বিদেশি কূটনীতিকদের সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ‘বিতর্ক’
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশন ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরো ৯টি দেশের ৭৪ জনের নাম ঘোষণা করেছে। এদের মধ্যে বিদেশি নাগরিক ৪৬ জন এবং বাংলাদেশি নাগরিক ২৮ জন। এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের কয়েকটি ধারা তুলে ধরে কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষণ করার বিষয়ে আপত্তি তুলেছে আওয়ামী লীগ।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও কূটনীতিকরা বলছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচন সেহেতু এ নির্বাচন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোনো রাষ্ট্রদূত পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না। পর্যবেক্ষক হতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ সংস্থার অনুমতি লাগবে বলেও জানান তারা।
রাত পোহালেই ঢাকার দুই সিটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন নির্বাচন। ঠিক এ সময়েই হঠাৎ আলোচনায় নির্বাচনে বিদেশি কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষক হওয়ার ইস্যুটি।
এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনে যান প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। সেখানে তারা প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর বিদেশী কূটনীতিকদের পর্যবেক্ষক হওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু শর্ত আবারও তুলে ধরেন।
কিন্তু তার আগেই নির্বাচন কমিশন ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরো ৯টি দেশের ৭৪ জনকে পর্যবেক্ষক ঘোষণা দিয়ে নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। এদের মধ্যে বিদেশি নাগরিক ৪৬ জন এবং বাংলাদেশি নাগরিক ২৮ জন।
এদিকে একটি অনলাইন গণমাধ্যম একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়, যে কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা পর্যবেক্ষক হতে আগ্রহী সেসব দেশের দূতাবাসের বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগ জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন বলছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন যেহেতু স্থানীয় সরকার নির্বাচন সেহেতু এ নির্বাচন বাংলাদেশে নিযুক্ত কোনো রাষ্ট্রদূত পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না। পর্যবেক্ষক হতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের নির্বাচনী পর্যবেক্ষণ সংস্থার অনুমতি লাগবে বলেও জানান তিনি।
ছহুল হোসাইন বলেন, বাংলাদেশের বিদেশি দূতাবাসে কিছু কিছু বাংলাদেশিরা কাজ করে। তাদের অবজারভেশন হিসেবে যদি ওই দেশ হয় তাহলে সেটা বেআইনি হবে।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মুবিন চৌধুরী বলছেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কখনো আপত্তি ছিল না। বাংলাদেশের যে দীর্ঘদিন প্রথা প্রচলিত সেটা হলো বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনে আপত্তি কখনই ছিল না।
তবে সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান মনে করেন, রাষ্ট্রদূত বা তাদের কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষক হতে পারবেন। তবে নির্বাচন নিয়ে জনসম্মুখে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে পারবেন না।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান বলেন, নির্বাচনের আগে বা পরে তারা যেন কোনো মন্তব্য না করেন।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি দূতাবাসগুলোর কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ কাম্য নয় বলেও জানান সরকারের সাবেক এ কূটনীতিক।
No comments: