সাহেদ করিম থেকে মোহাম্মদ সাহেদ
ছিলেন সাহেদ করিম, হঠাৎই হয়ে যান মোহাম্মদ সাহেদ। পরিচয় বদলাতে আশ্রয় নেন, নানা ছলচাতুরির। কিন্তু, কেন এত তোড়জোড়?
রিজেন্ট কেলেঙ্কারির পর একের পর এক বেরিয়ে আসছে বহুরূপির সাহেদ করিম কিংবা মোহাম্মদ সাহেদের নানা অপরাধের কেচ্ছাকাহিনী।
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে ২০১৮ সালে তিনি যে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছেন তাতে তার নাম ছিলো সাহেদ করিম। জন্ম ১৯৭৮ সালের ২ জুন। কিন্তু এই নাম পরিচয় পরিবর্তনে হঠাৎই তৎপর অর্ধশতাধিক মামলার আসামী সাহেদ করিম।
চ্যানেল 24-এর অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসে এনআইডি বিভাগে নাম ও বয়স পরিবর্তনের আবেদন করেন সাহেদ করিম। শুধু একটি জন্মসনদ আর ইলিশ মিডিয়ামের সার্টিফিকেটের ফটোকপি দিয়েই এই আবেদন করেন তিনি।
এই তথ্যের সুত্র ধরে ঢাকা উত্তর সিটির ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিলে করা আবেদনের সত্যতা যাচাই করতে বেশ বেগ পোহাতে হয় চ্যানেল 24-এর অনুসন্ধান টিমকে। শেষ পর্যন্ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির পর অনেক চেষ্টায় পাওয়া যায় সেই আবেদনপত্রটি।
জন্ম সনদের আবেদনে শুধু একটি পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দেন সাহেদ। এনআইডিতে স্নাতক পাশ দেখালেও এই আবেদনে তার কিছুই যুক্ত করা হয় নি। এমনকি সাতক্ষীরায় জন্ম নেয়া সাহেদ, আবেদনে জন্ম স্থান পরিবর্তন দেখান ঢাকা। তবে সেই আবেদনপত্রে লেখা একটি শব্দে চোখ আটকায়। টকশোর পরিচয় দিয়েই তিনি প্রভাব খাটিয়েছিলেন অবৈধভাবে সনদ নিতে।
পরিচয়পত্র সংশোধনে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতার যে তথ্য দিয়েছেন তার সত্যতা জানতে উত্তরার থানা নির্বাচন অফিসে যায় চ্যানেল 24। জানা যায়, ক্ষমতা দেখায়ে জোর করে পরিচয়পত্র সংশোধন করে নেয় সাহেদ। তবে ঐ সার্টিফিকেটের বিষয়ে দেশে ইংলিশ মিডিয়ামের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিলের কাছে থেকে কোন তথ্য মেলেনি।
অথচ তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন সাহেদ পত্নী। অনুসন্ধান বলছে, গত বছরের ২৯ এপ্রিল জন্ম সনদ নেয়ার পাচ দিনের মাথায় তিনি শিক্ষা সনদের কপি দিয়ে নাম বদলের আবেদন করেন সাহেদ। এরপরই সাহেদ করিম থেকে হয়ে যান মোহাম্মদ সাহেদ। শুধু নাম নয়, বয়সও বাড়িয়েছেন ৩ বছর। এমনকি জন্মতারিখও।
কিন্তু কেনই বা বদলে ফেললেন পরিচয়? প্রতারণার ঢাল হিসেবে নাম পাল্টানো মোহাম্মদ সাহেদের এই পরিচয়ই কি শেষ? এমন প্রশ্নই উঠছে ঘুরেফিরে।
No comments: