Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » পাকিস্তানে চীনারা কেন হামলার শিকার?




বেলুচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গেল সোমবারের ঘটনা। চীনা শ্রমিকদের একটি বহর উড়িয়ে দিতে আত্মঘাতী হামলা হয়েছে। হামলাকারী ব্যর্থ হন। পরে আফগানিস্তান-ইরান সীমান্তের কাছ থেকে এক সন্দেহভাজন নারীকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের পুলিশ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, ওই নারী একজন আত্মঘাতী। তিনি নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে কাজ করা চীনা শ্রমিকদের হত্যার পরিকল্পনা ছিল তার। ওই নারী নিষিদ্ধ বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) মাজিদ ব্রিগেডের সদস্য। ১৮ মে বেলুচিস্তান সরকার এমন তথ্য নিশ্চিত করে। তাকে তুরবাতের একটি হাজতখানায় রাখা হয়েছে। আটক সন্দেহভাজন নারী ও তার সহযোগীর কাছে সুইসাইড ভেস্ট, কালাশনিকভ রাইফেল, ৯ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ও ৬টি গ্রেনেড ছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে নুরজাহান নামের ওই নারী স্বীকার করেন, তিনি ও তার সহযোগী চীনা নাগরিকদের ওপর হামলা করতে চেয়েছিলেন। করাচি, বেলুচিস্তান ও গিলগিত-বালতিস্তানে চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরে (সিপিইসি) হাজার হাজার চীনা শ্রমিক কাজ করছেন। গেল মাসে এক আত্মঘাতী হামলায় তিন চীনা শিক্ষক ও তাদের চালক নিহত হন। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস সেন্টারে হামলাটি চালিয়েছিল বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির এক নারী সদস্য। ২০২১ সালের জুলাইয়ে খাইবার-পাখতুনখাওয়ায় চীনা শ্রমিকদের বহনকারী একটি বাস হামলার শিকার হয়। এতে ১০ চীনা নাগরিক নিহত ও ২৮ জন আহত হন। ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক ফাটা রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মানসুর খান মেহসুদ বলেন, চীনাদের শত্রু হিসেবে গণ্য করছে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তাদের ধারণা, বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুটতরাজে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করছে চীনারা, যা বন্ধ হওয়া উচিত। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কর্মকাণ্ডের বড় একটা অংশ হচ্ছে বেলুচিস্তান। ইরান ও আফগানিস্তান সীমান্তে প্রদেশটি অবস্থিত। ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক প্রকল্পের দীর্ঘ অবকাঠামো রুটে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে বেলুচিস্তানের গওধর বন্দরের সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। চীনাদের বেলুচিস্তান ছাড়তে বলা চীনা কোম্পানিগুলোকে বেলুচিস্তান ছাড়তে বেশ কয়েকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএলএ। মানসুর খান বলেন, বেলুচদের বিদ্রোহ বাড়বে। কারণ, বেশ কয়েক বছর ধরে বিএলএর আভিযানিক গতি বেড়েছে। নারীরাও বিদ্রোহে যোগ দিয়েছেন। চীনা লক্ষ্যবস্তুতে তারা আত্মঘাতী হামলা চালাচ্ছেন। কেবল বেলুচিস্তানই নয়, পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় হামলা ছড়িয়ে পড়েছে। বেলুচিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে পাকিস্তান সরকার। কিন্তু এতে তাদের কোনো বাস্তবিক অগ্রগতি হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, আত্মঘাতী হামলায় নারীদের ব্যবহার সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক নজর কেড়েছে। এ ঘটনা বিদ্রোহীদের জন্য ইতিবাচক। এর মাধ্যমে বাইরের দুনিয়া জানতে পারছে, নিজেদের মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে তারা কতটা মরিয়া। বিশেষজ্ঞদের দাবি, পাকিস্তানের অস্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে চীন খুশি নয়। আসন্ন হুমকিগুলো মোকাবিলায় ইসলামাবাদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ দাবি করছে বেইজিং, যাতে তাদের নাগরিকরা নিরাপদে সেখানে বসবাস করতে পারেন। বেলুচ বিদ্রোহীদের হুমকির পর চীনা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনার খবরও সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। মস্কোভিত্তিক মার্কিন নিরাপত্তা বিশ্লেষক অ্যান্ড্রু কোরিভকো বলেন, যেখানে নিরাপত্তা ব্যাপক ও নিবৃত্তিমূলক হওয়া দরকার, সেখানে যদি লোকজন সহজ হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়, তবে সেই অরক্ষিত পরিবেশে বসবাস না-করাই উচিত। সে হিসাবে পাকিস্তান চীনা নাগরিকদের থাকার উপযোগী নয়। কারণ, এখানে হরদম হামলার শিকার হওয়ার ঝুঁকি আছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে বহু চ্যালেঞ্জ আছে। বিদেশি অতিথিদের রক্ষায় নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী যথেষ্ট চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। কঠিন পরিস্থিতিতেও বিদেশিরা যাতে দেশটিতে থাকতে স্বস্তিবোধ করেন, তা নিশ্চিত করতে চেষ্টার ঘাটতি নেই। সামনের দিনগুলোয় বেলুচ বিদ্রোহ বাড়বে কি না–জানতে চাইলে অ্যান্ড্রু কোরিভকো বলেন, এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন। কিন্তু সাম্প্রতিক হামলাগুলো বিবেচনা করে বলা যায়, সন্ত্রাসী অভিযান চালাতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকটকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বেলুচিস্তানের বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহ দমনে পাকিস্তানকে চীনের চাপ এই বিশ্লেষক বলেন, ইমরান খানের ‘কার্যত বিপ্লবের’ কারণে তৈরি হওয়া নতুন চ্যালেঞ্জ সামলাতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। এতে তাদের ঐতিহ্যবাহী সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে বর্তমান পরিস্থিতিকে সুযোগ হিসেবে বেছে নিয়েছে বেলুচ বিদ্রোহীরা। কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক করিডোরের অধীন বিভিন্ন কৌশলগত প্রকল্পে যেখানে চীনা কোম্পানিগুলো কাজ করে, সেসব অঞ্চলে বিদ্রোহী তৎপরতা বন্ধে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ চাচ্ছে চীন। এ নিয়ে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে। চীনা নাগরিকরা বলছেন, তারা একটি ভয়াবহ বিদ্রোহের কবলে পড়েছেন, যা পাকিস্তানের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য ভালো কোনো ফল বয়ে আনবে না। গেল ১৭ মে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ। এ সময়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও সেখানে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ফোনালাপের পর রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনিশিয়েটিভের অধীন কাজ করা চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে নির্দেশ দেন শাহবাজ শরিফ। লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে আলোচনায় চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তায় কোনো আপস করা হবে না বলে অঙ্গীকার করেন তিনি। পরে একটি নিরাপত্তা পরিকল্পনা করে তা চীনা কোম্পানিগুলোকে অবগত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন শাহবাজ শরিফ। অ্যান্ড্রু কোরিভকো বলেন, সন্ত্রাসী তৎপরতায় এমন সহজ লক্ষ্যবস্তুকে বেছে নেওয়া হয়, যা নিখুঁতভাবে প্রতিরোধ করা অসম্ভব। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করা। বিশেষ করে যেসব চীনা নাগরিক এসব প্রকল্পে কাজ করছেন, তারা যে অরক্ষিত, তা সামনে নিয়ে আসা। বিদ্রোহীদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে—পাকিস্তানে চীনা বিনিয়োগ কাটছাঁট করতে বাধ্য করা। এ পর্যন্ত চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের (সিপিইসি) অধীন কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বেইজিং। এসব প্রকল্প অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এ অবস্থান থেকে তাদের বেরিয়ে আসার সুযোগ নেই। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের বিশ্বাস, পাকিস্তান তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে। সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কাজেই চলমান রাজনৈতিক সংকট তাতে কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারবে না। অ্যান্ড্রু কোরিভকো বলেন, পাকিস্তান যথাসম্ভব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে বলে বিশ্বাস চীনের। তারা মনে করে, এই উৎপাত উৎখাতে ইসলামাবাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। *এশিয়া টাইমস অবলম্বনে






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply