বাউল ছদ্মবেশী ‘দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার’ হেলালের যত কুকর্ম
হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম বছরের পর বছর দেশের বিভিন্ন মাজারে ও রেল-স্টেশনে বাউল ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়ানো ‘সিরিয়াল কিলার’ খ্যাত দুর্ধর্ষ ফেরারি আসামি ও ‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’ গানের বাউল মডেল হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম ওরফে খুনি হেলালকে গ্রেপ্তার করে তার বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে কারওয়ান বাজরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানান এলিট ফোর্সটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। upay তিনি জানান, আনুমানিক ৬ মাস আগে জনৈক ব্যক্তি ইউটিউবে প্রচারিত একটি গানের বাউল মডেল সম্পর্কে র্যাবের কাছে তথ্য দেয় যে, ওই মডেল সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। এমন তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব। এক পর্যায়ে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়। বাউলের বেশ ধারণ করা আসামিকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৩ এর অভিযানে গতকাল বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে মো. হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকির ওরফে বাউল সেলিম ওরফে খুনি হেলালকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া। পিতা মৃত নুরুল ইসলাম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত হেলাল তার অপরাধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়। বিদুৎ হত্যাকাণ্ড গ্রেপ্তারকৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের কথা উল্লেখ করে র্যাব জানায়, ‘সিরিয়াল কিলার হেলাল’ ২১ বছর বয়সে ২০০১ সালে বগুড়া সদরে নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০ বছর বয়সী মাহমুদুল হাসান বিদ্যুৎকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-০২(১০)২০০১; ধারা-৩০২-৩৪। ওই মামলায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করেন। হেলাল ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলারও আসামি। বিষ্ণু হত্যাকাণ্ড ১৯৯৭ সালে বগুড়াতে চাঞ্চল্যকর বিষ্ণু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। গ্রেপ্তারকৃত হেলাল ২১ বছর বয়সে ওই হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিল। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয় বলে জানা যায়। এভাবেই সে বিভিন্ন অপারাধমূলক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হতে শুরু করে এবং এলাকায় দুর্ধর্ষ হেলাল নামে পরিচিতি পায়। রবিউল হত্যা ২০০৬ সালে বগুড়াতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রবিউল নামক এক ব্যক্তিকে কতিপয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক দেশীয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত হেলাল উক্ত হত্যাকাণ্ডের একজন চার্জশিটভুক্ত আসামি। হেলাল থেকে যেভাবে ‘লুলা হেলাল’ গ্রেপ্তারকৃত হেলাল র্যাবকে আরও জানায় যে, ২০০০ সালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ধারাল দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে তার বাম হাতে মারাত্মক জখম হয় এবং বাম হাত পঙ্গু হয়। এই ঘটনার পর থেকে সে বিভিন্ন নামে যেমন- দুর্ধর্ষ হেলাল, হাত লুলা হেলাল হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। চুরি ও নারী নির্যাতন মামলা গ্রেপ্তারকৃত হেলাল ২০১০ সালে বগুড়া সদর থানায় দায়েরকৃত একটি চুরির মামলায় ২০১৫ সালে গ্রেপ্তার হয়। একই সাথে ২০০১ সালের বিদ্যুৎ হত্যা মামলার বিচারকার্যও চলমান থাকে। ২০১৫ সালেই ওই চুরির মামলায় সে জামিনে মুক্ত হয় এবং একই দিনে বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। এ ছাড়াও ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রয়েছে। মুদি দোকানি থেকে দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার গ্রেপ্তারকৃত হেলাল ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে এবং এলাকায় দোকান ছিল। পরবর্তীতে হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে পড়লে এলাকায় তার কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে ২০১০ সালে দায়েরকৃত চুরির মামলায় ২০১৫ সালে জামিনপ্রাপ্তির দিনে বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হলে সে কৌশলে এলাকা ত্যাগ করে এবং ফেরারি জীবনযাপন শুরু করে। নাম পাল্টে বাউল বেশ ধারণ তার আসল নাম হেলাল হোসেন হলেও একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটানো শেষে বাউল ছদ্মবেশ নিয়ে নিজের নাম বদলে সেলিম ফকির বলে পরিচয় দিতে শুরু করে তিনি। ফেরারি জীবনের শুরুর দিকে প্রথমে সে বগুড়া থেকে ট্রেনযোগে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে আসে। পরবর্তীতে কমলাপুর থেকে ট্রেনে করে সে চট্টগ্রামে চলে যায় এবং সেখানকার আমানত শাহ মাজারে ছদ্মবেশ ধারণ করে বেশ কিছুদিন অবস্থান করে। সেখান থেকে ট্রেনযোগে সিলেটের শাহজালাল মাজারে চলে যায়। সিলেটে গিয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করে আরও কিছুদিন অবস্থান করে। ‘ভাঙা তরী ছেড়া পাল’ গানের মডেল জানা গেছে, বিভিন্ন সময়ে সে বাংলাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে অবস্থান করত। সে কিশোরগঞ্জ ভৈরব রেলস্টেশনে নাম-ঠিকানা ও পরিচয় গোপন রেখে সেলিম ফকির নাম ধারণ করে। আনুমানিক ৫ বছর আগে গ্রেপ্তারকৃত হেলাল নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে গামছা পলাশের একটি গানের শুটিং চলাকালে রেললাইন এর পাশে বাউল গান গাচ্ছিল। তখন শুটিংয়ের একজন ব্যক্তি তাকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলে বহুল জনপ্রিয় “ভাঙা তরী ছেড়া পাল” শিরোনামের গানের বাউল মডেল হিসেবে তাকে দেখা যায়। ৭ বছরের ফেরারি জীবন শেষে রেলস্টেশনে নারীর সাথে ৪ বছরের সংসার সে প্রায় ৭ বছর যাবৎ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরারি জীবনযাপন করছে এবং গত প্রায় ৪ বছর যাবৎ কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশনের পাশে এক নারীর সাথে সংসার করে আসছে। বিভিন্ন রেলস্টেশনে সে বাউল গান গেয়ে মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত বলে জানিয়েছে র্যাব। তবে ফেরারি জীবনের আগে তার প্রথম এক স্ত্রী ছিল, ওই সংসারে তার এক ছেলে রয়েছে। বাউল ছদ্মবেশ নেওয়া পর হেলাল প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেননি বলে জানা গেছে।Slider
বিশ্ব
জাতীয়
মেহেরপুর জেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
মেহেরপুর সদর উপজেলা
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
English News
»
lid news
»
politics
» বাউল ছদ্মবেশী গ্রেপ্তারকৃত‘দুর্ধর্ষ সিরিয়াল কিলার’ হেলালের যত কুকর্ম
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: