Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » নদীতে উচ্ছেদ অভিযান, সড়কে ধর্মঘটের ডাক!




নদীতে উচ্ছেদ অভিযান, সড়কে ধর্মঘটের ডাক!

গত বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় ঢাকার চারপাশের নদী দখলমুক্তের অভিযান। স্বাধীনতার পর নদীরক্ষার সবচেয়ে বড় ও সাড়াশি এ অভিযানে নেতৃত্ব দেয় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ। উচ্ছেদ অভিযানে এ পর্যন্ত ঢাকার চারপাশের নদী ও নদীর তীর দখল করা প্রায় ৭ হাজার অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিয়ে প্রায় ১২৫ একর নদীর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়েছে। তবে এত বড় উচ্ছেদ অভিযানের পরও দখলদাররা বারবার নদীর জায়গা পুনর্দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে গত বছর গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় তুরাগ তীরের বড়বাজার এলাকাতেও অভিযান চালিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা। তবে জায়গাটি ট্রাকস্ট্যান্ড বানিয়ে ফের দখলের অভিযোগে গত ২৬ আগস্ট পুনরায় সেখানে রাখা ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক নিলামে বিক্রি করেছিল বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির নদী রক্ষার এমন অভিযানে জায়গাটি হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন পরিবহন শ্রমিকদের নেতারা। এ অভিযানে জব্দ করা ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক নিলামে বিক্রি করায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন-এমন অভিযোগ এনে নয় দফা দাবিতে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তারা। আগামী ১২ ও ১৩ অক্টোবর বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। নয় দফা দাবির মধ্যে আছে, ২৬ আগস্ট বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৭টি ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক ভাঙচুর ও মালামালসহ চারটি ট্রাক নিলাম করায় ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। উক্ত ঘটনার সঙ্গে গড়িত বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক ( ঢাকা বন্দর) ও কর্মরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অপসারণ ও শাস্তি দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে মহাসড়কের পাশে এবং জেলায় জেলায় আধুনিক ট্রাক টার্মিনাল ও বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে হবে। দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত কারণে তদন্ত ব্যতিরেকে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের বন্ধ করতে হবে। এবং বিআইডব্লিউটিএ’র বিভিন্ন ফেরিঘাট ও টার্মিনাল ঘাটে ইজারা দেওয়া বন্ধ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করতে হবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি। বিআইডব্লিউটিএ’র সূত্র বলছে, নদীর জায়গা পুনরুদ্ধারে গাবতলী বেড়িবাঁধের ওই জায়গা আগেও তিনবার অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু বারবার ওই জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছিল। সবশেষ গত ২৬ আগস্ট সেখানে অভিযান চালিয়ে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা কয়েকটি গাড়ি এক্সাভেটর দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং সচল কয়েকটি গাড়ি নিলামে বিক্রি করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নদী দখলদারদের একটি মহল ট্রাক শ্রমিকদের বিআইডব্লিউটিএ’র বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তুলছে বলে দাবি বিআইডব্লিউটিএ’র। এ বিষয়ে উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিধি মোতাবেক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। একটি পক্ষের প্ররোচণায় এই ধর্মঘট ডাক হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংস্থাটির একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, মূলত ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর তীরে চালানো উচ্ছেদ অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা চক্রান্ত হচ্ছে। যার কলকাঠি নাড়ছেন মিরপুর এলাকার একজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ। যিনি নিজেও তুরাগ নদ দখল করে অসংখ্য ব্যবসায়িক স্থাপনা গড়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই কর্মকর্তা। মূলত নদী দখল করে গড়ে তোলা তার অবৈধ স্থাপনা বাঁচাতেই তিনি ট্রাক শ্রমিকদের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পিছনে লেলিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি তার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক সময় নিউজকে জানান, নদীর জায়গায় গাড়ি রাখা বেআইনি। নদীর জায়গা থেকে এই ট্রাকগুলো সরানোর জন্য বারবার বলা হয়েছে, মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু তারা শোনেননি। নিলাম ডাকার আগেও তারা এসব গাড়ি সরিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু সরাননি বা কোনো ধরনের সহায়তাও করেন নি। তিনি আরো বলেন, সরকারের উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে ধর্মঘটে যাওয়া পুরোপুরি বেআইনি। কমডোর সাদেক আরও বলেন, ভবিষ্যতে নদীর জায়গায় আর পার্কিং করা যাবে না এমন শর্তে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আইনগতভাবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তারা এই শর্ত মেনেও নিয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএ’র এমন বক্তব্যের পরও ধর্মঘট কেন- জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান বলেন, যেহেতু এই কর্মসূচিতে আগে ঘোষণা করা হয়েছে, তাই এটি পালিত হবে। কারণ, এখানে বাকি আরও ছয়টি দাবি আছে। সেগুলো অন্য সরকারের মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই পরিবহন নেতা বলেন, ধর্মঘটের আগে বিআইডব্লিউটিএ’র সঙ্গে তারা আরেক দফা বৈঠকে বসবেন। তখন চূড়ান্ত সমাধান হলে বিআইডব্লিউটিএ সংশ্লিষ্ট তিনটি ধারা বাদ দেওয়ার বিষয়ে তারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। সরকারের নির্দেশে করা উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে এমন ধর্মঘটের ডাক দেয়া বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ হেলালুদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের নির্দেশেই ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে যে কোনো উচ্ছেদ অভিযান হয়ে থাকে। সেই অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কেউ যদি ধ্বংসাত্মক কোনো কর্মকাণ্ডের ডাক দেয়, তা হবে দুঃখজনক। তবে উচ্ছেদ অভিযানে কোনো ব্যত্যয় ঘটে থাকলে তার জন্য তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বলেও জানান হেলালুদ্দিন আহমেদ। উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে গিয়ে ট্রাক শ্রমিকদের এমন ধর্মঘট ডাকার বিষয়টিকে চরম ধৃষ্টতা উল্লেখ করে পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসে সাধারণ ছুটির সময় যখন পরিবহন শ্রমিকরা না খেয়ে দিন যাপন করেছে তখন এসব শ্রমিক নেতাদের দেখা যায় নি। অথচ তীর রক্ষা করে যখন ঢাকার চারপাশের নদী তার হারানো রূপে ফেরা শুরু করেছে তখন এসব শ্রমিক নেতারা সে কাজকে বাধাগ্রস্ত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। ইকবাল হাবিব আরো বলেন, এই শ্রমিক সংগঠনের পিছনে কারা কলকাঠি নাড়ছেন তা সরকারকে খতিয়ে দেখে তাদের মুলোৎপাটন করা উচিত। নিরীহ শ্রমিকদের কাছ থেকে এসব শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে আসছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ধর্মঘটের ডাককে কোনোভাবেই আমলে না নিয়ে এসব শ্রমিক নেতারা কাদের স্বার্থ উদ্ধারে মাঠে নেমেছেন তা খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, শ্রমিক সংগঠনের এই নদী ও পরিবেশ বিরোধী ধর্মঘটকে যদি প্রশ্রয় দেয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতে সরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থাগুলি যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে নিরুৎসাহিত বোধ করবেন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply