ভারতের কর্নাটকে হিজাব পরা ছাত্রীদের কলেজে ঢুকতে দিলেন না অধ্যক্ষ

হিজাব পরা ২০ নারী শিক্ষার্থী কলেজ ফটকে দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কলেজের অধ্যক্ষের কাছে তারা আকুতি জানাচ্ছেন, যাতে তাদের লেখাপড়ার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু হিজাব পরায় তাদের জন্য কলেজের ফটক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের কর্নাটকের উপকূলীয় শহর কুন্ডাপুরে এমন ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছিলেন, এখানে হিজাব পরার বিরুদ্ধে কোনো আইন নেই। সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গভর্নমেন্ট জুনিয়র কলেজের ফটকে হিজাব পরা ছাত্রীরা ভেতরে ঢুকতে অধ্যক্ষের কাছে অনুরোধ করছেন। কিন্তু তাদের কোনোভাবেই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন এই সংকট কেবল একটি কলেজেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, রাজ্যটির অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও হিজাব পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠেছে। এক ছাত্রী বলছিলেন, কেন আপনারা আমাদের কলেজে ঢুকতে দিচ্ছেন না? এখানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ? অন্য ছাত্রীরা বলেন, আমাদের পরীক্ষার আর দুমাস বাকি আছে। আমাদের ক্লাসে যেতে দিন। জবাবে প্রথমে তাদের হিজাব খুলতে বলেন অধ্যক্ষ। এভাবে ছয় ঘণ্টা কলেজ ফটকে দাঁড়িয়ে ছিলেন শিক্ষার্থীরা। ইতিমধ্যে ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। তারা আর ক্লাস করার সুযোগ পাননি। এর আগে বুধবার একদল ছাত্রীকে হিজাব পরে ঢুকতে না দেওয়ার পর শতাধিক ছেলে জাফরান শাল পড়ে কলেজে আসেন। আরও পড়ুন: হিজাব পরায় মুসলিম নারীর মুখে থুথু! কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগ্য জানেন্দ্র বলেন, শিক্ষার্থীদের হিজাব কিংবা জাফরান শাল, কোনোটিই পরা উচিত না। স্কুল এমন একটি জায়গা, যেখানে সব ধর্মের শিশুরা রয়েছে, তাদের একসঙ্গে লেখাপড়া করা উচিত। তাদের বুঝতে হবে, আমাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আমরা সবাই ভারত মাতার সন্তান। তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন রয়েছে, তারা ভিন্নভাবে চিন্তা করে। আমরা তাদের ওপর নজর রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি। যারা দেশের ঐক্য নষ্ট করতে চাইবে, তাদের মোকাবিলা করা হবে। এ নিয়ে গত দুই মাসের মধ্যে কর্নাটকে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরে কলেজে ঢুকতে না দেওয়ার দুটি ঘটনা ঘটলো। এক মাস আগে উদুপির পিইউ গার্লস কলেজে প্রথম একদল ছাত্রীকে হিজাব পরে কলেজে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। ওই কলেজের ছাত্রীরা এখনও কলেজে হিজাব পরে ক্লাসে অংশ নেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরার অনুমতি চেয়ে দেশটির হাই কোর্টে আবেদন করেছেন পিইউ গার্লস কলেজের একজন ছাত্রী।