প্রিয়াংকা গান্ধীর সঙ্গে সেলফি তুলে বিপাকে নারী পুলিশ
ভারতের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াংকা গান্ধীর সঙ্গে সেলফি তোলা নারী পুলিশদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন প্রিয়াংকা গান্ধী।
বুধবার আগ্রায় পুলিশি হেফাজতে মৃত দলিতকর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পথে আটক হন এই কংগ্রেস নেত্রী। সে সময় তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন নারী পুলিশ কনস্টেবলকে সেলফি তুলতে দেখা যায়।
এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে লখনৌয়ের পুলিশ কমিশনার জানান, সেলফি তোলা নারী কনস্টেবলদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গণমাধ্যমে এই সংবাদ প্রকাশের পরপরই চড়াও হয়েছেন প্রিয়াংকা গান্ধী। ছবি তোলা অপরাধ হলে তাকেও শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
টুইট বার্তায় ভারতের উত্তর প্রদেশের যোগী সরকারকেও কটাক্ষ করেন তিনি। গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশি জেরা চলাকালীন অরুণ বাল্মীকি নামে আগ্রার এক দলিতকর্মীর মৃত্যু হয়।
পরদিন মৃত ওই দলিতকর্মীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রিয়াংকা। কিন্তু আগ্রার পুলিশ সদস্যরা মাঝরাস্তায় তাকে আটকে দেন। তবে ঘণ্টা দুয়েক পরে চারজনকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
এদিকে নারীরাই ঘৃণার রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করেন প্রিয়াংকা গান্ধী। এই বিশ্বাস নিয়ে উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) তিনি বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন। প্রদেশটিতে নারীদের জন্য কংগ্রেসের চল্লিশ শতাংশ টিকিট সংরক্ষণ রাখার কথা জানিয়েছেন।
এরপর বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছেন, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস স্কুল পাস করা প্রতিটি মেয়েকে স্মার্টফোন ও স্নাতক সম্পন্ন করা নারীদের ইলেকট্রিক স্কুটি উপহার দেবে। কংগ্রেস চায় নারীর ক্ষমতায়ন।
হিন্দিতে লেখা এক টুইটে তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন ছাত্রীর সঙ্গে গতকাল আলাপ হয়েছে। লেখাপড়ার ও নিরাপত্তার জন্য স্মার্টফোন তাদের খুবই জরুরি। তাদের কথা ভেবে ইশতেহার কমিটির অনুমোদন নিয়ে প্রাদেশিক কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এ রাজ্যে ক্ষমতায় এলে স্কুল পাস ছাত্রী ও স্নাতক শেষ করা মেয়েদের স্কুটি দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস জিতলে স্মার্টফোন ও স্কুটি পাবেন মেয়েরা
টুইটারে একটি ভিডিও ক্লিপও পোস্ট দিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী। যেখানে দেখা যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমে কথা বলছেন ছাত্রীরা। তারা বলছেন, তারা প্রিয়াংকার সঙ্গে সেলফি নিয়েছেন। এক ছাত্রী বললেন, প্রিয়াংকা জিজ্ঞাসা করছেন তাদের কাছে সেলফি তোলার স্মার্টফোন আছে কি না। জবাবে জানাল, তাদের ফোনও নেই, কলেজে ফোন নিয়ে যাওয়ার অনুমতিও নেই।
তখন তিনি জানতে চান, ফোন দেওয়ার ব্যবস্থা তিনি করতে পারেন কি না। মেয়েরা খুশি হয়ে জানাল, তাতে তাদের খুবই উপকার হবে। কেননা নিরাপত্তার জন্য ফোন খুব প্রয়োজন।
তবে এ নির্বাচনে প্রিয়াংকা নিজে অংশগ্রহণ করবেন কিনা; তা জানা সম্ভব হয়নি। ১৯৮৯ সাল থেকে উত্তর প্রদেশের ক্ষমতার বাইরে কংগ্রেস। ১৯৬৩ সালে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সুচেতা কৃপালনী। তিনিই দেশের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী।
আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না হলেও কংগ্রেস এবার ঠিক করেছে যে ক্ষমতায় এলে প্রিয়াংকা হবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই লক্ষ্যে কংগ্রেসের হাতিয়ার নারীশক্তি। কংগ্রেস বলছে, এটা নারী ক্ষমতায়নেরই অংশ। ইতিমধ্যে রাজ্যের নারীদের মদ্যে প্রিয়াংকা যথেষ্ট সাড়া ফেলেছেন।
তবে কংগ্রেস নারীদের জন্য চল্লিশ শতাংশ টিকিট রাখলে তাতে দলীয় নেতারা তাদের স্ত্রী, কন্যা কিংবা অন্য নারীদের প্রার্থী করতে পারেন কিনা; জানতে চাইলে প্রিয়াংকা গান্ধী বলেন, এতে কোনো ভুল আছে বলে আমি মনে করি না। নারী ক্ষমতায়নের শুরু হিসেবে কংগ্রেস এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রার্থী বাছাই অবশ্যই মেধাভিত্তিতে হবে।
Tag: English News Featured world
No comments: