শিশু বিকাশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪৩ তম, শীর্ষে নরওয়ে
শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ এবং ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত সহায়ক পরিবেশ দেয়ার দিক থেকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৩তম বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই তালিকায় সবচেয়ে ভাল অবস্থান বিবেচনায় শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে।
বিশ্বের ১৮০টি দেশের উপর করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে সংস্থাটি।
কার্বন নির্গমনের কারণে পরিবেশের অবক্ষয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও শোষণমূলক বাজার ব্যবস্থার জন্য বিশ্বের প্রত্যাকটি শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ এবং ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা।
জাতিসংঘের শিশুদের তহবিল ইউনিসেফ এবং ল্যানসেট কমিশনের সহায়তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষা, পুষ্টি এবং শিশুমৃত্যু, স্বাস্থ্য ও শিশু বেড়ে ওটার পরিবেশ ইত্যাদি বিবেচনা করে বিশ্বের ওই ১৮০টি দেশের একটি তালিকা করা হয়ছে।
এমনকি ওই গবেষণায় দেশগুলোর কার্বন নির্গমনের মাত্রাকেউ বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ এবং ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দেয়ার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৩, পাকিস্তান ১৪০ ও ভারত ১৩১তম অবস্থানে রয়েছে। শিশু বিকাশের সহায়ক পরিবেশের দিক থেকে তালিকায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে নরওয়ে। আর ১৮০তম দেশ হিসেবে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল আফ্রিকা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্ষতিকারক বিজ্ঞাপনগুলি শিশুদের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ এবং কোমল পানীয়তে উৎসাহিত করছে। যার ফলে বাচ্চারা ঝুঁকিতে পড়ছেন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ এবং ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ দেয়ার দিক দিয়ে নরওয়ের পরের দশটি দেশ হিসেবে যথাক্রমে রয়েছে, কোরিয়া, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, ডেনমার্ক, জাপান, বেলজিয়াম, আইসল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য।
ওই গবেষণায় কার্বন নির্গমনের দিকে দিকে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় বুরুন্ডি এবং সবচেয়ে কম কার্বন নির্গমন করে কাতার। কার্বন নির্গমনের দিক দিয়ে বুরুন্ডির পর প্রথম সারির দশটি দেশ হলো, চাদ, সোমালিয়া, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, মালোউ, রুয়ান্ডা, মালি, নাইজার, মাদাগাস্কার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০ বছরে টিকে থাকা, পুষ্টি ও শিক্ষাক্ষেত্রে নাটকীয় উন্নয়ন ঘটলেও ‘আজ শিশুরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে। প্রত্যেকটি শিশুর ‘অস্তিত্ব হুমকির মুখে’।
এতে বলা হয়েছে, ‘২০১৫ সালে বিশ্বের দেশগুলো টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় একমত হয়েছিল। প্রায় পাঁচ বছর পর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কিছু দেশ অনেক বেশি উন্নয়ন করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশগত অবক্ষয়, অভিবাসী জনগোষ্ঠী, সংঘাত, ব্যাপক বৈষম্য এবং দানবীয় বাণিজ্য চর্চা প্রত্যেকটি দেশে শিশুদের স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যতকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
দানবীয় বাণিজ্য চর্চার মধ্যে রয়েছে শিশুদের আকৃষ্টকারী ফাস্ট ফুড ও চিনিজাত পানীয়ের বাজারজাত। এগুলো শিশু স্থূলতার হার ১১ গুণ বাড়িয়েছে। এই হিসেবে ১৯৭৫ সালে যেখানে স্থূল শিশুর সংখ্যা ছিল এক কোটি ১০ লাখ সেখানে ২০১৬ সালে এটি ১২ কোটি ৪০ লাখে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বর্তমানের অনুমানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বৈশ্বিক তাপমাত্রায় ২১শতকে এসে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বাস্থ্যর বিপর্যয়কর পরিণতি ঘটবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের স্তর, মারাত্মক অপুষ্টি এবং ম্যালেরিয়ার মতো সংক্রামক রোগও বৃদ্ধি পাবে।

No comments: