কেমনে কাটবে ১৩টি দিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র ১৩ দিন বাকি। তবে বুধবার দেশটির পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প–সমর্থকদের হামলার পর অনেক মার্কিনির কাছেই এই ১৩ দিন অনেক বেশি দীর্ঘ মনে হতে পারে। কারণ, ক্ষুব্ধ ট্রাম্প যেকোনো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারেন। শুধু তা–ই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ২২০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন ‘রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ আচরণ তাঁর ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে হোয়াইট হাউসে বড় ধরনের একটি সংকট তৈরি করেছে। বিশেষ করে ট্রাম্পের ‘অতি অনুগত’ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ফাটলে এই সংকট যেন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের আগমুহূর্তে বিবৃতি দিয়ে পেন্স জানান, নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই। কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ফলাফল আটকে দিতে পেন্সকে চাপ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। বিজ্ঞাপন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে একটি ‘কালো দিন’ রচনা করে এবং পরাজয় স্বীকার না করে গণতন্ত্রকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে ট্রাম্প হঠাৎ করেই নিয়মানুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন। ২০ জানুয়ারি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে ট্রাম্পের হঠাৎ এ অবস্থান পরিবর্তনে অনেকেই আস্থা রাখতে পারছেন না। তাঁদের কেউ কেউ ভাবছেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের যে ঘোষণা ট্রাম্প দিয়েছেন, তা যতটা না দায়িত্ববোধ থেকে, তার চেয়ে বেশি ব্যক্তিস্বার্থ থেকে। সম্ভবত হোয়াইট হাউসে কর্মীদের পদত্যাগের হিড়িক এবং অভিশংসন অথবা মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করা ঠেকাতেই তিনি এ পদক্ষেপ নিয়েছেন। সংবিধানের এ সংশোধনীর ৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট যদি দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের সিংহভাগ একমত হয়ে প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে পারেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর চোখ রাখতে হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর। কারণ, তিনি অসংযত আচরণ করছেন। ডগলাস ব্রিঙ্কলে, মার্কিন ইতিহাসবিদ বুধবারের ঘটনার সূত্রপাত ট্রাম্পের সমাবেশ থেকে। এ সমাবেশে তিনি সমর্থকদের প্রতি ক্যাপিটল ভবনে পদযাত্রার আহ্বান জানান। এরপরই ওই সমর্থকেরা ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালান। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করা। কিন্তু বিষয়টি শেষ পর্যন্ত ওই পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটল ভবনের দরজা–জানালা ভাঙচুর করেন, প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেট অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়েন। গুলি, সংঘর্ষ, প্রাণহানি—সবই ঘটেছে এদিন। অনেকেই বলছেন, বুধবারের ঘটনাটি ছিল ট্রাম্পের অভ্যুত্থানচেষ্টা। অবশ্য কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন শেষে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। এর কিছু পরই ট্রাম্প একটি লিখিত বিবৃতি দেন, যাতে তিনি ২০ জানুয়ারি নিয়ম মেনে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেন। তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ থেকে সরে আসেননি তিনি। ট্রাম্প লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রেসিডেন্টের মেয়াদের উজ্জ্বলতম প্রথম অধ্যায় শেষ হচ্ছে। তবে এখান থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে মহান করার লড়াইয়ের শুরু।’ ট্রাম্প যুগের সমাপ্তি আসন্ন হলেও শেষ এই কটা দিন নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়ের। কারণ, ট্রাম্পের মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে এখন। তাঁর উসকানি দেওয়ার প্রবণতার কারণেই ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর টুইটার, ফেসবুক ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিজেদের প্ল্যাটফর্মে তাঁকে নিষিদ্ধ করেছে। এদিকে হোয়াইট হাউসের ভেতরে বুধবার রাতটা কেটেছে ট্রাম্পের ক্ষোভে ফেটে। ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার বিষয়টিকে এখন তিনি দেখছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে। এদিকে রিপাবলিকান সূত্র বলেছে, ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করার বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেছেন বুধবার। এ ছাড়া প্রতিনিধি পরিষদে কয়েকজন ডেমোক্র্যাট সদস্য ট্রাম্পকে অভিশংসনেরও দাবি তুলেছেন। বুধবারের সংকট কাটলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন, ‘নিয়ন্ত্রণহীন’ একজন প্রেসিডেন্ট যেকোনো মুহূর্তে আবার কোনো সংকটের জন্ম দেবেন। এ ব্যাপারে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, ‘তিনি পাগল হয়ে গেছেন।’ বুধবারের ঘটনাটি অভ্যুত্থানচেষ্টার মতোই, যা যুক্তরাষ্ট্র এর আগে কখনো দেখেনি। চার্লস রামসে, ওয়াশিংটনের পুলিশ বিভাগের সাবেক প্রধান মার্কিন ইতিহাসবিদ ডগলাস ব্রিঙ্কলে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, শৃঙ্খলাহীন ও ক্ষুব্ধ একজন প্রেসিডেন্ট পরবর্তী দুই সপ্তাহে যেকোনো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারেন। তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর চোখ রাখতে হবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর। কারণ, তিনি অসংযত আচরণ করছেন।’ বিশ্লেষকেরা বলছেন, ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প–সমর্থকদের হামলার ঘটনায় ভীতিকর এক সত্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। আর তা হলো ‘উন্মাদ’ এক প্রেসিডেন্ট জাতীয় আইনসভার ওপর হামলার পট রচনা করেছেন। তিনি রাজনৈতিক বিভেদের ক্ষত এতটাই গভীর করেছেন যে তাঁর বিদায়ের দীর্ঘদিন পরও তা রয়ে যাবে। ওয়াশিংটনের পুলিশ বিভাগের সাবেক প্রধান চার্লস রামসের ভাষায়, বুধবারের ঘটনাটি অভ্যুত্থানচেষ্টার মতোই, যা যুক্তরাষ্ট্র এর আগে কখনো দেখেনি। আর নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ টিমোথি নাফটালি বলেছেন, ট্রাম্প গণতন্ত্রের সোনালি সুতাটি ছিঁড়ে ফেলেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা টিকিয়ে রেখেছে এত দিন। তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) আমাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রেসিডেন্ট শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের বিরোধিতা করেছেন।’Slider
বিশ্ব
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
মেহেরপুর সদর উপজেলা
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: