Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী?




একসময় মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বন্ধু দেশ ছিল তুরস্ক। আর আজ সেই তুরস্ককেই দাঁড় করানো হচ্ছে আমেরিকার সবচেয়ে শত্রুদের কাতারে। এখন প্রশ্ন আসছে তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে? তুরস্ক পশ্চিমা বলয় থেকে আস্তে আস্তে বেড়িয়ে যাচ্ছে কি না? আসলেই কি তুরস্কের পশ্চিমা বলয় থেকে বেড়িয়ে যাওয়া সম্ভব? তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোগান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে বেলজিয়ামের রাজধানীতে প্রথম বৈঠকটি হয়েছে। ন্যাটো সম্মেলনের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত এই মুখোমুখি বৈঠকে তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু আসলেই কি দু'দেশের সম্পর্কের রাতারাতি কোনও উন্নতি হওয়ার সম্ভব? তুরস্কের এবং আমেরিকার মাঝে অমীমাংসিত বিষয়গুলোকে ঝুলিয়ে রেখে নতুন করে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা প্রায় অসম্ভব। তুরস্ক কেন আমেরিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ? দীর্ঘ চার দশক ধরে চলতে থাকা স্নায়ু যুদ্ধের সময় তুরস্ক মূলোতো তার স্বাধীনতা রক্ষায় ন্যাটো সামরিক জোটে তার সামরিক ও কৌশলগত অবদানের জন্য পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন, তুরস্ক তার ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক গতিশীলতা, সামরিক শিল্পের উন্নতি এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের জন্য বিশেষ ভাবে সামনে চলে এসেছে।বিশেষ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট রেজেপ তায়্যিপ এরদোগানের গত কয়েক বছর ধরে কিছু সাহসী পদক্ষেপ দেশটিকে আরও বেশি ফোকাসে নিয়ে এসেছে। তুরস্ক এখন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর একটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আধুনিক তুরস্ক রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য পশ্চিমা বলয়ে অবস্থান নেয়। ১৯৪৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এবং ১৯৯১ সাল পর্যন্ত চলতে থাকা স্নায়ু যুদ্ধের সময় তুরস্ক ছিল পশ্চিমা বলয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ।তখন সম্পর্কের উত্থান পতন হলেও তুরস্ককে পশ্চিমারা দেখত সবচেয়ে আজ্ঞাবহ মিত্র হিসেবে। কিন্তু সে সম্পর্কে পরিবর্তন আসতে শুরু করে স্নায়ু যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে, যখন সোভিয়েত রাশিয়া ভেঙ্গে যায়। তখন আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো তথা পশ্চিমারা এই অঞ্চলে পরিচালনা করতে থাকে একের পর এক তথাকথিত সন্ত্রাস বিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যুদ্ধ। তখন থেকে শুরু করে গত বিশ-ত্রিশ বছরে ইরাক, ইরান, কুয়েত, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, নাগরনো কারাবাখ, বলকান অঞ্চল সহ তুরস্কের চারিদিকের ভুরাজনৈতিক পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়েছে।এবং এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তুরস্কও নিজেকে সাজিয়ে নিয়েছে নতুন করে। নতুন করে এই অঞ্চলে নিজের স্বার্থের জন্য পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে গিয়ে অনেক সিদ্ধান্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপও নিয়েছে। নিজের সামরিক শিল্পকে অনেক শক্তিশালী করেছে। দেশটি পশ্চিমাদের আজ্ঞাবহ মিত্র থেকে বের হয়ে এখন যে বহুমুখী বিদেশনীতি অনুসরণ করছে তা অনেক পশ্চিমা রাজনীতিবিদ, কূটনৈতিক এবং বিশেষজ্ঞ ব্যাক্তিরা ভালভাবে নিচ্ছেন না। এখন জোড়েসোরেই আলোচনা হচ্ছে যে তুরস্ক কি পশ্চিমা বলয় থেকে বেড় হয়ে যাচ্ছে? তুরস্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যের সম্পর্কের প্রধান সমস্যাগুলো কি কি? এক্ষেত্রে প্রথম যে বিষয়টি সামনে আসবে তা হলো তুরস্কের রাশিয়া থেকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা ক্রয় করা। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যাবস্থা কেনাকে কেন্দ্র করে আমেরিকা তুরস্কের উপর সামরিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান তৈরির প্রকল্প থেকে বের করে দিয়েছে। এতে তুরস্কের ক্ষতি হয়েছে কয়েক বিলিয়ন ডলার। এখানে আমেরিকার যুক্তি হলো, তুরস্ক এই প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থা কিনে আসলে ন্যাটো সামরিক জোটকে হুমকির মুখে ফেলেছে। অথচ তুরস্ক বলছে, অন্য ন্যাটো সদস্য যেমন গ্রীসও তো রাশিয়া থেকে এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা বাবস্থা কিনেছে এবং ব্যাবহার করছে। সুতরাং রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কিনে গ্রীস যদি ব্যবহার করেতে পারে তাহলে তুরস্কও পারবে। এ নিয়ে তুরস্ক একটি কমিশন গঠন করারও প্রস্তাব দিয়েছে যে কমিশন এই প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থার ব্যবহারের বিষয়টি দেখভাল করবে। কিন্তু আমেরিকা মেনে নেয়নি। ওয়াশিংটনের একটাই দাবি এই অস্ত্র রাশিয়ার কাছে ফেরত দেওয়া অথবা কখনই ব্যবহার করবে না মর্মে লিখিত চুক্তি করবে। অন্যদিকে, তুরস্কের চীন এবং রাশিয়ার প্রতি বেশি ঝুঁকে যাওয়া নিয়েও আমেরিকার অভিযোগের শেষ নেই।এ ক্ষেত্রে তুরস্কের যুক্তি হচ্ছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক বছরে আঙ্কারার বিরুদ্ধে যে শত্রুতা মূলক আচরণ করছে সে কারণেই তুরস্ক বাধ্য হচ্ছে এই পূর্ব বলয়ে ঝুঁকতে। এছাড়াও, তুরস্কের এজিয়ান এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান নিয়েও আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন যথেষ্ট নাখোশ। এক্ষেত্রে হুমকি ধামকি দিয়ে তুরস্ককে বিরত রাখার চেষ্টা করছে তারা। হয়তো তুরস্ক কিছুটা নমনীয় হবে এক্ষেত্রে। আর, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক, কারাবাখ এবং বলকান অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাবকে ভালোভাবে নিচ্ছেনা মার্কিনিরা। যদিও এসব এলাকায় তুরস্ক রাশিয়ার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মূলত পরোক্ষভাবে আমেরিকার পক্ষেই কাজ করছে। কিন্তু তারপরেও এইসব বিষয়ে তুরস্ককে মার্কিনীদের স্বার্থে কাজ করার জন্য আহ্বান করছেন বাইডেন প্রশাসন। অন্যদিকে তুরস্কেরও আমেরিকার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তুরস্কের রক্তক্ষয়ী সামরিক অভ্যুত্থানের মুল হোতা ফেতুল্লাহ গুলেনকে আমেরিকার সামরিক এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সব ধরণের সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।শত রিকোয়েস্ট এবং হাজার হাজার দলিল দস্তাবেজ সাবমিট করার পরেও তাকে তুরস্কের কাছে হস্তান্তর করছে না মার্কিন প্রশাসন। এবং তাকে হস্তান্তর করার কোনো সম্ভাবনাও নেই। এছাড়াও, তুরস্কের হাল্ক ব্যাংক নামের একটি সরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধে আমেরিকার আদালতে অনেকগুলো মামলা চলছে। যেগুলোতে বলা হয়েছে যে এই ব্যাংকটি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানের সঙ্গে ব্যাবসা করেছে। এই মামলা এখন রাজনৈতিক একটি মামলায় রূপ নিয়েছে আর তুরস্ক চাচ্ছে এই মামলা গুলো উঠিয়ে নেওয়া হোক। এ ব্যাপারে সমোঝোতা হতে পারে। তবে তুরস্ক এবং আমেরিকার সম্পর্কের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হোলো সিরিয়াতে কুর্দি সশস্ত্র সংগঠনটিকে আমেরিকার প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলে একটি কুর্দি রাষ্ট্র গঠনের পায়তারা করছে তারা। যেটি তুরস্ক তার ভূখণ্ডের উপর সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছে। কারণ, তুরস্কের মতে সিরিয়াতে পিকেকে সন্ত্রাসী গ্রুপটি যতো শক্তিশালী হবে। তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে তত বেশি সন্ত্রাসী আক্রমণ চালাবে। এমনকি ওখানে নতুন একটি কুর্দি রাষ্ট্রের আবির্ভাব হলে তা তুরস্কের অখণ্ডতার প্রতি বিশাল হুমকি সৃষ্টি করবে। এছাড়াও তুরস্কের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক যুদ্ধ চালানোরও অভিযোগ আছে আমেরিকার বিরুদ্ধে। আসলে তুরস্ক এবং আমেরিকা দু পক্ষই জানে একে অপরের কোনও বিকল্প নেই। তাই তারা একে অপরকে না পারছে ছাড়তে আর না পারছে শক্ত করে ধরতে। এ কারণেই মার্কিন প্রশাসন তুরস্কের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে না বরং তারা এরদোগান বিরোধী অবস্থান নিচ্ছে। এখন এরদোগান যদি তাদের কথায় উঠবস করে তাহলে তুরস্কের সঙ্গে তাদের কোনও সমস্যাই থাকবে না। মার্কিনী কর্তব্যস্থানীয় ব্যক্তিদের অনেকের মুখেই এরকম বিবৃতি শোনা যায় যে, এরদোগান এমন একজন লিডার যাকে অল্পস্বল্প চাপে নমনীয় করা যাবে না। তার দুর্বল পয়েন্টে আঘাত করে তাকে এমন বেকায়দায় ফেলতে হবে যেখান থেকে তার আর পরিত্রাণের পথ থাকবে না। তখন সে আমাদের কাছে ফরিয়াদ করবে, ধরনা ধরবে। আর তখনই আমরা তার সঙ্গে দরকষাকষিতে পেরে উঠতে পারবো। এজন্যই তুরস্কের বিরুদ্ধে তথা এরদোগানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের যতসব আক্রমণ। আমেরিকা সবসময়ই চায় তার তাঁবেদারি কোনও সরকার তুরস্কে ক্ষমতায় থাকুক। যে সরকারটি কোনো পরিস্থিতিতেই আমেরিকার স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবে না। এই অঞ্চলে আমেরিকার পিয়নগিরি করবে। আর এই তাঁবেদারি এবং পিয়নগিরি করা সরকারটি যতই আন্তর্জাতিক আইন-আদালত এবং নিয়ম-কানুনের বিরুদ্ধে যাক না কেন, যতই অ্যান্টি-ডেমোক্র্যাটিক হোক না কেন, এমনকি সে যদি সন্ত্রাসী সংগঠনের সাপোর্টারো হয় তাকে তখন ক্ষমতায় রাখার জন্য সব ধরণের সহযোগিতা দেয় আমেরিকা। যেমন, ইসরাইল, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর, মায়ানমার, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, ভারতে এগুলো আমরা দেখছি।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply