টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী দুধ নিয়ে আমদানিকারকদের কারসাজি আছে কি না, দেখা উচিত দুধ নিয়ে আমদানিকারকদের কোনো কারসাজি আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের বিশেষ জরুরি সভায় লন্ডন থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হঠাৎ কথা নেই, বার্তা নেই একজন দুধ পরীক্ষা করে বলে দিল, দুধ ব্যবহারযোগ্য নয় এবং সঙ্গে সঙ্গে রিট করা হয়। সেখানে বলে দেওয়া হয়, পাঁচ সপ্তাহ দুধ ব্যবহার করা যাবে না বা খাওয়ানো যাবে না। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা দিয়েছি, মানুষের পুষ্টি নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা যাতে খেতে পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। যথাযথভাবে এগুলো যাতে পরীক্ষা করা হয়, সেজন্য আমাদের বিএসটিআই উন্নত মানের করে দিয়েছি। প্রত্যেকটা খাদ্যপণ্যের কী কী বিষয় পরীক্ষা করা হয়, তার একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড আছে। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে এগুলো পরীক্ষা করা হয় এবং বাজারজাত করা হয়। সরকারের সুনির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে, সেখানে আমরা পরীক্ষা করি।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের যে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি, সাধারণ মানুষের যে বেঁচে থাকার পথগুলো সৃষ্টি করা, সেগুলো কেন বাধাগ্রস্ত করা হয়, এটাই আমার প্রশ্ন। এখানে আমার মনে হচ্ছে যে, আমদানিকারক যারা, তাদের কোনো কারসাজি আছে কি না, সেটা আমাদের দেখা উচিত, বা তারা কোনোভাবে উৎসাহিত করছে কি না? আর যারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন, তাদের এ নিয়ে ভাবা উচিত, দেখা উচিত। হঠাৎ একটা গুজব ছড়িয়ে রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করা বা দেশের উৎপাদিত পণ্যের মান সম্পর্কে কথা বলা, এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। কাজেই যারা গুজব ছড়াবে বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করবে, তাদের ওপর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সম্প্রতি দুধ পরীক্ষা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের (ঢাবি) এক শিক্ষকের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না হঠাৎ একজন প্রফেসর সাহেব, তাঁর পরীক্ষার মধ্য দিয়ে একটা কথা ছড়িয়ে দিয়ে একটা রিট করা বা একটা সিদ্ধান্ত নেওয়াটা এর প্রকৃত ফলাফলটা কী হবে, সেটা হয়তো কেউ চিন্তা করে না। দুধ বিক্রি করে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে। আবার গরুর দুধ বিক্রি করে সেই গরুর খাবারও জোগাড় করা হয়। যারা খামার করেছে বা গরু পালন করছে, তাদের কাছ থেকে দুধ কেনা হচ্ছে। এই মানুষগুলোর দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য গরু কিনে দিয়েছি। এই মানুষগুলো যদি দুধ বিক্রি করতে না পারে, অর্থ জোগাড় করতে না পারে, তাহলে গরুকে কী খাবার দেবে আর নিজে কীভাবে খাবার কিনে খাবে, এই বাস্তবতাটা চিন্তা করা দরকার।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশ থেকে যেসব গুঁড়া দুধ আমদানি করা হয়, আমি জানি না যিনি আমাদের দেশের দুধটা পরীক্ষা করেছেন তিনি বিদেশ থেকে আমদানি করা গুঁড়া দুধগুলো পরীক্ষা করেছেন কি না? আমার মনে হয়, তিনি এটা কখনো করেননি। আমি অনুরোধ করব, তিনি যেন বিদেশ থেকে যেগুলো আমদানি করা হচ্ছে, বাজারজাত করা হচ্ছে, সেগুলো যেন পরীক্ষা করে দেখেন। আমরা আমদানি নির্ভর থাকতে চাই না, স্বনির্ভর থাকতে চাই। আমরা দেশের চাহিদা দেশের উৎপাদিত পণ্য দ্বারা মেটাতে চাই।’ সম্প্রতি ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ইদানীং একটা উপদ্রব দেখা দিয়েছে, ডেঙ্গু। এই ডেঙ্গু জ্বরটা প্রথম দিকে যখন শুরু হয়, তখন আমরা দেখেছি যে, বিশেষ করে শহর এলাকা বা ঢাকা শহরে এটা বিস্তার লাভ করছিল। তবে এটা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর সামনে আমাদের কোরবানির ঈদ ঈদুল আজহার সময় সব মানুষ বাড়িতে যাবে, যারা ডেঙ্গু জ্বরে এরইমধ্যে আক্রান্ত হয়েছে, বা যাদের শরীরে এটা রয়ে গেছে, নিজ নিজ এলাকায় গেলে পরে ফের যদি মশা কামড় দেয়, তাহলে এই রোগটা সংক্রমিত হতে পারে। এজন্য আমি সবাইকে বিনীত অনুরোধ করব, যার যার নিজের ঘরবাড়িতে কাপড়-চোপড় যেগুলো আলনায় ঝোলানো থাকে বা বাক্স পেটরায় থাকে বা আলমারিতে থাকে, এগুলো ঝেড়ে রাখা, কোথাও মশা আছে কি না,তা দেখা, ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। কারণ বর্ষাকাল, বৃষ্টি হয়, পানি জমে থাকে, ওই পানিতে মশার লার্ভা পাওয়া যায়, মশা জন্মগ্রহণ করে। তবে এডিস মশা বেশি উপরে উঠতে পারে না, বিশেষ করে পায়ের দিকে কামড়ায়। এজন্য ঘুমানোর সময় মশারি টানানো উচিত।’ সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিফলেট তৈরি করা হয়েছে। আমি বলে দিয়েছি, সব জায়গায় দিতে। আর সরকারিভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রত্যেকের উচিত এই বিষয়গুলোতে নজর দেওয়া। আমাদের ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন পেশাজীবী, বিভিন্ন সংগঠন, সবাইকে বলব, অফিস-আদালতে এসির পানি, ফুলের টব, ভাঙা হাড়ি, আবদ্ধ জলাশয় সব জায়গায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দেওয়া দরকার। আমি আমাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের সবার প্রতি আহ্বান করব, আমাদের নেতাকর্মীরা যেন মাঠে নেমে পড়ে।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করণীয়, আমি ঢাকার দুই সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। মশা যেন ডিম পাড়তে না পারে, মশার লার্ভা যেন তৈরি না হয়, বংশ বিস্তার করতে না পারে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া এবং প্রটেকশন দেওয়ার ব্যাপারে প্রত্যেকটা মানুষকে নিজেকেই করতে হবে, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি, প্রত্যেকের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, সে জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’ ডেঙ্গুর বিষয়ে সাংবাদিকদেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকদেরও বলব, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হয়, নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। পাশাপাশি এটাও দেখতে হবে, সবাই যেন সাবধান থাকে। কাজেই কর্মস্থানে যেন মশা কামড়াতে না পারে, বংশবিস্তার করতে না পারে। সবাই পরিষ্কার-পরিছন্ন থাকলে আমরা রক্ষা পেতে পারব। চিকিৎসার ব্যাপারেও কী কী করণীয়, এগুলো আমাদের চিকিৎসকরা মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে প্রচার করছেন।’ বিভিন্ন ইস্যুতে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে মানুষকে হত্যা করা বা পিটিয়ে মারা, একটি মাকে মেরে ফেলা হলো, কী অবস্থা! আমি আহ্বান জানাব, গুজবে আপনারা কান দেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যদি কোনো মানুষকে অপরাধী মনে হয়, তাকে হত্যা করবেন না, তাকে পুলিশে সোপর্দ করুন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যারা আপনাদের আশপাশে গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের ধরিয়ে দিন। পত্রপত্রিকার কাছে অনুরোধ থাকবে, অহেতুক সত্য তথ্য না জেনে খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করবেন না।’ দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়। আর বর্ষাকালে আমাদের এখানে বন্যা আসে, আমাদের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা এরই মধ্যে বন্যা কবলিত হয়েছে। আর বন্যার পানি ধীরে ধীরে মধ্যাঞ্চলে আসে। আর প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী, ভাদ্র মাসে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে পানি আসে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা সবসময় যোগাযোগ রাখছি সরকারের পক্ষ থেকে।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘নদী ভাঙন আমাদের একটি সমস্যা। নদী ভাঙন থেকে নদীকে রক্ষা করতে হলে নিয়মিত নদী ড্রেজিং করা একান্তভাবে দরকার। আমরা সেই ব্যবস্থাই নিচ্ছি যে, নদী ড্রেজিং করে এর গতির ধারাটা অব্যাহত রাখা। আর বর্ষাকালে যাতে এই পানিটা ধারণ করতে পারে সেই জায়গাটাও আমাদের রাখতে হবে। কাজেই নদীর গভীরতা যতই বাড়বে, আমাদের খাল-বিল, জলাশয়গুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা তত বাড়বে, বন্যার ঝুঁকিও কমবে, নদী ভাঙনও রোধ হবে। আর যেসব জায়গা খুব দুর্বল, সেসব জায়গায় আমরা নদী শাসন করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
»Unlabelled
» টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রী দুধ নিয়ে আমদানিকারকদের কারসাজি আছে কি না, দেখা উচিত
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: