Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » সেই প্রথম অতি কাছ থেকে দেখলাম বঙ্গবন্ধুকে




সেই প্রথম অতি কাছ থেকে দেখলাম বঙ্গবন্ধুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বিভিন্ন সময় দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে, তিনি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তবে, প্রথম দেখা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পর পাশের চুয়াডাঙ্গা জেলায়। তিনি ওইদিন চুয়াডাঙ্গা আসেন পূর্বনির্ধারিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হয়ে। বঙ্গবন্ধু

সমাবেশ ভন্ডুল করতে চুয়াডাঙ্গা মুসলিম লীগ পরিকল্পিতভাবে সমাবেশের অনতিদূরে শাহাদৎ আলীর আমবাগানে গানের আয়োজন করে। গানের অনুষ্ঠান লোকে ভরপুর। সমাবেশস্থলে কোনো লোকজন নেই। বঙ্গবন্ধু সমাবেশ শুরু করতে বললেন। সমাবেশে অল্প কিছু লোক উপস্থিত হয়। বঙ্গবন্ধু ভাষণ দেওয়া শুরু করলে গানের অনুষ্ঠানের দর্শক ছাড়াও আয়োজকরাও ছুটে আসেন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে। স্মৃতি রোমন্থন করে বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে বলেন মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের সাবেক আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মী মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ (৮৪)। নুর মোহাম্মদ ১৯৫৭ সালে শিক্ষকতা পেশায় প্রথম চাকরিতে যোগদান করেন পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গা সরকারি স্কুলে। চাকরির পাশাপাশি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। চাকরি হারানোর ভয়ে রাজনৈতিক কোনো পদে থাকেননি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু নির্লোভ মানুষ ছিলেন। যা বলতেন, তাই করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সংগ্রাম কমিটির সদস্য হন নুর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের পর মুক্তিযুদ্ধ জোরদার হয়। এ সময় তিনি মেহেরপুর জেলা মহকুমা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছহিউদ্দীন বিশ্বাসের নির্দেশে সরকারি অফিস-আদালতের কাগজপত্র কলকাতায় পৌঁছে দেন। আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু একজন মহামানব: আবদুল মুহিত নুর মোহাম্মদ বলেন, দ্বিতীয়বারের মতো বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য পেয়েছি মেহেরপুরে। ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে শেখ মুজিবুর রহমান মেহেরপুরে জনসভা করতে এলেন। মেহেরপুর পৌরসভার কালাচাঁদ হলের সামনে জনসভা হয়। আওয়ামী ছাত্রলীগের সে সময়ের মহকুমা সভাপতি ইসমাইল হোসেন। ছহিউদ্দনি বিশ্বাস, ডা. আব্দুল মান্নান তাদের সাংগঠনিক কর্মতৎপরতায় সেই জনসভাকে খুবই সাফল্যমণ্ডিত করে তুলেছিলেন। ছোট্ট শহরে হাজার-হাজার লোকের স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশ। সভাস্থল ছেড়েও রাস্তার বহুদূর পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য। তখন তো এ অঞ্চলে মাইকের এমন ব্যাপক ব্যবহার ছিল না। তাই মাইকে জনসভার আহ্বানে শেখ মুজিবুর রহমানের টানে দলে-দলে যেন মানুষের ঢল নামল। জনপ্রিয়তার শীর্ষে জন-গণনন্দিত শেখ মুজিব ভাষণ দিতে উঠলেন। সেই দরাজ কণ্ঠে প্রাণ মাতানো আহ্বান–‘ভায়েরা আমার’, যা হৃদয়কে স্পর্শ করে দিল। উপস্থিত মানুষের মনে কেমন এক আবেগ সঞ্চার করে ফেলল। মানুষ আমার নেতা তোমার নেতা, শেখ মুজিব স্লোগানে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে দিল। আওয়ামী লীগের একজন নিঃস্বার্থ সেবক ছিলেন ছহিউদ্দীন বিশ্বাস। তিনিও সেই সমাবেশে বক্তব্য দেন। সফল সমাবেশ শেষে কাঁসারিপাড়ায় পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বারি গাজির বাড়িতে বঙ্গবন্ধু অবস্থান করছিলেন। এ সময় ছহিউদ্দীন ভাই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্থানীয় হিন্দু যুবকদের একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করেন। হিন্দু যুবকরা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এলে ছহিউদ্দিন ভাই হিন্দু যুবকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন ননী গোপাল ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে আসা যুবকদের। তিনি আরও বলেন, ওই বৈঠকে মেহেরপুর ও গোপালগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষার টানে রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দেন বঙ্গবন্ধু। সেই প্রথম অতি কাছ থেকে বঙ্গবন্ধুকে দেখলাম। স্মৃতি রোমন্থন করে নুর মোহাম্মদ বলেন, স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবকদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শোনান পাকিস্তানি শাসকদের নির্যাতনের কথা। সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকেরা হিন্দুদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে, ওরা ওদের পা-চাটা দোসরদের মদত দিয়ে লেলিয়ে দিচ্ছে। যেসব হিন্দু দেশ ছেড়ে যাচ্ছে, তাদের বুকফাটা কান্নাই প্রমাণ করে, তারা এ দেশ কত্তো ভালোবাসে। তিনি জন্মভিটা ছেড়ে না যাওয়ার জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি সেদিন জোর দিয়েই বলেছিলেন ‘জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ আমাদের। তোদের শপথ করে বলতে পারি, এ অমাবস্যা থাকবে না, নতুন সূর্য উঠবেই। আর তোরাই আনবি নব-নবীনের জয়গান গেয়ে সেই অরুণদীপ্ত নতুন প্রভাত। পলাশীর প্রান্তরেও মীর মদন-মোহনলাল পাশাপাশি দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করার কথা স্মরণ করিয়ে দেন বঙ্গবন্ধু। প্রয়াত ননী গোপাল ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবকরা এবং আমরা যারা মুসলিম যুবক ছিলাম, মুজিব ভাইয়ের কথায় একাত্ম হয়ে দৃপ্ত শপথের স্পর্শে অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় স্বাধীনতাযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। বাংলাদেশের প্রথম সরকার ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে শপথ গ্রহণ করেন। সেদিনই মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ করা হয় মুজিবনগর। সূত্র বাসস।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply