কষ্টকর ভারী বোরকা নয়, হিজাব বাধ্যতামূলক : তালেবান
দীর্ঘ দুই দশক পর আফগানিস্তানের মসনদ আবার তালেবানদের। তবে এবার তালেবানরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতার প্রথম মেয়াদের মতো সহিংসতায় জড়িয়েছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে অনেকেই এই তালেবানকে সহনশীল ও উদার বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
তালেবানদের সেই সহনশীলতা ও উদারতা নারীদের কাজে ফেরার আহ্বান জানানো এবং স্কুলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতই প্রমাণ করে দেয়। তালেবানদের আচরণের সেই প্রমাণ আরও পাকাপোক্ত হলো- পূর্বের মতো নারীদের মুখ-চোখসহ পুরো শরীর ঢাকা ভারী বোরকা বাধ্যতামূলক না করে হিজাব বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে। এ ধরনের বোরকা আফগানিস্তানের ঐতিহ্য হলেও তা পরে অনেক নারীরই কষ্ট হতো বিশেষ করে গরমকালে এবং গর্ভবতী থাকাবস্থায়।
বুধবার (১৭ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এমনটাই বলেছেন কাতারের দোহায় অবস্থিত তালেবান দপ্তরের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন। তিনি বলেন, তালেবান শাসনের অধীনে আফগানিস্তানে বোরকা পরিধান বাধ্যতামূলক না হলেও নারীদের হিজাব পরতে হবে।
এর আগে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনকালে আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বোরকা পরিধান বাধ্যতামূলক ছিল। সে সময় মেয়েদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণও বন্ধ করে দেয়া হয়। নারীদের স্বাধীনভাবে ভ্রমণ এবং কাজ করারও অনুমতি ছিল না।
তবে এবার তালেবান ক্ষমতায় আসার পর স্কাই নিউজকে সুহাইল শাহীন বলেন, পুরো শরীর ঢাকা বোরকার পরিবর্তে নারীরা মাথায় হিজাব পরছেন কি না, সেটাই পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে, তালেবান কী ধরনের হিজাবের অনুমোদন দিবে তা স্পষ্ট করেননি সুহাইল।
পোশাকের বাইরে আফগানিস্তানে নারী শিক্ষা নিয়েও উদ্বিগ্ন রয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠী। তবে, নারী শিক্ষা বিষয়ে তালেবান আগের মতো কঠোর থাকবে না বলেও আশ্বাস দেন সুহাইল শাহীন। তিনি বলেন, নারীরা প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করার সুযোগ পাবেন। আমরা মস্কো ও দোহা সম্মেলনেও নারী শিক্ষা নিয়ে এ ধরনের নীতির কথা বলেছি।
তালেবান অধিকৃত অঞ্চলে হাজার হাজার স্কুলের কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে শরীয়াহ আইনের সীমার মধ্যে নারী অধিকার সংরক্ষণের ঘোষণা দেন তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। নারীদের সরকারে অংশ নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তালেবানের একজন শীর্ষ নেতা।
এর আগে ক্ষমতায় এসে তালেবান সরকার কঠোর শরীয়াহ আইন জারি করে এবং অধার্মিকতা ঠেকাতে পুলিশ বাহিনীও গড়ে তোলে। সে সময় চুরির দায়ে হাত কেটে ফেলা, ব্যভিচারের দায়ে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলার মতো শাস্তিও দেয়া হতো আফগানিস্তানে। সূত্র : এএফপি
Tag: English News world
No comments: