২০২১ সালের জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর থেকে রুশ-মার্কিন সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে আসছে। বিশেষ করে ওয়াশিংটন রাশিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ায় সম্পর্ক আরো জটিল আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে বাইডেনের কিছু বিতর্কিত মন্তব্যে রুশ-মার্কিন সম্পর্ক চরম অবনতির দিকে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে খুনি বলে অভিহিত করায় নতুন করে বিতর্কের সূচনা হয়। এর পরপরই মস্কো ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের বিষয়ে পরামর্শ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে দেশে ডেকে পাঠিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মঙ্গলবার এবিসি নিউজ টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে রুশ প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও প্রভাব খাটানোর যে চেষ্টা করেছিলেন তার জন্য তাকে মূল্য দিতে হবে’। ‘পুতিনকে তো আপনি ভালো করেই চেনেন-আপনার মতে উনি কি সত্যিই একজন খুনি? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন ‘আমি এটাই মনে করি’। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাইডেনের এসব বক্তব্য থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর গভীর মতপার্থক্য ও মস্কোর প্রতি ওয়াশিংটনের বিদ্বেষের বিষয়টি ফুটে ওঠে। তাদের মতে দেশের ভেতরে প্রেসিডেন্ট পুতিনের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ অবস্থায় বাইডেনের অবমাননাকর বক্তব্য পরমাণু শক্তিধর এ দেশ দুটির সম্পর্কে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করবে। বাস্তবতা হচ্ছে বাইডেনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক খুব ভাল নয়। ডেমোক্রেট দলের অনেক নেতা মনে করেন, ২০১৬ ও ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে পুতিন ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছেন। গত মঙ্গলবার আমেরিকার পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি গোপন গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যাতে বাইডেন জিততে না পারেন। ডেমোক্রেটরা মনে করেন পুতিন নিজেই মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক দিমিত্রি তারনিন বলেছেন, গত বছরের ঘটনাবলী লক্ষ্য করলে দেখা যায় রাশিয়া মার্কিন রাজনীতিবিদদের হামলার লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। আর বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর হামলার পরিমাণ বহুগুণে বেড়েছে। যাইহোক, বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওয়াশিংটনের ক্ষমতা ও প্রভাব ধ্বংসে বড় ভূমিকা পালন করছে মস্কো। তাই রাশিয়ার এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া উচিত। এ লক্ষ্যে বাইডেন প্রশাসন এরই মধ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া ও বিভিন্ন অজুহাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনকে খুনি হিসেবে অভিহিত করার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে মনস্তাত্বিক যুদ্ধ চালানোর পাশাপাশি পুতিনকে একজন ভয়ঙ্কর ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়েছেন। এমনকি বাইডেন এও বলেছেন, পুতিনের মধ্যে আত্মা বলতে কিছু নেই। তিনি পুতিন বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নির্মূলেরও অভিযোগ আনেন। তবে এক প্রতিক্রিয়ায় রুশ সংসদ দুমার প্রধান বলেছেন, পুতিনের ওপর হামলার অর্থই হচ্ছে রাশিয়ার ওপর আঘাত হানা। বাস্তবতা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র শুধু সামরিক কিংবা অর্থনৈতিক দিক দিয়েই রাশিয়াকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেনি একইসঙ্গে অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের ভাবমর্যাদাও ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করছে যা কিনা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত।
Home
»
English News
»
world
» ক্ষুব্ধ রাশিয়া: মার্কিন সামরিক ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনের পর এবার ব্যক্তিত্ব হরণের চেষ্টা
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments: