চীনের জিরো কোভিড নীতি জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে
বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক শুরু হতে আর মাত্র এক মাস বাকি। তাই দেশটিতে করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরতে উঠেপড়ে লেগেছে চীন। এ জন্য অলিম্পিক শুরুর আগে যেকোন মূল্যে সংক্রমণের হার শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় বেইজিং।
এ লক্ষ্যে দেশটি যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে তা অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের জন্ম দিয়েছে বলে খবর দিয়েছে দ্য হংকং পোস্ট
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংক্রমণ রোধে লাখো বাসিন্দাকে কোয়ারেন্টিনের নামে গৃহবন্দী করা হয়েছে। খাদ্য দ্রব্যের যোগান দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ সেই দায়িত্ব পালন করেনি। ফলে, মারাত্মক অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটে পড়েছেন দেশটির লাখো মানুষ।
চীনে করোনার নতুন প্রাদুর্ভাবের উপকেন্দ্র জিয়ান শহর। সেখানে সংক্রমণের লাগাম টানতে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে, শহরের কোনও বাসিন্দাই তাদের বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার কেনার জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি না মেলায় অনেকে চরম মানবিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। কোনও রকমে জীবন বাঁচাতে শহরের বাসিন্দাদের অনেকে স্মার্ট ফোনের বিনিময়ে চাল কিনছেন।
আরও পড়ুন : করোনার কারণে ২১ মাসেও বিদেশ সফরে যাননি চীনা প্রেসিডেন্ট
জিয়ানের বাসিন্দাদের এমন দুর্বিষহ চিত্র গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, চীনের জিয়ান শহরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা কিছু বাসিন্দা অব্যাহত খাদ্য সংকটের মুখে সরবরাহের জন্য বিনিময় পন্থা অবলম্বন করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে দেখা যায়, সেখানকার বাসিন্দারা খাবারের বিনিময় করছেন। এমনকি খাবারের জন্য তারা স্মার্ট ফোন এবং অন্যান্য সরঞ্জামও বিনিময় করছেন।
করোনাভাইরাসের নতুন প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় জিয়ানের এক কোটি ৩০ লাখ মানুষকে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে বিধিনিষেধ এমন কঠোর করা হয়েছে যে, খাবার কেনার জন্যও কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারছেন না।
আরও পড়ুন : তিব্বত অঞ্চলে মেশিনগান সম্বলিত রোবট পাঠাচ্ছে চীন
গত কয়েক দিনে জিয়ানের অনেক বাসিন্দা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ করেছেন। শহর কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক পরিবারে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করলেও কেউ কেউ বলছেন, খাবারের সরবরাহ অনেক কম অথবা তারা এখন পর্যন্ত কোনও সহায়তাই পাননি।
চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে শেয়ার করা ভিডিও এবং ছবিতে দেখা যায়, লোকজন বাঁধাকপির জন্য সিগারেট, আপেলের জন্য থালা-বাসন ধোয়ার লিকুইড এবং সবজির জন্য স্যানিটারি প্যাড বিনিময় করছেন।
এক কোটি ১০ লাখ মানুষের নগরী ইউঝোতে পরিবহন ব্যবস্থা এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কে বলতে গেলে কোনও গাড়ি চলতে দেওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র মহামারি নিয়ন্ত্রণে যারা কাজ করেন তারা চলাচল করতে পারছেন। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেও তাতে গা করছে না চীনের কমিউনিস্ট সরকার। এই মুহূর্তে দেশের জনগণের কথা ভাবার চেয়ে অলিম্পিকের আয়োজন সুসম্পন্ন করে ইমেজ বাড়ানোর দিকেই চোখ বেইজিংয়ের!
Tag: English News Featured world
No comments: