ্লষেকদের অধিকাংশই এ রকমই মনে করছেন। এই রাজনৈতিক বাস্তবতার কথা মাথায় রেখে অখিলেশ এবং মায়াবতীকে নতুন করে হিসেব কষতে হবে এবং কংগ্রেসকেও জায়গা ছাড়তে হবে— এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেক আরও একটা রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিচয় দিল। এ দেশের রাজনীতিতে গাঁধী পরিবার এখনও কতটা প্রাসঙ্গিক, প্রিয়ঙ্কার প্রথম রোড শো তার আভাস দিল। প্রয়াত ইন্দিরা গাঁধীর নামে এখনও কত মানুষ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন, ইন্দিরার পৌত্রীর মধ্যে ইন্দিরার ছায়া খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা দেখেই তা আঁচ করা গেল। আর উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস কর্মীদের রাতারাতি পুনরুজ্জীবিত করে রাজনীতিতে আনকোরা প্রিয়ঙ্কা বোঝালেন তাঁর রাজনৈতিক অস্তিত্বের ওজনটা। অখিলেশ-মায়াবতী নিজেদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে কংগ্রেসকে জোটে সামিল করবেন কিনা, সময়ই তার উত্তর দেবে। উত্তরপ্রদেশে লড়াই দ্বিমুখী হবে, নাকি ত্রিমুখী, এ প্রশ্নের উত্তরও সময়ই দেবে। প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেক উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সুবিধা করে দেবে, নাকি বিপদ বাড়াবে, রাজনৈতিক সমীকরণের সম্ভাব্য ভাঙাগড়ার উপর তা নির্ভর করবে। কিন্তু রণাঙ্গনে যে আর এক মহারথী হাজির হয়েছেন, সব পক্ষকেই যে নতুন করে রণকৌশল সাজানোর কথা ভাবতে হচ্ছে, প্রতিপক্ষের দিকে কংগ্রেস যে আরও জোরদার একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারছে, তা নিয়ে সংশয়ের আর অবকাশ নেই।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply