Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » বর্বরতার বর্ণনা দিলেন আবুবকর, আদালতে নির্বাক সু চি




মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর চালানো গণহত্যার দায়ে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দায়েরকৃত মামলার শুনানি শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার। শুনানির শুরুতে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্বোধ হত্যাকাণ্ড বন্ধে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গাম্বিয়ার আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার দিকে ওই মামলার শুনানির শুরু হয়। শুরুতেই প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে গাম্বিয়ার আইন ও বিচারমন্ত্রী বলেন, ‘গাম্বিয়া যা বলছে তা হলো আপনি মিয়ানমারকে এই নির্বোধ হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে বলুন।’
দ্য হেগে রোহিঙ্গা গণহত্যার এ বিচারপ্রক্রিয়ায় দেশের হয়ে আইনি লড়াই চালাতে আদালতে উপস্থিত রয়েছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। গাম্বিয়ার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর।
শুনানির শুরুর দিনে আবুবকর রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো গণধর্ষণ, গণহত্যা, বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার বর্ণনা দেন বিচারপতির সামনে। আর এ সময় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি নির্বাক দৃষ্টিতে শুধু তাকিয়ে শুনছিলেন।
আবুবকর আরও বলেন, ‘বর্বর ও নৃশংস এসব কাজ; যা আমাদের সবার বিবেককে আঘাত করেছে। এটি এখনও অব্যাহত আছে। নিজ দেশের মানুষকে গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।’
আদালতে নির্বিকার সু চি
আদালত কক্ষে গাম্বিয়ার আইনজীবী দলের সদস্যরা যখন মিয়ানমারের নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরেন তখন নির্বিকার থাকতে দেখা যায় অং সান সু চিকে। এ সময় আদালতের বাইরে কয়েক ডজন রোহিঙ্গাকে ন্যায়বিচারের দাবিতে সমাবেশ করতে দেখা যায়।
একই সময়ে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত ইয়াঙ্গুনে সু চির সমর্থনে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশ করে। সমাবেশে আসা বার্মিজদের হাতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। অনেকেই ‘দেশের মর্যাদা রক্ষায়’, ‘জননী সু চির পাশে দাঁড়ান’ স্লোগান দেন।
গত ১১ নভেম্বর রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে মিয়ানমারের নামে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছিল গাম্বিয়া। ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে গাম্বিয়া এ মামলা করে। নিধনযজ্ঞ পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর প্রথমবারের মতো কোনো দেশ এমন পদক্ষেপ নেয়।
রাখাইনে সংঘটিত রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সু চির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে গাম্বিয়ার করা মামলায় দেশটির পক্ষে আইনি লড়াইয়ের জন্য একটি টিম গঠিত হয়েছে। সেই টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর সু চি।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত, যা বিশ্ব আদালত হিসেবেও পরিচিত তাতে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের অভিযানের মধ্যে ছিল হত্যা, গুরুতর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সাধন, ভৌত বিনাশ বয়ে আনার মতো পরিস্থিতি তৈরি, জন্ম রোধের ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া ও জোরপূর্বক স্থানান্তর। এগুলো গণহত্যার বৈশিষ্ট। কারণ এসবের উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গা গোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়া।
রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট আগস্টে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এক কঠোর বিদ্রোহ দমন অভিযান শুরু করে। এ সময় গণধর্ষণ, হত্যা ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ জাতিগত নির্মূল অভিযান থেকে বাঁচতে সাত লাখের অধিক রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দলের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত রাখাইনে ছয় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। অত্যন্ত শোচনীয় পরিস্থিতিতে যাদের বসবাস করতে হচ্ছে।
রাখাইনে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর বর্বরতার তথ্য-উপাত্ত ও দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির ভূমিকা হেগে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) তুলে ধরেছেন গাম্বিয়ার পক্ষের মার্কিন আইনজীবী তাফাদজ পাসিপান্দো। আদালতে তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের কথা অস্বীকার করতে বলেছিলেন অং সান সু চি। ফেসবুকে ‘ফেক রেপ’ নামে যে পেজ খোলা হয়েছে সেটিও নিয়ন্ত্রণও হচ্ছে স্টেট কাউন্সিলরের দপ্তর থেকে।’ রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইসিজেতে গাম্বিয়ার করা মামলার বিচার শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। দেশের আইনি লড়াই চালাতে হেগে গেছেন মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় গাম্বিয়ার তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তিনদিনের শুনানি শুরু হয়েছে। মার্কিন আইনজীবী তাফাদজ পাসিপান্দো আরাকানে এখনও যে ৬ লাখ রোহিঙ্গা আছেন, তাদের দুর্ভোগ ও ঝুঁকির কথা আদালতে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাখাইনে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা শিবিরে রোহিঙ্গাদের আটক রাখা হয়েছে। তাদের চলাচলের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। নানা বিধি-নিষেধও আরোপ করা হয়েছে। জাতিসংঘ তদন্তে এসব উঠে এসেছে বলে জানান পাসিপান্দো। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের চাষাবাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে, খাদ্য সরবরাহ কমানো হয়েছে, বাড়ির গবাদি পশু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের অভুক্ত রাখতেই এসব করা হয়েছে। জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উঠে এসেছে। পাসিপান্দো বলেন, রাখাইনে গণহত্যার অপরাধ যাতে আর না ঘটে, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে পারে আইসিজে। শুনানিতে মিয়ানমারকে গণহত্যা বন্ধের নির্দেশ দিতে আইসিজের প্রতি আহ্বান জানায় গাম্বিয়া। দেশটির আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু এই আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আধুনিক যুগে এই গণহত্যা কোনোভাবেই গ্রহণ করা যায় না। রোহিঙ্গারাও মানুষ। খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানসহ বাঁচার অধিকার তাদের রয়েছে। রোহিঙ্গা শিশুদের অধিকার রয়েছে শিক্ষা লাভ করে ডাক্তার হওয়ার। তিনি বলেন, আমি ২০১৮ সালে কক্সবাজারে ওআইসির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করি। সেখানে গিয়ে রোহিঙ্গাদের চোখে ভয়, কষ্ট ও মানবিকতার চরম অবমাননা দেখতে পেয়েছি। সেখানে গিয়েই জানতে পেরেছি রাখাইনে গণহত্যা চালানো হয়েছে। গণহত্যা না হলে এত মানুষ পালিয়ে আসত না। দ্য হেগের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রোহিঙ্গা এবং মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়। মঙ্গলবার আদালতে গাম্বিয়ার বক্তব্য উপস্থাপনের পর বুধবার মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে গাম্বিয়া এবং বিকেলে মিয়ানমার প্রতিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন ও চূড়ান্ত বক্তব্য পেশের সুযোগ পাবে। গাম্বিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। মিয়ানমারের নেতৃত্বে থাকছেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। শুনানির শুরুতে আইসিজের প্রেসিডেন্ট আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ শুনানির প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিচারকক্ষে উপস্থিত সুধীজনদের অবহিত করেন। বাংলাদেশ এই মামলার সরাসরি অংশগ্রহণকারী পক্ষ না হলেও পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকের নেতৃত্বে কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের একটি প্রতিনিধি দল ওই শুনানিতে উপস্থিত রয়েছেন। মামলার শুনানি উপলক্ষে হেগ শহরে গাম্বিয়া ও মিয়ানমার ছাড়াও অন্য কয়েকটি দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা হাজির হয়েছেন। মামলায় গাম্বিয়াকে সমর্থন দিতে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) কূটনীতিকেরাও উপস্থিত হয়েছেন। এছাড়াও বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী এবং মিয়ানমার সরকারের সমর্থকেরাও উপস্থিত রয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হলেন সোমালিয়ার বিচারপতি আবদুলকোয়াই আহমেদ ইউসুফ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট চীনের বিচারপতি ঝু হানকিন। বিচারকদের নির্বাচন করেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদ। অন্য সদস্যরা হলেন—স্লোভাকিয়ার বিচারপতি পিটার টমকা, ফ্রান্সের বিচারপতি রনি আব্রাহাম, মরক্কোর মোহাম্মদ বেনুনা, ব্রাজিলের আন্তোনিও আগুস্তো কানকাদো ত্রিনাদে, যুক্তরাষ্ট্রের জোয়ান ই ডনোহু, ইতালির গর্জিও গাজা, উগান্ডার জুলিয়া সেবুটিন্দে, ভারতের দলভির ভান্ডারি, জ্যামাইকার প্যাট্রিক লিপটন রবিনসন, অস্ট্রেলিয়ার রিচার্ড ক্রর্ফোড, রাশিয়ার কিরিল গিভরগিয়ান, লেবাননের নওয়াফ সালাম এবং জাপানের ইউজি ইওয়াসাওয়া।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply