Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » সুকান্ত স্মরণে




জন্মেই দেখেন পুরো পৃথিবী জ্বলছে অশান্তির আগুনে! যুদ্ধ বিধস্ত পৃথিবী তিনি মেনে নিতে পারেননি। তিনি ‘অনুভব’ কবিতায় লিখলেন— অবাক পৃথিবী! অবাক করলে তুমি জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি। অবাক পৃথিবী! আমরা যে পরাধীন অবাক,কি দ্রুত জমে ক্রোধ দিন দিন; অবাক পৃথিবী! অবাক করলে আরো- দেখি এই দেশে অন্ন নেইকো কারো। ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কবি জন্মগ্রহণ করেন। দিদি নাম রাখেন সুকান্ত। সুকান্ত ভট্টাচার্য। পরিবারে বড্ড অভাব, দেশে অস্হিরতা। অনটনের জীবনে অন্যতম সঙ্গী ছিলো অনিয়ম, ছিলো নিজের প্রতি উদাসীনতা! কিন্তু অন্যের প্রতি তার টান ও সমাজকে নিয়ে চিন্তা ছিলো অনেক। ‘প্রার্থী’ কবিতায় কবি লিখলেন— হে সূর্য! তুমি আমাদের স্যাঁতসেঁতে ভিজে ঘরে উত্তাপ আর আলো দিও, আর উত্তাপ দিও রাস্তার ধারের ঐ উলঙ্গ ছেলেটাকে। তাকে শুধু কবি পরিচয়ে জানাটা ভুল। ২১ বছরের জীবনে লেখালেখিটা শুরু করেন ছোটবেলা থেকে। লেখার সময়কাল মাত্র কয়েকটা বছর! স্বল্প সময়ে লিখে গেছেন কবিতা, গান, গল্প, নাটক ও প্রবন্ধ। অল্প সময়ে কালজয়ী সব লেখার জন্য আলাদা স্থান দখল করে নিয়েছেন বাংলা সাহিত্য আকাশে। আমাদেরকে বুঝিয়েছেন- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, মাইকেলের মধুসূদন দত্তের সাথে সুকান্ত ছাড়াও বাংলাসাহিত্য অসম্পূর্ণ। অন্য সবার সাথে তার পার্থক্য- লেখার সময়কালে। জীবন যে মাত্র ২১ বছরের! কবিগুরুকে তিনি খুব ভালোবাসতেন। ১৯৪১-এ কলকাতা রেডিওর গল্পজাদুর আসরে যোগদান করেন। সেখানে তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা আবৃত্তি করতেন। কিন্তু কবিগুরুর মৃত্যুর পর সেই আসরে নিজের কবিতা পাঠ করে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানাতেন। তিনি ‘রবীন্দ্রনাথের প্রতি’ কবিতায় লিখেছেন — এখনো আমার মনে তোমার উজ্জ্বল উপস্থিতি, প্রত্যেক নিভৃত ক্ষণে মত্ততা ছড়ায় যথারীতি, এখনো তোমার গানে সহসা উদ্বেল হয়ে উঠি, নির্ভয়ে উপেক্ষা করি জঠরের নিঃশব্দ ভ্রুকুটি; এখনো প্রাণের স্তরে স্তরে, তোমার দানের মাটি সোনার ফসল তুলে ধরে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য খুব প্রতিবাদী ছিলেন। তার প্রতিবাদের ভাষা ছিলো অনন্য। তিনি ‘সিগারেট ‘কবিতায় লিখেছেন— আমরা সিগারেট! তোমরা আমাদের বাঁচতে দাওনা কেন? আমাদের কেন নিঃশেষ কর পুড়িয়ে? কেন এত স্বল্পস্হায়ী আমাদের আয়ু? মানবতার কোন দোহায় তোমরা পাড়বে? আমাদের দাম বড় কম এই পৃথিবীতে। তাই কি তোমরা আমাদের শোষন কর? শোষনের সমাধানও তিনি লিখে গিয়েছেন। তিনি তার ‘দেশলাই কাঠি’কবিতায়— আমরা বারবার জ্বলি, নিতান্ত অবহেলায়- তা তো তোমরা জানোই কিন্তু তোমরা তো জানো না; কবে আমরা জ্বলে উঠব সবাই-শেষ বারের মতো। সমাজে ঘটে যাওয়া অন্যায়-অবিচার তিনি মেনে নিতে পারেননি। তার রাজনৈতিক চর্চাও আন্দোলনকে ঘিরে। তিনি যেমন ‘একটি মোরগের কাহিনী’ কবিতায় শোষণের কাহিনী লিখেছেন তেমনি তিনি আবার ‘কলম’ কবিতায় লিখেছেন— কলম! বিদ্রোহ আজ! দলবেঁধে ধর্মঘট করো লেখক স্তম্ভিত হোক, কেরানিরা ছেঁড়ে দিক হাফ মহাজনী বন্ধ হোক, বন্ধ হোক মজুরের পাপ। স্বল্প সময়ের জীবনে তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে গেছেন। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন, তারপর যক্ষায়। ১৯৪৭ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। আঠারো বছর বয়সকে দুঃসহ, দূর্বার বলে তুমি চলে গেলে একুশের পর তোমার লেখা আর নাই! ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় বুঝতে শিখিয়ে তুমি চলে গেলে ‘পঁচিশে বৈশাখের উদ্দেশ্যে’ কবিগুরুর পুনঃজন্ম তুমি চাইলে তুমি কি জানো না? তোমার মৃত্যুর পর থেমে যায়নি কথার গুঞ্জন– বুকের স্পন্দনটুকু মূর্ত হয়নি ঝিল্লির ঝংকারে। আজও আমি বসে আছি তোমার পুনঃজন্মের অপেক্ষায়।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply