মেহেরপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি বছরই কমছে শিক্ষার্থী একদশক আগেও মেহেরপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান হতোনা। বর্তমানে তার বিপরিত চিত্র দেখা যাচ্ছে। জেলা শহরের শত বছরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে কাগজে কলমে প্রথম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেড় থেকে দুশো। কিন্তু কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই উপস্থিতির সংখ্যা একশ অতিক্রম করতে দেখা যাচ্ছেনা। প্রতি বছরেই শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোর প্রতি বিমুখ হচ্ছে শিক্ষার্থী ও অভিবাবকগণ। অথচ কেজি স্কুলগুলোতে আসনের চেয়ে বেশী শিক্ষার্থী দেখা যায়। সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে শহরের বিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বয়েজ মক্তব) তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থী ১৬০ জন। গড়ে প্রতি ক্লাসে মাত্র ৩২ জন হলেও প্রতিদিন উপস্থিতি একশ পার হতে দেখা যায়না। প্রতিবছরই স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ২০০০ সালে এই স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮শ। শহরের শতবছরের এস এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (শ্রীল মেমোরিয়াল স্কুল) বর্তমানে শিক্ষার্থী ১৮৬ জন। এখানেও উপস্থিতি দেখা যায় একশ অতিক্রম করছে না। এই বিদ্যালয়ে ২০০০ সালে শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ৬শ। এখানেও প্রতিবছরই লাগাতার শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। শহরের বড় বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী ১৬৭ জন। এই বিদ্যালয়টিতে উপস্থিতি একশ অতিক্রম করতে দেখা যায়। এই বিদ্যালয়েও ২০০০ সালে ৫শ শিক্ষার্থী ছিল। শহরের তিনটি কেজি স্কুল সরেজমিনে দেখা যায় কোন স্কুলেই শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান হচ্ছেনা। শহরের প্রাণকেন্দ্রে জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এণ্ড কলেজ নামের কেজি স্কুলটিতে আসন সংখ্যা ৫৫০। এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬শ। এই কেজি স্কুলটিতে ভর্তি হতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশী। এখানে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারলে ভর্তি নেয়া হয়না। শহরের হোটেল বাজারে গ্লোরিয়াস প্রি-ক্যাডেট একাডেমি ও মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলে দেখা যায় দুটি স্কুলেই শিক্ষার্থী ৪শ জন করে।
এলাকায় শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রতি বছর যেমন বেড়েছে, তেমনি আগ্রহও বেড়েছে শিক্ষায়। সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোর শিক্ষকদের অভিযোগ, সরকারি স্কুল থেকে ঢিল ছুড়লে কেজি স্কুলগুলোতে পড়ে। কেজি স্কুলগুলোতে ভালোমানের কথা বলে প্রতি বছরই শিশুদের সেখানে আকৃষ্ট করা হচ্ছে। আর তাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সরকারি স্কুল গুলোর শিক্ষকগণ। বিএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া পারভিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অনেক ব্যর্থতা আছে স্বীকার করে বলেন-, মাত্র কয়েকশ গজ দূরেই কেজি স্কুল থাকায় আমাদের প্রতিষ্ঠানে যাদের ভর্তি হওয়ার কথা, তারা সেখানে চলে যাচ্ছে। আমরা তো অন্য প্রতিষ্ঠান উঠিয়ে দিতে পারি না। ক্ষা জেলার শিক্ষাবিদগণ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক সংখ্যাও বাড়াতে হবে। তাহলে বিকল্প প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমবে। কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর লাগামহীন বাণিজ্য বন্ধ করে নির্ধারিত নিয়ম-শৃংখলার মধ্যে নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়ার মান বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। শূন্যপদে নিয়োগসহ শি¶কদের দ¶তা বৃদ্ধি এবং বিদ্যালয়ে শিশুদের ধরে রাখার মতো আনন্দঘন সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির ওপর জোর দিতে হবে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন ডেভেলপার এসোসিয়েশন মেহেরপুরের সহ সভাপতি জানে আলম বলেন, প্রয়োজনের তাগিদেই কেজি স্কুল গড়ে উঠেছে। সরকারি স্কুলগুলো থেকে বই খাতা, টিফিনসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়েও শিক্ষার্থী ধরে রাখতে পারছে না। প্রয়োজনের তাগিদেই অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের কেজি স্কুলগুলোতে পড়াতে আগ্রহী। তবে কিছু কেজি স্কুল আছে যেখানে অষ্টম শ্রেণিপাশ শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের দায়ীত্ব পালন করছে। আবার পরিচালকও সমমানের। জানে আলমও এসব শিক্ষক ও পরিচালকদের লাগাম টানার পক্ষে মতামত প্রকাশ করে আরও বলেন জেলায় ৭৭টি কেজি স্কুল আছে। তারমধ্যে ৫৫টি তাদের এসোসিয়েশন ভুক্ত। সরকারি বিভিন্ন কাজে কেজি স্কুলগুলোর শিক্ষকদের দিয়ে করানো হচ্ছে। সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আপিল উদ্দিনের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকে জোর করে তুলে দেয়া যায় না। তবে নতুন করে যেন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে নজরদারির চেষ্টা করছি। সারাদেশেই সরকারি প্রাথমিকের আশপাশে অসংখ্য কেজি স্কুল আছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের কারণে সরকারি স্কুলকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। আইন করে এসব বন্ধ করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেছেন- দেশে বেপরোয়াভাবে গড়ে ওঠা কেজি স্কুলগুলোর লাগাম টানা ও শৃক্ষাখলা ফেরাতে ২০১১ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিবন্ধন বিধিমালা জারি করে। এতে স্থায়ী ও অস্থায়ী ক্যাম্পাসের বিষয়ও উল্লেখ করা হয়। সেই সঙ্গে গ্রন্থাগার, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, টয়লেট ব্যবস্থা, অভিজ্ঞ শি¶ক নিয়োগ, ইংরেজি ভাষা ও তথ্যপ্রযুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ, চিকিৎসা, খেলাধুলা সামগ্রী, শি¶াসফর, বনভোজন, জাতীয় দিবস পালনসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়। এসব নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেই গত দুই দশকে গড়ে উঠেছে একের পর এক কেজি স্কুল। শুধুমাত্র মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল এণ্ড কলেজ অনুমোদিত। মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহকারি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতু জানিয়েছেন- কেজি স্কুলগুলোর নেই কোনো নিবন্ধন, নেই বিধিমালা মানার প্রবণতা। অভিভাবকদের মানসম্মত শিক্ষার প্রলোভন দেখিয়ে শিশুদের কেজি স্কুলগুলো শিক্ষার্থী ভাগিয়ে নেয়ায় অভিযোগ অ¯^ীকার করা যাবেনা। এতে শিক্ষার মানও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার আগেই প্লে, নার্সারি ও কেজি মিলে তিন বছর কাটাতে হয় শিশুদের। মোটা অঙ্কের ভর্তি ফি সহ নানা ধরনের চার্জ পরিশোধ করে ভর্তি হওয়াসহ কয়েক ডজন বই খাতা কিনতে হয়। ‘ক্লাস টেস্ট’ ছাড়াও সারা বছরে সাত-আটবার পরীক্ষার নামে ফি আদায় করা হয়। এত সব পরীক্ষার চাপে শিশুমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে।Slider
বিশ্ব
জাতীয়
সাম্প্রতিক খবর
খেলাধুলা
বিনোদন
ফিচার
mujib
w
যাবতীয় খবর
জিওগ্রাফিক্যাল
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: