করোনা বিদায় হতে ঢের বাকি, আমরা এখনও শুরুতে আছি’-- বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি
দাপিয়ে বেড়ানো করোনা ভাইরাসে নাজেহাল বিশ্ববাসী। কবে এ থেকে রেহাই পাবেন মানুষ সেটা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। তবুও কেউ আশার খবর শোনাতে পারছে না।
এ পরিস্থিতিতে ভাইরাসের মহামারীর বিদায় নিতে ঢের বাকি বলে আবারো সতর্ক করেছেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি। বলেন, কোথায় এর শেষ হবে? আমরা এখনও এর শুরুতে আছি।
বায়োটেকনোলজি ইনোভেশন অর্গানাইজেশনের আন্তর্জাতিক এক সম্মেলনে মঙ্গলবার (৯ জুন) রেকর্ড করা এক ভিডিও বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় অ্যালার্জি ও সংক্রামক রোগের ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফাউচি করোনাভাইরাসকে তার ‘সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্ন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, এখন আমরা এমন কিছু দেখছি যা আমার সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্ন হয়ে এসেছে। চার মাসের ব্যবধানে এটি বিশ্বকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে।
ইবোলা ভীতিজনক ছিল তবে ইবোলা কখনোই সহজে সংক্রামিত হতে পারে না। ইবোলার প্রাদুর্ভাব সবসময় একেবারেই স্থানীয় হয় বলেও জানান তিনি।
এইচআইভিকে গুরুত্ব দিয়েও ফাউচি জানান, অনেকেই এইডসকে হুমকি মনে করে না কারণ এটা নির্ভর করে আপনি কে, আপনি কোথায় আছেন এবং আপনি কোথায় থাকেন’ -এ বিষয়গুলোর ওপর।
অতীতে ফাউচিকে তিনি সবচেয়ে ভয় পান এমন একটি সম্ভাব্য রোগ সম্পর্কে বর্ণনা করতে বলা হলে তিনি বলতেন, রোগটি হবে নতুন ধরনের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ যা হয়তো কোনো পশু থেকে মানুষে আসবে এবং যা হবে খুবই উচ্চমাত্রায় ছড়াবে।
এসব বৈশিষ্ট্যের কয়েকটি রোগ আছে, এমন মহামারি বিশ্ব অতীতেও দেখেছে। তবে ফাউচি জানান, কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে সবগুলো বৈশিষ্ট্যই একত্রিত হয়েছে।
এটি অপ্রত্যাশিত গতিতে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবং এটি এখনও শেষ হয়নি।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগৃহীত উপাত্ত অনুযায়ী মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৭২ লাখের বেশি মানুষ।
ফাউচি জানান, রোগীদের ওপর কোভিড-১৯ এর দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু জানার বাকি। ভাইরাসটি নিয়ে এখনও পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই বলে বিজ্ঞানীরা জানেন না সেরে ওঠা রোগীদের ছয় মাস পর কী হবে। আমরা পুরোপুরি সেরে ওঠা বা আংশিক সেরে ওঠার মাত্রা জানি না, সুতরাং আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।
তিনি জানান, কোভিড-১৯ রোগীদের কারও উপসর্গ নেই আবার কারও তীব্র অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে যা মৃত্যুর কারণও হচ্ছে। ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এমনকি কম বয়সীদেরও স্ট্রোক হচ্ছে। আবার শিশুদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। কোথায় এর শেষ হবে? আমরা এখনও এর শুরুতে আছি।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের লড়াইয়ে টিকার অপেক্ষায় আছেন ফাউচি তিনি বলেন, পুরো বিশ্বের জন্য আমাদের বিলিয়ন-বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে।
No comments: