Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

সাম্প্রতিক খবর


খেলাধুলা

বিনোদন

ফিচার

mujib

w

যাবতীয় খবর

জিওগ্রাফিক্যাল

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » বরিসের পতন: নেপথ্যের পাঁচ কারণ




মাত্র তিন বছরেরও কম সময় আগে জাতীয় নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির জন্য বড় বিজয় ছিনিয়ে আনেন বরিস জনসন। ২০১৯ সালে তার নেতৃত্বে ওই জয়কে ১৯৮৭ সালের পর সবচেয়ে বড় জয় মনে করা হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার সুযোগ পান বরিস। কিন্তু এরপর একের পর এক বিতর্ক আর কেলেঙ্কারির কারণে বর্তমানে তার জনপ্রিয়তা তলানিতে এসে ঠেকেছে। পার্লামেন্টে নিজ দলের বেশিরভাগ সংসদ সদস্যেরই সমর্থন হারিয়ে অবশেষে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হয়েছেন। ইতোমধ্যে দলীয় প্রধানের পদ পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতি কেন সৃষ্টি হলো। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এর পাঁচটা কারণ খুঁজে বের করেছে। কারণগুলো এখানে তুলে ধরা হলো- ক্রিস পিনসার কেলেঙ্কারি গত সপ্তাহে (২৯ জুন) লন্ডনের একটি নাইটক্লাবে যান কনজারভেটিভ পার্টির এমপি ও দলের ডেপুটি চিফ হুইপ ক্রিস পিনসার। কার্লটন প্রাইভেট মেম্বর ক্লাবে প্রচুর মদপান করেন এবং মাতলামি করেন। যা পরে ডেপুটি চিফ হুইপের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর স্বীকারও করেন তিনি। কিন্তু পিনসারের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ ওঠে, ক্লাবে তিনি দুজন পুরুষকে জড়িয়ে ধরেছিলেন এই রাজনীতিক। এ অভিযোগের সূত্র ধরে পিনসারের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ সামনে আসে। এমনকি এর মধ্যে কিছু অভিযোগ কয়েক বছর আগের। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একের পর এক নাটকীয় ঘটনা ঘটতে থাকে। যা প্রধানমন্ত্রী বরিসের পতন ত্বরান্বিত করে। ক্রিস পিনসারকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কনজারভেটিভ দলের ডেপুটি চিফ হুইপ নিয়োগ করা হয়। কিন্তু চলতি সপ্তাহে ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে বলা হয়, পিনসারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তার নিয়োগের আগে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বরিসের কোনো ধারণা ছিল না। তবে ৪ জুলাই বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিনসারের বিরুদ্ধে অন্তত একটি অভিযোগের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলেন বরিস। পরদিন লর্ড ম্যাকডোনাল্ড নামে সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, পিনসারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে জানানো হয়েছিল। এরপর বরিস বিষয়টি নিজেই স্বীকার করেন। বলেন, হ্যা, ২০১৯ সালেই বিষয়টি তাকে জানানো হয়েছিল এবং পিনসারকে দলের ডেপুটি চিফ হুইপ নিয়োগের জন্য ক্ষমতা প্রার্থনা করেন। এরপর সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, নিজের বাজে আচরণের বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন পিনসার। তবে এমপি হিসেবে তিনি স্বপদে থাকবেন। তার বিরুদ্ধে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে না। এ ঘটনায় বরিসের কনজারভেটিভ এমপিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অবশেষে বিতর্কের অবসান ঘটাতে পদত্যাগ করেন পিনসার। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে মদের আসর ২০২০ সালের শুরুর দিকে সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। দেশে দেশে করোনা বিধিনিষেধ ও লকডাউন জারি করা হয়। ভাইরাস মোকাবিলায় একইভাবে যুক্তরাজ্যেও লকডাউন আরোপ করে বরিস জনসন সরকার। সে সময় অন্যতম বিধিনিষেধ ছিল, একাধিক মানুষ এক জায়গায় আড্ডা দেয়া যাবে না। কিন্তু সরকারের আরোপিত এ বিধিনিষেধ নিজেই ভঙ্গ করেন বরিস। লকডাউনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জুন মাসে সরকারি বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে একাধিক মদের আসন বসান প্রধানমন্ত্রী। সেই আসরে রীতিমতো মদের ফোয়ারা ছুটেছিল বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে। এমন পরিস্থিতিতে নিজ দলের ভিতরেই প্রবল চাপের মুখে পড়েন বরিস। সরকারের ওপর জনসনের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতারা। তারা বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে তিনি ব্রিটিশ ভোটার ও নিজ দলকে অপমান করেছেন। বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি নিজ দলের মধ্য থেকেই পদত্যাগের দাবি ওঠে। মদের পার্টিতে যোগ দেয়ার জন্য একাধিক ক্ষমা প্রার্থনা করলেও ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান তিনি। এর জন্য একাধিকবার ক্ষমা প্রার্থনা করেন বরিস। কিন্তু এরপরও লকডাউন ভেঙে মদের আসর করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রথমে সরকারি ও এরপর পুলিশি তদন্ত হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চলতি বছরের এপ্রিলে তাকে জরিমানা করা হয়। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিতে নতুন সংকট যুক্তরাজ্যে চলতি বছর রেকর্ড মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। যার বর্তমান হার ৯.১ শতাংশ। ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়। যা নতুন সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি কারণ বরিসের নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে গেছে। যেমন ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি তেল ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সংকট মোকাবিলায় বরিসের সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন জ্বালানি তেলের দাম লিটার প্রতি ৫ পাউন্ড কমানো হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের এপ্রিলে নতুন করে কর বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, শ্রমিক আর খেটে খাওয়া মানুষকেই বেশি কর দিতে হচ্ছে। বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা স্যার কির স্টার্মার বলেছেন, এ মুহূর্তে জীবনযাত্রার ব্যয় গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মাত্রায় হাজির। কিন্তু এর মধ্যে সরকার শ্রমিক শ্রেণীর ওপরও বেশি করে করারোপ করেছে। ওয়েন প্যাটারসন বিতর্ক ২০২১ সালের অক্টোবরে কনজারভেটিভ পার্টির তৎকালীন সংসদ ওয়েন প্যাটারসনকে ৩০ দিনের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করে হাউস অব কমন্সের একটি কমিটি। কমিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, সংসদ প্যাটারসন পার্লামেন্টের নিয়ম ভঙ্গ করে অর্থের বিনিময়ে নিজ পছন্দের একাধিক কোম্পানিকে সুবিধা দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বরিসের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ সংসদরা তার বহিষ্কার স্থগিত রাখার পক্ষে ভোট দেন। শুধু তাই নয়, প্যাটারসনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ কীভাবে তদন্ত করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে পাল্টা আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। এ নিয়ে বিতর্কের মধ্যে অবশেষে পদত্যাগ করেন প্যাটারসন। কী করবেন সে ব্যাপারে সঠিক লক্ষ্য ও ধারণা না থাকা ব্রেক্সিট সফল করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান বরিস। সেই জনপ্রিয়তার ওপর ভর করেই ২০১৯ সালে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসেন বরিস। কিন্তু এরপর থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিরোধী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী নীতি কেমন হবে ও কোন বিষয়গুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে সেসব ব্যাপারে সঠিক লক্ষ্য ও ধারণার অভাব ছিল বরিসের। এ ব্যাপারে তার ঘনিষ্ঠজনরাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এসব কারণে তার সাবেক উপদেষ্টা ডোমিনিক কামিংসই তার সবচেয়ে সমালোচক হয়ে ওঠেন। তিনি বারবার করে বলেছেন, সবকিছুই বরিসের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এছাড়া অনেকেই তার দর্শন জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। গত মাসেই কনজারভেটিভ দলের সংসদ ও সাবেক মন্ত্রী জেরেমি হান্ট অভিযোগ করে বলেন, তার (বরিসের) ‘একনিষ্ঠতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা যোগ্যতা ও দর্শন’র অভাব রয়েছে। এরপর যতই দিন গেছে, তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ততই বৃদ্ধি পেয়েছে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply