যে কারণে সেনাবাহিনীর চেয়ে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় বেশি ব্যয় করছে চীন
চীন তার বিশাল সেনাবাহিনীর জন্য যতটা না ব্যয় করছে, বর্তমানে তার চেয়ে বেশি ব্যয় করছে অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে। বেইজিংয়ের এই অবস্থাকে 'ভেতরে দুর্বল, বাইরে শক্তিশালী' হিসেবে উল্লেখ করেছেন 'চীন ক্যু' বইয়ের লেখক গারসাইড রজার।
দ্য ইপোক টাইমসকে গারসাইড বলেন, এ বছর চীনের ক্ষমতাসীন চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) জাতীয় কংগ্রেস। যেখানে যে কোনো মূল্যে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে চান শি জিন পিং। কিন্তু সিসিপির কিছু শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন, জিনপিংয়ের অধ্যায় শেষ হোক। ফলে, ওই নেতৃবৃন্দ ও তাদের বিশাল সংখ্যক অনুসারীদের বাগে আনতে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে জিন পিং প্রশাসন।
সংবাদমাধ্যম দ্য হংকং পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গারসাইড যুক্তি দিয়েছেন যে, প্রিমিয়ার লি কেকিয়াংসহ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব বিশ্বাস করেন যে জিন পিং চীনকে 'খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপজ্জনক' দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশটির সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যাপক টানাপোড়েন চলছে।
আরও পড়ুন : বিধিনিষেধের শিথিলতা নিয়ে ভয়াবহ আশঙ্কা চীনা গবেষকদের
শুধু তাই নয়, কৌশলগত মিত্র অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নতুন করে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে বেইজিং। সব মিলিয়ে বিশ্ব থেকে প্রায় একঘরে হয়ে যাচ্ছে তারা। যেহেতু জিন পিংয়ের শাসনামলে বেইজিং এমন নজিরবিহীন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে, তাই তাকে সরিয়ে নতুন কাউকে ক্ষমতায় আনার পক্ষে পার্টির উচ্চ পর্যায়ের কিছু নেতা।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, চীনের অধীনে থাকা হংকং ও তাইওয়ানের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখতে না পারায় দলের একটা অংশ জিন পিংয়ের ওপর ক্ষুব্ধ। তার অদূরদর্শিতার জন্য চীনের মূল ভূখণ্ডের সন্নিকটে (তাইওয়ান) যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, যাকে সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হিসবেই দেখছেন পার্টির জিন পিংবিরোধী ওই সদস্যরা। ফলে ক্ষুব্ধ ওই শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতভেদ দূর করতে এবং তাদের মাধ্যমে সম্ভাব্য অভ্যুত্থান রুখতে সেনাবাহিনীর চেয়েও অভ্যন্তরীণ বিষয় সামাল দিতে বেশি ব্যয় করছে জিন পিং প্রশাসন।
No comments: