Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » পৃষ্ঠা বাড়িয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বই বিক্রি অ্যাকশনে এনসিটিবি, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ




পৃষ্ঠা বাড়িয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বই বিক্রি অ্যাকশনে এনসিটিবি, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ পৃষ্ঠা ও দাম বাড়িয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বই বিক্রির ঘটনায় অ্যাকশনে নেমেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া বইয়ের অনুমোদন বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছে। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে।

যুগান্তরকে বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকের যেসব বই বাজারজাত করতে বেসরকারি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেগুলোর প্রতিটির পৃষ্ঠাসংখ্যা ও দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রেই ব্যত্যয় ঘটিয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এনসিটিবির আইন অনুযায়ী এই কাজ শাস্তিমূলক অপরাধ। ব্যবস্থা নেয়ার আগে নিয়মানুযায়ী সংশ্লিষ্টদের শোকজ করতে হয়। সেটি করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে জবাব দেবেন তারা। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এনসিটিবির এই পদক্ষেপকে পক্ষপাতদুষ্ট ও বিতর্কিত বলে উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। ৩৫টি বিষয়ের প্রতিটি একাধিক প্রতিষ্ঠানকে ছাপিয়ে বাজারজাত করতে অনুমোদন দেয়া হয়। এতে প্রতিষ্ঠান সংখ্যা দাঁড়ায় অন্তত ৭০টি। তবে কোনো কোনো বই একাধিক প্রতিষ্ঠান বাজারজাতের কাজ পেয়েছে। যেমন, আইসিটি বইটি বাজারজাত করছে ৫টি প্রতিষ্ঠান। সেই হিসাবে শতাধিক প্রতিষ্ঠান এই স্তরের বই বাজারজাত করছে। আর প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই বইয়ের পৃষ্ঠা ও দাম বাড়িয়ে নিয়েছে। কিন্তু এনসিটিবি শোকজ করেছে মাত্র ৭টি প্রতিষ্ঠানকে। বাকিগুলোকে রহস্যজনক কারণে ছাড় দেয়া হচ্ছে। ৪ অক্টোবর যুগান্তরে ‘অনলাইনে ক্লাস শুরু আজ : উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যবই নিয়ে নানা কারসাজি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাতে ১৫টি বইয়ের ওপর চালানো অনুসন্ধানের তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা গেছে, এনসিটিবি অনুমোদিত আইসিটি বইয়ে গড়ে পৃষ্ঠাসংখ্যা ২২০-২৪২। আর ১৪ আগস্ট বাজারে পাওয়া বইগুলোর পৃষ্ঠাসংখ্যা ৫০০-৬৮০। পদার্থবিজ্ঞানের প্রথম পত্রে এনসিটিবির অনুমোদিত বইয়ে পৃষ্ঠা ৩৩০-৩৬৩। বাজারে পাওয়া বইয়ে পৃষ্ঠা ৬০০-৮০০। পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রে ৩৩০-৩৬৩ পৃষ্ঠার বদলে বাজারে ৬০০-৮৫০ পৃষ্ঠার বই পাওয়া গেছে। এভাবে বাজারে আরও আছে, রসায়ন প্রথম পত্রে ২৫০-২৭৫ পৃষ্ঠার স্থলে ৫০০-৭০০; দ্বিতীয় পত্রে ২৫০-২৭৫-এর স্থলে ৬০০-৮০০ পৃষ্ঠা; জীববিজ্ঞান প্রথম পত্রে ২৩০-২৪০-এর স্থলে ৪৫০-৫০০; দ্বিতীয় পত্রে ২৩০-২৪০-এর স্থলে ৪০০-৪৫০; হিসাববিজ্ঞান প্রথম পত্রে ৩০০-৩৩০ পৃষ্ঠার বদলে ১০০০-১৩০০; দ্বিতীয় পত্রে ৩০০-৩৩০-এর স্থলে ১০০০-১৪০০; উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন প্রথম পত্রে ২২০-২৪০-এর স্থলে ৬০০-৭২৫; দ্বিতীয় পত্রে ২০০-২২০-এর স্থলে ৬০০-৭২৫; অর্থনীতি প্রথম পত্রে ২৩০-২৪০-এর স্থলে ৪৫০-৬০০; দ্বিতীয়পত্রে ২৩০-২৪০-এর স্থলে ৪০০-৪৫০; ভূগোল প্রথম পত্রে ২৫০-২৭৫-এর স্থলে ৩০০-৪০০ আর দ্বিতীয় পত্রে ২৫০-২৭৫-এর স্থলে ৩০০-৪০০ পৃষ্ঠার বই। এসব বইয়ের প্রতিষ্ঠানকেও শোকজ করা হলে সংখ্যা দাঁড়ায় অন্তত ১৫টি। এনসিটিবির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কয়েকজন কর্মকর্তার সিন্ডিকেট আছে। তাদের অপছন্দের প্রতিষ্ঠান দেখেই শোকজ করা হয়েছে। অথচ প্রয়োজনীয় তদন্ত করে দায়ী প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করে লাগাম টেনে ধরা সম্ভব বলে শিক্ষার্থী ও সরকার উভয়ই লাভবান হতে পারত। কেননা, পৃষ্ঠা ও দাম বাড়ানোর কারণে শিক্ষার্থীদের লাখ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে। অপরদিকে বাড়তি টাকার ওপর সরকার রাজস্বও পাচ্ছে না। যদি বাড়তি দরসহ বইয়ের অনুমোদন নেয়া হতো, তাহলে এনসিটিবি বাড়তি রাজস্ব পেত। এনসিটিবির এই পদক্ষেপকে পক্ষপাতদুষ্ট এবং আত্মপক্ষ সমর্থন ছাড়াই ব্যবস্থা বলে দাবি করেছেন প্রকাশকরাও। নাম প্রকাশ না করে একজন প্রকাশক দাবি করেন, শতাধিক প্রতিষ্ঠান বই নিয়ে কারসাজি করলেও হাসান বুক হাউস, নাবিশা পাবলিকেশন্স, বাশার প্রকাশনী, কোয়ালিটি পাবলিকেশন্স, সিসটেক পাবলিকেশন্সসহ হাতে গোনা কয়েকটিকে শোকজ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা যুগান্তরকে বলেছেন, পক্ষপাতমূলক আচরণের কোনো কারণ নেই। শোকজ দেয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার কাজটি চলমান থাকবে। যেসব প্রতিষ্ঠানকে বইয়ের কাজ দেয়া হয়েছে, তাদের প্রতিটির কাছে ৪ নভেম্বরের মধ্যে অনুমোদিত বইয়ের কপি তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজার থেকেও এনসিটিবি বই সংগ্রহ করবে। এরপর সেগুলো যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বই জমা দেয়ার আগেই ব্যবস্থা : প্রকাশকরা বলছেন, এনসিটিবি সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রকাশিত বইয়ের কপি চেয়েছে। ৪ নভেম্বরের মধ্যে তা জমা হবে। কিন্তু বই জমা দেয়ার আগেই ২৯ অক্টোবর হুট করে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি প্রকাশক শ্যামল পাল যুগান্তরকে বলেন, যেহেতু আমরা এখনও বই জমা দিইনি, তাই তারা কীসের ভিত্তিতে এ পদক্ষেপ নিল, তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, নিশ্চিত হয়েই সংশ্লিষ্টদের শোকজ করা হয়েছে। বাকিদের দেয়া কপি এবং বাজারে পাওয়া কপির ওপর পর্যালোচনা করে পদক্ষেপ নেয়া হবে। প্রয়োজন আছে বাড়তি পৃষ্ঠার : এদিকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, এনসিটিবি যেসব বইয়ের অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলোর পৃষ্ঠাসংখ্যা তুলনামূলক কম। যেমন, হাসান বুক হাউসকে দেয়া অর্থনীতি প্রথম পত্রের অনুমোদিত বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা (সাদা) ২২০ এবং দাম ১৩০ টাকা। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি ৬১৬ পৃষ্ঠায় বের করে ২৮৫ টাকা করে নিচ্ছে। বইয়ের কাগজের মানও নিম্ন। এই প্রতিষ্ঠানকেই জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র ২৭০ পৃষ্ঠা (সাদা) ১৫৩ টাকায় বিক্রির অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু ৫৪০ পৃষ্ঠায় বের করে তারা ২৬৫ টাকায় বিক্রি করছে। এভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজেদের বইয়ের পৃষ্ঠার সমান্তরালে দর বাড়িয়ে দিয়েছে। জানা গেছে, বই বাজারজাত করার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান চালাকির আশ্রয় নিয়েছে। বর্ধিত কলেবরে প্রকাশিত বই তারা বাজারজাত করছে। বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া গেছে আইসিটি বিষয়ক বইয়ের ওপর সাম্প্রতিক বিতর্কের ঘটনায়। ভয়েজার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পৃষ্ঠা ও দাম বাড়ানোর ঘটনায় অনুমোদন বাতিল করা হয়। তখন প্রতিষ্ঠানটি দুই ধরনের বই এনসিটিবিতে দাখিল করে। এ প্রসঙ্গে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, এনসিটিবির অনুমোদিত বই সংশ্লিষ্ট প্রকাশকরা বাজারে দিয়েছেন এবং তা আছে। কিন্তু এনসিটিবি যে বই অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলোর বাজারে চাহিদা কম। কেননা, সীমিত পরিসরে পাঠ ভালোভাবে বা বিস্তারিত বুঝিয়ে তৈরি নয়। এটা বুঝতে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হয়। শিক্ষকরাও এসব বই শিক্ষার্থীদের পড়ার পরামর্শ দেন না। এ কারণে বিস্তৃত পরিসরে বই রচনা করা হয়েছে। শিক্ষকদের অনেকে আরিফ হোসেন ছোটনের উল্লিখিত মত পোষণ করেন। ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘তার বক্তব্য প্রকাশকদের পক্ষে গেলেও সত্যি কথা হচ্ছে, এনসিটিবির বই শিক্ষার্থীর জ্ঞানতৃষ্ণা মেটায় না। অপ্রতুল ও সীমিত পরিসরে রচিত। এই বই পড়ে পাস করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করা কঠিন।’ তিনি আরও বলেন, সারা দেশে সমান দক্ষতার শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। অনেক শিক্ষকের কাছেও এসব বই প্রত্যাশিত চাহিদা পূরণ করে না। তাই এনসিটিবির উচিত, বাস্তব চাহিদা বিবেচনায় বই অনুমোদনের ব্যবস্থা করা। এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, সরকারিভাবে নির্ধারিত কারিকুলামের ওপর বেসরকারিভাবে রচিত বই অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এনসিটিবির বিশেষজ্ঞ কমিটি এটি করেছে। ‘টেক্সটবই’ যে আকারের হওয়া দরকার-সেটাই করা হয়েছে। মানহীন ও চাহিদাপূরণ করবে না-এমন বই অনুমোদন দেয়া হয়নি।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply