রাশিয়া থেকে কয়লা কেনা বাড়িয়েছে ভারত

পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার কাছ থেকে ৩০ শতাংশ মূল্যছাড়ে কয়লা কেনা বাড়িয়েছে ভারত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি বাণিজ্যিক কোম্পানির বরাত দিয়ে ও হাতে পাওয়া সরকারি ডেটা পর্যালোচনা করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শনিবার (১৮ জুন) এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। শনিবার (১৮ জুন) রয়টার্সের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, কয়লা এবং সংশ্লিষ্ট পণ্যের ক্রয় এক বছর আগের একই সময় থেকে বুধবার (১৫ জুন) পর্যন্ত ২০ দিনের মধ্যে ছয় গুণেরও বেশি বেড়েছে। অর্থের হিসাবে যা ৩৩ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি। গত এপ্রিলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কয়লা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সতর্ক করেছিল রাশিয়াকে। তবে সে সময় ভারত রাশিয়ার নিন্দা করা থেকে বিরত থেকেছে। রাশিয়া এবং ভারত রাজনৈতিকভাবে দীর্ঘদিনের মিত্র। দুই দেশের মধ্যে একাধিক দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা চু্ক্তিও রয়েছে। সুয়েক এজি, কেটিকে এবং সাইপ্রাসভিত্তিক কার্বো ওয়ানের মতো রাশিয়ান কয়লা ব্যবসায়ীদের অফশোর ইউনিটগুলো চালিয়ে যাওয়ার জন্য কয়লা কেনায় দুবাই ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে বলে জানা গেছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়ার পণ্য কেনা অব্যাহত রাখার ব্যাখ্যায় দিল্লি বলেছে, পণ্যের জোগানে বৈচিত্র্য রাখার অংশ হিসেবে তারা রাশিয়ার পণ্য কিনেছে। তাদের যুক্তি, যদি তারা হঠাৎ করে রাশিয়ার পণ্য কেনা বন্ধ করে দেয়, তবে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম আরও বাড়বে এবং ভারতীয় ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আরও পড়ুন: ভারতে কয়লার মজুতে ঘাটতি, চরম লোডশেডিংয়ের শঙ্কা এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু তারা চান না ভারত সেই পণ্য কেনা ‘দ্রুত বাড়িয়ে ফেলুক’। ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনাও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বুধবার (১৫ জুন) পর্যন্ত ২০ দিনে দেশটি গত বছরের তুলনায় ৩১ গুণ বেশি তেল কিনেছে। অর্থের হিসাবে ২০২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি। এ বিষয়ে জানতে শনিবার (১৮ জুন) রয়টার্স থেকে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে কয়লা আমদানিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়ার ব্যবসায়ীরা পণ্যের মূল্য পরিশোধের বিষয়ে অনেক উদার এখন। তারা ভারতীয় রুপি ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুদ্রা দিরহামে মূল্য পরিশোধের সুযোগ দিয়েছে। তারা যে ছাড় দিচ্ছে, সেটাও খুবই আকর্ষণীয়। ফলে রাশিয়া থেকে কয়লা আমদানি অব্যাহত থাকবে।